১৭ নভেম্বর ২০১৬ বৃহস্পতিবার, ০৪:০৪ পিএম
শেয়ার বিজনেস24.কম
গাজীপুরের ইসলামী ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি (আইইউটি) থেকে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকসে বিএসসি পাস করেন গাজী কামরুস সালাম সোহান ওরফে আবু আবদুল্লাহ। অথচ ২৭ বছরের এ যুবক প্রকৌশল হিসেবে পেশাগত কাজে জড়াননি। জঙ্গি কর্মকাণ্ডে তিনি জড়িয়ে পড়েন। জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) ‘সরোয়ার-তামিম’ গ্রুপের সদস্য হিসেবে বিভিন্নভাবে অর্থ সংগ্রহ, নাশকতার কাজে ব্যবহারের জন্য বিস্ফোরক দ্রব্য তৈরি ও হামলাকারীদের প্রশিক্ষণও দিতেন সোহান।
সম্প্রতি সারোয়ার জাহান, তামিম চৌধুরীসহ শীর্ষ নেতাদের মৃত্যু ও অনেকে আত্মগোপন করায় জেএমবিকে নতুন ভাবে সংঘবদ্ধ করার কাজ করছিলেন সোহান। এরই মধ্যে সোহানসহ জেএমবি সরোয়ার-তামিম গ্রুপের পাঁচ সদস্যকে আটক করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-২ (র্যাব)।
র্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান বৃহস্পতিবার দুপুরে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে একথা জানান। রাজধানীর কাওরান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, বুধবার রাতে এয়ারপোর্ট রেলওয়ে স্টেশন এলাকা থেকে মাওলানা আবদুল হাকিম ফরিদী ওরফে সুফিয়ান (৪০) ও রাজীবুল ইসলাম ওরফে রাজীব ওরফে আহমেদকে (২৯) আটক করে র্যাব-২। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আদাবরের মোহাম্মদিয়া ক্যাফে থেকে সোহান, মো. সোহেল রানা ওরফে খাদেম ওরফে মোয়াজ্জিন ওরফে সোহেল ওরফে শহীদুল্লাহ (২৩) ও শেখ মো. আবু সালেহ ওরফে লিটন ওরফে হুরাইয়াকে (৪২) আটক করা হয়।
মুফতি মাহমুদ খান বলেন, আইইউটিতে পড়ার সময় সোহান জঙ্গিবাদে ঝুঁকে পড়েন। সোহানের জন্ম যশোর জেলায়। ২০০৭ সালে মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করে আইইউটিতে ভর্তি হন। সেখানে পড়ার সময় কলেজবন্ধু মোস্তাফিজুর রহমান সিফাতের মাধ্যমে জঙ্গিবাদের দিকে ঝুঁকে পড়েন। সিফাত আত্-তামকিন জঙ্গি সাইটের অ্যাডমিন ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। তিনি ৯ আগস্ট ঢাকায় র্যাব-৪-এর একটি অভিযানে আটক হন। সোহান আইইউটিতে পড়ার সময় হাতেমবাগে জসীম উদ্দিন রাহমানির মসজিদে যাতায়াত করতেন। সেখানে একই মতাদর্শের কয়েকজনের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব হয়। সিফাত তাকে জঙ্গিবাদ মদদপুষ্ট একটি সাইটে অন্তর্ভুক্তি এবং জেএমবির সারোয়ার জাহান শাইখ আবু ইব্রাহিম আল হানিফের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। পরে সোহান চট্টগ্রামে ছোটখাটো অস্ত্র ও বোমা তৈরির প্রশিক্ষণ নেন। এভাবে সোহান বিভিন্ন হামলা ও নাশকতার জন্য বিস্ফোরক তৈরি ও প্রশিক্ষণ দিতেন। এ ছাড়া তিনি জঙ্গি কর্মকাণ্ডের জন্য অর্থ জোগাড় করতেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ২৮ লাখ টাকা আদান-প্রদানের বিষয়ে তথ্য দিয়েছেন সোহান।
আটকদের কাছ থেকে একটি নাইন এমএম পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন, ২০টি গুলি, ১০টি ককটেল, ৫টি ডেটোনেটর, এক কয়েল তার, এক কেজি সাদা পাউডার, ২০০ গ্রাম বারুদ, দেড় কেজি তারকাঁটা ও বল, দুটি সার্কিট বোর্ড এবং ১৫টি ক্লিপ টাইপ সার্কিট উদ্ধার করা হয় বলে জানান মুফতি মাহমুদ।
শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।