০৭ আগস্ট ২০১৫ শুক্রবার, ০৮:৫৩ পিএম
দেশে ব্যক্তিগত হিসাব ব্যবহার করে মোবাইল ফোনে টাকা লেনদেন করার প্রবণতা বাড়ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জুন পর্যন্ত সক্রিয় মোবাইল ব্যাংকিং হিসাবের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ২২ লাখ। এর আগের মাসে (মে) এই সংখ্যা ছিল ১ কোটি ১১ লাখ। অর্থাৎ এক মাসে সক্রিয় হিসাব বেড়েছে ৯ দশমিক ৪১ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংক ও খাত-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, গ্রাহক-এজেন্টদের মধ্যে সচেতনতা, নজরদারি বাড়ানো ও নতুন নতুন সেবা চালু হওয়ায় ব্যক্তিগত হিসাব ব্যবহার করে টাকা লেনদেনের পরিমাণ বাড়ছে। মুঠোফোনের মাধ্যমে আরও বেশি সেবার মূল্য পরিশোধ করা গেলে সক্রিয় হিসাব ও লেনদেন দুটোই বাড়বে। জুন মাসে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে মোট লেনদেন হয়েছে ১২ হাজার ৯৬৯ কোটি টাকা। ওই মাসে প্রতিদিন গড় লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৪৩২ কোটি টাকা। তবে মোবাইল ব্যাংকিং-সংশ্লিষ্টরা এটাও স্বীকার করছেন, নিবন্ধিত গ্রাহকদের একটা বড় অংশই নিজের হিসাব ব্যবহার করছেন না। আবার অনেকে হিসাব খুললেও সঠিকভাবে কেওয়াইসি ফরম (গ্রাহককে জানা) পূরণ করতে ব্যর্থ হওয়ায় তাঁদের হিসাব বাতিল হয়ে যাচ্ছে। ফলে অনেকেই বাধ্য হয়েই এজেন্টদের মাধ্যমে লেনদেন করছেন। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে লেনদেন করার জন্য সারা দেশে নিবন্ধিত গ্রাহক আছেন ২ কোটি ৮৬ লাখ। সেই হিসাবে নিবন্ধিত গ্রাহকের অর্ধেকের বেশিই নিজস্ব হিসাব ব্যবহার করে লেনদেন করেন না। দেশের শীর্ষ মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশের বিপণন প্রধান আসিফ আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘শুরু থেকেই আমরা গ্রাহক ও এজেন্টদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর কাজ করে আসছি। চলতি আগস্ট থেকে এ ব্যাপারে গণমাধ্যমেও প্রচারণা জোরদার করা হয়েছে। আশা করি, সামনের দিনগুলোতে আরও বেশি বেশি গ্রাহক নিজের অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে লেনদেন করবেন।’ মোবাইল আর্থিক সেবার মাধ্যমে এখন টাকা পাঠানো ছাড়াও মোবাইল ব্যালেন্স রিচার্জ, বিমান ও বাস টিকিট ক্রয়, ট্যাক্সি ভাড়া, দোকানে কেনাকাটা ও হাসপাতালের বিল পরিশোধ করা যাচ্ছে। ২০১১ সাল থেকে এ পর্যন্ত ২৮টি ব্যাংককে এ ধরনের সেবা প্রদানের লাইসেন্স দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। যার মধ্যে ২০টি প্রতিষ্ঠান বর্তমানে কার্যক্রম চালাচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং নীতিমালা অনুসারে টাকাপয়সা লেনদেনের ক্ষেত্রে গ্রাহককে ব্যক্তিগত হিসাব ব্যবহার করতে হবে। কিন্তু অনেকের ব্যক্তিগত হিসাব না থাকায় এজেন্টরা নামে-বেনামে হিসাব খুলে ব্যবসায়িক লেনদেন করায় অপরাধমূলক কাজে অর্থ লেনদেন বাড়ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। অপরাধমূলক কাজে অর্থের লেনদেন ঠেকাতে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেমস বিভাগ এজেন্টদের জন্য পাঁচ হাজার টাকার বেশি লেনদেন হলে গ্রাহকের ছবি তুলে রাখার নির্দেশনা জারি করেছে। একই সঙ্গে আগামী ছয় মাসের মধ্যে লেনদেনে ব্যবহৃত মোবাইল সিম নতুন করে নিবন্ধন করতে বলা হয়েছে। জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মাহফুজুর রহমান গতকাল বৃহস্পতিবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘এজেন্টদের ব্যক্তিগত হিসাব থেকে ব্যবসায়িক লেনদেন নিরুৎসাহিত করতে নানা ধরনের সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। ইতিমধ্যেই অনেক এজেন্টের হিসাব বাতিল করা হয়েছে।’
শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।