রবি-এয়ারটেল একীভূতকরণ
১৪ জুলাই ২০১৬ বৃহস্পতিবার, ০৮:৪৩ এএম
শেয়ার বিজনেস24.কম
সেলফোন অপারেটর রবি আজিয়াটা লিমিটেড (রবি) ও এয়ারটেল বাংলাদেশ লিমিটেডের (এয়ারটেল) একীভূতকরণ ফি ১০০ কোটি টাকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। গতকাল অর্থ মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এবং বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) অংশগ্রহণে এক আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে এ ফি চূড়ান্ত করা হয়। এছাড়া এয়ারটেলের কাছে থাকা টুজি তরঙ্গ নিতে ফি নির্ধারণ করা হয়েছে চার বছরের জন্য মেগাহার্টজপ্রতি ৩৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা।
এ বিষয়ে বিটিআরসি চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ বলেন, সরকার ও অপারেটর দুইপক্ষের জন্য সহনীয় হবে— এমন হারে ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এবং বিটিআরসি মতৈক্যের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
জানা গেছে, রবি ও এয়াটেলের একীভূতকরণে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ ৬৫ কোটি টাকা ফি প্রস্তাব করলেও অর্থ মন্ত্রণালয় তা বাড়িয়ে ১০০ কোটি টাকা নির্ধারণ করে। বর্তমানে ১৮০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ডে এয়ারটেলের তরঙ্গ রয়েছে ১৫ মেগাহার্টজ। এ তরঙ্গের মেয়াদ রয়েছে ২০২০ সাল পর্যন্ত।
তবে রবির একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রতিষ্ঠানটি এয়ারটেলের কাছ থেকে ১০ মেগাহার্টজ টুজি তরঙ্গ নিতে পারে। সেক্ষেত্রে ১০ মেগাহার্টজ তরঙ্গের জন্য সরকারকে ৩৩৮ কোটি টাকা দিতে হবে রবির। তবে টুজি তরঙ্গের ডিফারেন্সিয়াল মূল্য হিসেবে রবির পরিশোধ করতে হবে ১৩৮ কোটি টাকা। এর সঙ্গে মার্জার ফি ১০০ কোটি টাকাসহ একীভূতকরণে মোট ২৩৮ কোটি টাকা সরকারকে দিতে হবে রবির।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেন, রবি ও এয়ারটেলের একীভূতকরণ প্রক্রিয়ার ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। এটি অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হবে।
বাংলাদেশে ব্যবসায়িক কার্যক্রম একীভূত করার সম্ভাবনার বিষয়ে গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর আলোচনা শুরু করে এয়ারটেল ও রবি। একীভূতকরণ প্রক্রিয়া সম্পন্নের উদ্দেশ্যে অনুমতি চেয়ে ১৭ সেপ্টেম্বর নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে আবেদন করে প্রতিষ্ঠান দুটি। এর পর গত ২৮ জানুয়ারি
একীভূতকরণের বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে চুক্তির ঘোষণা দেয় রবি আজিয়াটা ও এয়ারটেল বাংলাদেশ লিমিটেডের মূল প্রতিষ্ঠান আজিয়াটা গ্রুপ বারহাদ (আজিয়াটা) ও ভারতী এয়ারটেল লিমিটেড (ভারতী)। ২৪ জুন পর্যন্ত এ চুক্তির মেয়াদ ধরা হয়। সম্প্রতি প্রতিষ্ঠান দুটি আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এদিকে রবি ও এয়ারটেলের একীভূতকরণের বিষয়ে চূড়ান্ত মূল্যায়ন প্রতিবেদন জমা দিতে আদালতের কাছ থেকে এরই মধ্যে কয়েক দফা সময় নিয়েছে সরকার। সরকারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সর্বশেষ ১৪ জুলাই (আজ) পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়। জানা গেছে, এরই মধ্যে আরো এক দফা সময় বাড়ানোর বিষয়ে আবেদন করেছে সরকার।
একীভূতকরণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে একীভূত প্রতিষ্ঠানটির ৬৮ দশমিক ৭ শতাংশ শেয়ার নিয়ন্ত্রণ করবে আজিয়াটা। অন্যদিকে ভারতী এয়ারটেল ২৫ শতাংশ ও বাকি ৬ দশমিক ৩ শতাংশ শেয়ার থাকবে জাপানের এনটিটি ডোকোমোর কাছে।
গ্রাহক সংখ্যার ভিত্তিতে দেশের সেলফোন অপারেটরদের মধ্যে রবি ও এয়ারটেল যথাক্রমে তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে রয়েছে। একীভূতকরণ প্রক্রিয়া শেষ হলে বাংলালিংককে সরিয়ে দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসবে একীভূত প্রতিষ্ঠানটি।
শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।