আগে কাস্টমার, পরে প্রেমিকের বিছানায়!

ভালোবাসার প্রিয় মানুষটির সঙ্গে সময় কাটাবেন প্রেমদিবসে৷ কিন্তু তাই বলে তো পেশার ক্ষতি করা যায় না৷ কেননা, রোজগার না হলে কীভাবে চলব? তার উপর, এমন কাস্টমারও তো রয়েছেন, যিনি তার ভালোবাসার প্রিয় মানুষ ঠিক নন, তবে তিনিও তো তার সঙ্গেই এই বিশেষ দিনে কিছুটা সময় কাটাতে চান! কাজেই, ভালোবাসার প্রিয় মানুষটির জন্য ওই কাস্টমারকে এদিন ফিরিয়ে দিলে, শেষে তো তার পেশারই ক্ষতি হবে! যে কারণে, দুই দিকই সামলাতে হয় তাকে৷

ভ্যালেন্টাইনস ডে-এর উন্মাদনায় সমাজের বিভিন্ন অংশের যুগলরা উচ্ছ্বাসের বিভিন্ন ধারায় ভেসে বেড়ালেও, বিশেষ এই দিনে ভালোবাসার প্রিয় মানুষটির সঙ্গে সময় কাটানোর পাশাপাশি কাস্টমারকেও সময় দিতে হয় অনেক যৌনকর্মীকে৷ আর এভাবেও বিভিন্ন উপায়ে রচিত হয়ে চলেছে কলকাতার অন্যতম যৌনপল্লি সোনাগাছির বহু যৌনকর্মীর প্রেমদিবসের উপাখ্যান৷

শুধু সোনাগাছিও নয়, কোলকাতার অন্যান্য যৌনপল্লিসহ দুর্বার মহিলা সমন্বয় কমিটির অধীনে থাকা পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন যৌনপল্লিতেও বিভিন্ন উপায়ে রচিত হয়ে চলেছে ভ্যালেন্টাইনস ডে-এর আখ্যান৷ যদিও সোনাগাছির যৌনকর্মীরা সরস্বতী পুজোতেও মেতে ওঠেন৷ এক্ষেত্রে বাঙালিদের ভ্যালেন্টাইনস ডে-এর আমেজ যে কেউ কিছুটা হলেও উপভোগ করেন না, তাও নয়৷ যেমন, দুর্বার মহিলা সমন্বয় কমিটির কোষাধ্যক্ষ চামেলি সাহা৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি ভ্যালেন্টাইনস ডে উদযাপন করি না৷ তবে বাঙালিদের ভ্যালেন্টাইনস ডে সরস্বতী পুজো বিশেষ দিন৷’’ বিভিন্ন পুজো সত্ত্বেও সোনাগাছির অন্যতম আকর্ষণ অবশ্য কার্তিক পুজো৷ কিন্তু ভ্যালেন্টাইনস ডে-তে ভালোবাসার প্রিয় মানুষটির জন্য কি কোনো যৌনকর্মী পেশা থেকে ছুটি নিতে পারেন না?

পশ্চিমবঙ্গের যৌনকর্মীদের অন্যতম সংগঠন দুর্বার মহিলা সমন্বয় কমিটির সচিব কাজল বসুর বলেন, ‘‘কোনও যৌনকর্মী যে কাউকে ভালবাসেন না, তা তো নয়৷ তবে, আমাদের এখানে দুর্বারের পক্ষ থেকে ভ্যালেন্টাইনস ডে-র উদযাপন করা হয় না৷ কোনো যৌনকর্মী যদি উদযাপন করতে চান, তিনি করেন৷’’ কীভাবে? কাজল বসু বলেন, ‘‘যে যৌনকর্মীর প্রেমিক আছেন, তিনি প্রেমিকের সঙ্গে কোথাও হয়তো ঘুরতে গেলেন৷ হয়তো সিনেমায়ও গেলেন৷ প্রেমিকের সঙ্গে সময় কাটালেন৷ প্রেমিকের জন্য বিশেষ কিছু রান্না করলেন৷ তবে, কাস্টমারকেও সামলাতে হয়৷ ভ্যালেন্টাইনস ডে-এর জন্য প্রেমিকের জন্য এসব করলেও পেশা থেকে এদিন ছুটি নেন না৷’’ প্রেমদিবসের জন্য বিশেষ কোনো দিন কি গুরুত্বপূর্ণ? দুর্বার মহিলা সমন্বয় কমিটির সচিব বলেন, ‘‘বিশেষ দিনের ঘোষণা গুরুত্বপূর্ণ৷ প্রতিটি মানুষের মতো আমাদেরও মৌলিক অধিকার রয়েছে৷ তবে, আমাদের জন্য কোনো বিশেষ দিনের কথা বলছি না৷ সবার জন্য বিশেষ কোনো দিনে আমরা সবার মতোই মেতে উঠি৷’’