০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ শুক্রবার, ১০:১১ এএম
স্টাফ রিপোর্টার
শেয়ার বিজনেস24.কম
![]() |
স্বাধীনতার ৫২ বছর পর এখনো দেশের ২৩ দশমিক ২ শতাংশ মানুষ নিরক্ষর। সংখ্যায় চার কোটির বেশি। গত এক বছরে সাক্ষরতার হার বেড়েছে মাত্র ০.৪০ শতাংশ। এটি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক কম। ২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে আওয়ামী লীগের ঘোষণা ছিল ২০১৪ সালের মধ্যে দেশ থেকে নিরক্ষরতা দূর করা হবে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের পর ৯ বছর পেরিয়ে গেলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে দেশকে নিরক্ষরমুক্ত করা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
দেশে বর্তমানে সাক্ষরতার হার ৭৬.৮ শতাংশ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ সমন্বয়কৃত সমীক্ষা অনুযায়ী, দেশের মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৯৮ লাখ ২৮ হাজার ৯১১ জন। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ১২ কোটির বেশি মানুষের সাক্ষরজ্ঞান রয়েছে। বাকি ৪ কোটি মানুষকে কীভাবে সাক্ষরজ্ঞান দেওয়া হবে, সেই বিষয়ে এখন পর্যন্ত নতুন কোনো পরিকল্পনা নেই। সাক্ষরতা বৃদ্ধির জন্য পরিচালিত প্রকল্পটির মেয়াদও শেষ হয়েছে গত বছরের জুনে। এরপর নতুন কোনো প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়নি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সাক্ষরতার হার নিয়ে সরকারি ও বেসরকারি তথ্যে বড় ধরনের ফারাক রয়েছে। সাক্ষরতার আন্তর্জাতিক সংজ্ঞার সঙ্গেও আমাদের কার্যক্রমের মিল নেই। এ কারণে দেশকে নিরক্ষরমুক্ত করার পরিকল্পনা দিন দিন কঠিন হয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায়ই আজ পালিত হবে ‘আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস-২০২৩’।
কর্মকর্তারা বলেন, বিবিএস সাক্ষরতার হার নিয়ে জরিপ করার সময় মানুষের কাছে জানতে চায়, আপনি লিখতে পারেন কি না? সে বলল পারি। হয়তো সে শুধু স্বাক্ষর করতেও জানে। কিন্তু তাকে যদি এক পৃষ্ঠা লিখতে দেওয়া হয়, তাহলে সে পারবে না।
অথচ এসডিজির ৪ (৬.১) নম্বর অনুচ্ছেদে সাক্ষরতা সম্পর্কে সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। আন্তর্জাতিক সংজ্ঞা অনুযায়ী সাক্ষরতা হচ্ছে পড়া, অনুধাবন করা, মৌখিকভাবে এবং লেখার বিভিন্ন পদ্ধতিতে ব্যাখ্যা করা, যোগাযোগ স্থাপন করা এবং গণনা করার দক্ষতা। এর নিরিখে সাক্ষরতাসম্পন্ন একজন ব্যক্তিকে বাংলাদেশের পঞ্চম শ্রেণি পাস করা শিক্ষার্থীর সমমানের হতে হবে বলে মনে করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
চলতি বছরের ১৪ জুন প্রকাশিত বিবিএসের বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিস্টিকস-২০২২ অনুযায়ী, সাক্ষরতার হার ৭৬ দশমিক ৮ শতাংশ। এর মধ্যে পুরুষ ৭৯ এবং নারী ৭৪.৭ শতাংশ। এটি প্রকাশিত হয়েছে চলতি বছরের ১৪ জুন। একই সরকারি সংস্থার ‘খানার আয় ও ব্যয় জরিপ-২০২২’-এর প্রাথমিক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, সাক্ষরতার হার ৭৪ শতাংশ। এর মধ্যে পুরুষ ৭৫ দশমিক ৮ এবং নারী ৭২ দশমিক ৬ শতাংশ। এটি প্রকাশিত হয়েছে গত ২২ জুন।
অন্যদিকে, প্রায়োগিক সাক্ষরতা নিরূপণ জরিপ-২০২৩ পর্যালোচনা করে দেখা যায়, সাত বছর থেকে ওপরের বয়সীদের সাক্ষরতার হার ৬২ দশমিক ৯২ শতাংশ। এর মধ্যে পুরুষ ৬৩ দশমিক ৯৭ এবং নারী ৬১ দশমিক ৬৬ শতাংশ। এটি প্রকাশিত হয়েছে ১৮ জুলাই। কাছাকাছি সময়ে প্রকাশিত বিবিএসের তিনটি জরিপ তথ্যে ব্যাপক ফারাক রয়েছে।
বিবিএসের বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিস্টিকস-২০২২ অনুযায়ী, ২০১৮ সালে সাক্ষরতার হার ছিল ৭৩ দশমিক ২ শতাংশ, ২০১৯ সালে ৭৪ দশমিক ৪ শতাংশ, ২০২০ সালে ৭৫ দশমিক ২ শতাংশ, ২০২১ সালে ৭৬ দশমিক ৪ শতাংশ এবং ২০২২ সালে ৭৬ দশমিক ৮ শতাংশ।
শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।