facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ১১ নভেম্বর সোমবার, ২০২৪

Walton

আর্থিক প্রতিষ্ঠান ছাড়লেন ৪৭ হাজার আমানতকারী


২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ শুক্রবার, ১০:১৮  পিএম

ডেস্ক রিপোর্ট

শেয়ার বিজনেস24.কম


আর্থিক প্রতিষ্ঠান ছাড়লেন ৪৭ হাজার আমানতকারী

 

কোনোভাবেই গ্রাহকের আস্থা ফেরানো যাচ্ছে না দুর্বল হয়ে পড়া দেশের ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে। ঋণ জালিয়াতিসহ নানা অনিয়মের কারণে সাধারণ মানুষ এখন আর আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে আগের মতো আমানত রাখতে ভরসা পাচ্ছেন না। তাই ২০২২ সাল থেকেই ধারাবাহিকভাবে কমছে আমানতকারীর সংখ্যা। সর্বশেষ চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্ত্মিকে ৪৭ হাজার আমানতকারী আর্থিক প্রতিষ্ঠান ছেড়ে চলে গেছেন।

এরপরও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে আমানত সংগ্রহের চেয়ে ঋণ বিতরণের পরিমাণ বাড়ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

খাত-সংশিস্নষ্টরা বলছেন, ঋণ জালিয়াতিসহ নানা অনিয়মের কারণে বেশ কিছু আর্থিক প্রতিষ্ঠান দুর্বল হয়ে পড়েছে। এসব কারণে সাধারণ মানুষও এখন আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে আমানত রাখতে ভয় পান।

যার কারণে প্রতি মাসেই আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর আমানতকারীর সংখ্যা কমছে। আর বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে যেভাবে তদারকি করার দরকার ছিল, সেটাও হচ্ছে না। এখন গ্রাহকদের আস্থা ফেরাতে বাংলাদেশ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

* মার্চ শেষে মোট আমানতকারী ছিল ৪২৭৩৪১ জন

* জুন শেষে ৩৭৯৭৩৭ জন

* সরকারি বিল-বন্ডে সুদহার বেশি থাকায় আমানতকারীরা সেখানে চলে যাচ্ছেন: আইআইডিএফসির এমডি

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স কোম্পানিজ অ্যাসোসিয়েশনের (বিএলএফসিএ) চেয়ারম্যান ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট ফাইন্যান্স কোম্পানি (আইআইডিএফসি) লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মো. গোলাম সরওয়ার ভূঁইয়া বলেন, জুন প্রান্ত্মিকে আমানতকারীর সংখ্যা কমেছে।

আসলে এই সময়ে সরকারের বিল-বন্ডের সুদহার বেশি থাকায় আমানতকারীরা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে তাদের আমানত তুলে সেখানে রেখেছে। মানুষতো টাকা রাখে লাভের জন্য। আর যেখানে বেশি লাভ পাবে সেখানেই তো তারা যাবেন।
নানা অনিয়মের কারণে মানুষ আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর উপর থেকে আস্থা হারিয়ে ফেলার কারণে আমানত তুলে নিচ্ছে কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে গোলাম সরওয়ার ভুঁইয়া বলেন, বিভিন্ন কারণে কিছু আস্থার সংকট আছে। আমরা চেষ্টা করতেছি কীভাবে মানুষের বাড়ানো যায়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালের মার্চ শেষে দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর আমানতকারীর সংখ্যা ছিল ৪ লাখ ২৭ হাজার ৩৪১ জন। আর জুন শেষে অর্থাত্ তিন মাস পর আমানতকারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৭৯ হাজার ৭৩৭ জন। সেই হিসাবে তিন মাসে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর আমানতকারীর সংখ্যা কমেছে ৪৭ হাজার ৬০৪ জন ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি বছরের প্রথম প্রান্ত্মিকে (জানুয়ারি-মার্চ) আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর আমানতকারীর সংখ্যা কমেছিল ৩ হাজার ৮৮০ জন। এর আগে ২০২৩ সালের চতুর্থ প্রান্ত্মিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর আমানতকারীর সংখ্যা কমেছিল ২৫ হাজার ৭৮২ জন। এর আগের তিন মাসে (এপ্রিল-জুন) এ সংখ্যা কমেছিল ১৮ হাজার ৪৯৩ জন। এছাড়া ২০২৩ সালের প্রথম প্রান্ত্মিকে (জানুয়ারি-মার্চ) এ সংখ্যা কমেছিল ৩৫ হাজার ৫ জন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, জুন প্রান্ত্মিকে এসব প্রতিষ্ঠানে আমানত বেড়েছে মাত্র ১ দশমিক ৮৩ শতাংশ।

তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্ত্মিক (এপ্রিল-জুন) শেষে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর আমানত দাঁড়িয়েছে ৪৫ হাজার ১১৬ কোটি ৮ লাখ টাকা। আর প্রথম প্রান্ত্মিক (জানুয়ারি-মার্চ) শেষে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর আমানত ছিল ৪৪ হাজার ৩০৪ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। সেই হিসাবে তিন মাসে আমানত বেড়েছে ৮ হাজার ১১৩ কোটি ৯ লাখ টাকা।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালের মার্চ শেষে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণ বিতরণের স্থিতি ছিল ৭৪ হাজার ৫২৯ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। আর তিন মাস পর (এপ্রিল-জুন) আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৭৪ হাজার ৯১৮ কোটি ৪১ লাখ টাকা।

এদিকে আলোচ্য এই প্রান্ত্মিকে সবেচেয়ে বেশি আমানত কমেছে চট্টগ্রাম বিভাগে। চলতি বছরের মার্চ শেষে এ বিভাগে আমানত ছিল ২১ হাজার ৭৩৫ কোটি ২ লাখ টাকা। আর জুন শেষে এ বিভাগের আমানত দাঁড়িয়েছে ২০ হাজার ৬৪৪ কোটি টাকা।

আর আমানত কমার দিক থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে খুলনা বিভাগ। এ বিভাগে জুন শেষে আমানত দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৪৭১ কোটি ৮ লাখ টাকা। আর মার্চ শেষে এ বিভাগে আমানত ছিল ৩ হাজার ৫৪০ কোটি ৭ লাখ টাকা। সে হিসেবে তিন মাসে খুলনা বিভাগে আমানত কমেছে ৬৮৯ কোটি টাকা।

অপরদিকে ঢাকা বিভাগে আমানত বেড়েছে ২ দশমিক২০২ শতাংশ, রাজশাহী বিভাগে বেড়েছে ১ দশমিক ২৭ শতাংশ, সিলেটে বেড়েছে ১ দশমিক ১২ শতাংশ এবং রংপুর বিভাগে বেড়েছে ৭ দশমিক ৩৯ শতাংশ।

 

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: