facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২১ জানুয়ারি মঙ্গলবার, ২০২৫

Walton

গুম-গণহত্যায় অভিযুক্ত হলেই নির্বাচনে অযোগ্য করার পথে আইন আসছে


২০ জানুয়ারি ২০২৫ সোমবার, ০২:০১  পিএম

ডেস্ক রিপোর্ট

শেয়ার বিজনেস24.কম


গুম-গণহত্যায় অভিযুক্ত হলেই নির্বাচনে অযোগ্য করার পথে আইন আসছে

নির্বাচনে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের অংশগ্রহণ বন্ধ করতে একটি বিশেষ আইনের খসড়া তৈরি করছে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন। নতুন আইনের আওতায় বিচারবহির্ভূত হত্যা, গণহত্যা, গুম, এবং অমানবিক নির্যাতনের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা জাতীয় নির্বাচনে অযোগ্য হবেন।

কমিশন সূত্র জানায়, এই প্রস্তাবটি বাস্তবায়িত হলে, অভিযুক্তরা আদালতের রায়ের জন্য অপেক্ষা না করেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকবেন। কমিশন আশা করছে, আগামী ৩১ জানুয়ারির মধ্যে তারা এই আইনের খসড়া সরকারের কাছে হস্তান্তর করতে পারবে।

কী থাকছে আইনের খসড়ায়

খসড়ায় বলা হয়েছে, মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত কোনো ব্যক্তি, যদি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্তে অভিযুক্ত হন, তবে তিনি আর নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না। একই নিয়ম প্রযোজ্য হবে গুম কমিশনের তদন্তে অভিযুক্তদের ক্ষেত্রেও। দুর্নীতি ও অর্থপাচারের মতো গুরুতর অপরাধেও অভিযোগ প্রমাণিত হলে প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে প্রার্থী অযোগ্য করার কথা ভাবা হচ্ছে।

বর্তমান বিধানের সীমাবদ্ধতা

বর্তমানে জাতীয় সংসদ সদস্য হওয়ার যোগ্যতা নির্ধারণে নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধে দুই বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্তদের মুক্তির পাঁচ বছর পর্যন্ত নির্বাচন থেকে বিরত রাখা হয়। তবে সাজা কার্যকর হওয়ার আগে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া সম্ভব। নতুন আইনে এই সীমাবদ্ধতা দূর করার লক্ষ্যে প্রস্তাব রাখা হয়েছে।

বিতর্কিত প্রসঙ্গ

বিশেষজ্ঞদের মতে, অভিযোগের ভিত্তিতে কাউকে নির্বাচনের অযোগ্য ঘোষণা করা হলে তা ভবিষ্যতে রাজনৈতিকভাবে অপব্যবহারের আশঙ্কা তৈরি করতে পারে। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এম এ মতিন বলেন, “সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে আদালতের চূড়ান্ত রায় ছাড়া কাউকে অযোগ্য করা উচিত হবে না।”

আইনের সম্ভাব্য প্রভাব

যদি আইনটি কার্যকর হয়, তবে গুম, মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত অনেক রাজনীতিক আগামী জাতীয় নির্বাচনে অযোগ্য হতে পারেন। এতে প্রধানমন্ত্রিত্ব হারানো শেখ হাসিনা ও তাঁর মন্ত্রিসভার বেশ কয়েকজন সদস্যকেও প্রভাবিত করার সম্ভাবনা রয়েছে।

সংস্কার কমিশনের অবস্থান

সংস্কার কমিশনের মতে, মানবতাবিরোধী অপরাধ বিশেষ গুরুতর। এ ধরনের অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের নির্বাচন থেকে দূরে রাখা গণতান্ত্রিক উত্তরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। কমিশন মনে করে, আইনের মাধ্যমে রাজনীতিতে দুর্বৃত্তায়ন বন্ধ হবে এবং ক্ষমতার অপব্যবহার কমে আসবে।

শেষ পর্যন্ত আইনটি পাস হলে এটি বাংলাদেশের নির্বাচনি ব্যবস্থায় বড় ধরনের পরিবর্তনের সূচনা করতে পারে। তবে এর সঠিক বাস্তবায়ন ও অপব্যবহার রোধে প্রয়োজন কঠোর নজরদারি।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন:

রাজনীতি -এর সর্বশেষ