facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৭ ডিসেম্বর শুক্রবার, ২০২৪

Walton

গ্রামে মাছ-মাংস কমে ভাত খাওয়ার প্রবণতা বেড়েছে


০৯ ডিসেম্বর ২০২৪ সোমবার, ১০:১৪  এএম

ডেস্ক রিপোর্ট

শেয়ার বিজনেস24.কম


গ্রামে মাছ-মাংস কমে ভাত খাওয়ার প্রবণতা বেড়েছে

উচ্চ খাদ্য মূল্যস্ফীতির প্রভাবে দেশের গ্রামীণ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর খাদ্যাভ্যাসে বড় পরিবর্তন এসেছে। মাছ-মাংসসহ প্রোটিনসমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণের পরিমাণ কমিয়ে তারা ভাতের মতো শর্করাজাতীয় খাবারের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন।

সম্প্রতি সরকারি গবেষণা সংস্থা বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) এক জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। বিআইডিএসের বার্ষিক উন্নয়ন সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত এক অধিবেশনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।

খাদ্য মূল্যস্ফীতির বাস্তব চিত্র:
বিআইডিএসের জরিপ অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে গ্রামীণ খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৬৬ শতাংশ। তবে গবেষণায় দেখা গেছে, বাস্তবে ওই সময়ে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১৫ শতাংশেরও বেশি ছিল। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন গ্রামের দরিদ্র মানুষ।

বিআইডিএসের মহাপরিচালক বিনায়ক সেন বলেন, “দরিদ্র মানুষরা মাছ-মাংসসহ প্রয়োজনীয় প্রোটিন খাওয়া কমিয়ে দিয়েছেন এবং তুলনামূলক সস্তা খাবারের দিকে ঝুঁকেছেন। অন্যদিকে অপেক্ষাকৃত ধনী জনগোষ্ঠী মাছ-মাংস ও ফল খাওয়ার পরিমাণ বাড়িয়েছেন।”

খাদ্য গ্রহণে বড় পরিবর্তন:
গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে গ্রামের মানুষের দৈনিক মাথাপিছু ভাত গ্রহণ ৩৪৯ গ্রাম থেকে বেড়ে ৩৯৪ গ্রামে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে গরুর মাংস খাওয়ার পরিমাণ কমে ১০ গ্রাম থেকে ৪ গ্রামে নেমে এসেছে। একই সময়ে ফল খাওয়ার পরিমাণও কমে গেছে, যা ৯১ গ্রাম থেকে নেমে ২৬ গ্রামে দাঁড়িয়েছে।

বিআইডিএসের গবেষক রিজওয়ানা ইসলাম বলেন, “খাদ্য মূল্যস্ফীতির কারণে দরিদ্র মানুষ পরিশ্রম করেও প্রয়োজনীয় পুষ্টি পাচ্ছেন না। এতে তাঁদের স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।”

মূল্যস্ফীতি ও খাদ্যের দাম:
বিআইডিএসের হিসাবে দেখা গেছে, ২০২৩ সালে এক বছরে মাছের দাম ২৭ শতাংশ, ব্রয়লার মুরগির দাম ১৫ শতাংশ, ডিমের দাম ২৪-২৭ শতাংশ এবং সবজির দাম ৩০ শতাংশের বেশি বেড়েছে। ফলে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর খাদ্য কেনার ক্ষমতা আরও সংকুচিত হয়েছে।

শিল্পশ্রমিকদের দারিদ্র্যের চিত্র:
অনুষ্ঠানে শিল্পশ্রমিকদের জীবনমান নিয়েও আলোচনা হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, শিল্পখাতে শ্রমিকদের মধ্যে দারিদ্র্যের হার জাতীয় গড়ের চেয়ে বেশি। বিআইডিএসের গবেষণা ফেলো হারুনুর রশিদ ভূঁইয়া বলেন, “প্রায় ২০ দশমিক ৫৩ শতাংশ শ্রমিক তাঁদের পরিবারের ন্যূনতম ব্যয় মেটাতে ব্যর্থ হচ্ছেন।”

উপস্থাপনায় আরও জানানো হয়, ট্রেড ইউনিয়নভুক্ত শ্রমিকদের মজুরি তুলনামূলক বেশি এবং তাঁদের পারিবারিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে প্রভাবও বেশি।

উপসংহার:
উচ্চ খাদ্য মূল্যস্ফীতি গ্রামের দরিদ্র মানুষের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পুষ্টিকর খাবার গ্রহণের পরিমাণ কমে যাওয়ায় তাদের স্বাস্থ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। গবেষকেরা মনে করছেন, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য আরও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: