facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ১৮ মার্চ মঙ্গলবার, ২০২৫

Walton

চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড থেকে বেরিয়ে গেল ইতালি


০৭ ডিসেম্বর ২০২৩ বৃহস্পতিবার, ০৭:১১  পিএম

ডেস্ক রিপোর্ট

শেয়ার বিজনেস24.কম


চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড থেকে বেরিয়ে গেল ইতালি

চীনের সিল্ক রোডখ্যাত উচ্চাভিলাষী বাণিজ্য ও অবকাঠামো প্রকল্প ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’ (বিআরআই) থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে ইতালি। দেশটির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির প্রশাসন বিষয়টি বেইজিংকে অবহিত করেছে। খবর বিবিসির।

চীনের বিআরআই প্রকল্প থেকে ইতালিকে প্রত্যাহার করে নিচ্ছেন জর্জিয়া মেলোনি

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ২০১৩ সালে এশিয়া ও ইউরোপজুড়ে আনুমানিক এক ট্রিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের লক্ষ্য নিয়ে চালু করেছিলেন বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ- বিআরআই প্রকল্প।

চীনের এই প্রকল্পের লক্ষ্য হচ্ছে নতুন নতুন রেলপথ ও বন্দর গড়া এবং পুরনোগুলোকে আধুনিকায়নের মাধ্যমে ইউরোপ ও এশিয়ার অন্যান্য অংশের সঙ্গে নিজেকে সংযুক্ত করা।


চীনের ফ্লাগশিপ প্রকল্প বিআরআই-তে ২০১৯ সালে স্বাক্ষর করে ইতালি। অন্যতম পশ্চিমা দেশ হিসেবে চীনের এই প্রকল্পে নিজেদের যুক্ত করে তখন ইউরোপ-আমেরিকার সমালোচনার শিকার হয় ইতালি। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র চীনের সঙ্গে ইতালির এই যোগসূত্রকে ভালোভাবে নেয়নি।

শুরু থেকেই বিআরআইকে ‘ঋণের ফাঁদ কূটনীতি’ বলে উল্লেখ করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটনের মতে, চীনের এই পরিকল্পনায় অস্বাভাবিক ধরণের কিছু বৃহৎ প্রকল্প রয়েছে, যাতে সংশ্লিষ্ট দেশগুলো অর্থায়ন করতে অক্ষম, আর বেইজিং এটি করছে তার নিজস্ব উদ্দেশ্য হাসিলের জন্যই।

অবশেষে ইতালিও ঘোষণা দিয়েছে, বিআরআই চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাবে তারা। দেশটির বিআরআই সদস্যপদ আগামী বছরের মার্চ মাসে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নবায়ন হওয়ার কথা ছিল। তবে বেইজিংকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেওয়ার বিষয়টি জানিয়ে দেওয়ায় সেটি আর হচ্ছে না।

ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি দীর্ঘদিন ধরেই চীনের বিআরআই উদ্যোগে ইতালির অংশগ্রহণের বিরোধিতা করে আসছিলেন।

বিশেষ করে মেলোনি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগেই তার পূর্ববর্তী সরকারের বিআরআইতে যোগদানের সিদ্ধান্তকে ‘গুরুতর ভুল’ বলে অভিহিত করেছিলেন এবং ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, ক্ষমতায় গেলে তিনি চুক্তি থেকে ইতালিকে প্রত্যাহার করে নেবেন।

মেলোনিকে সেই সুযোগ করে দিয়েছে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের অবাস্তবায়িত একটি প্রতিশ্রুতি। ২০১৯ সালে জিনপিং ইতালিতে ২০ বিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, কিন্তু চলতি বছর পর্যন্ত তার সামান্য অংশই বিনিয়োগ হয়েছে।

শুধু তাই নয়, দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতিও বিস্তর। গত বছর ইতালি চীনের সঙ্গে ১৬.৪ বিলিয়ন ইউরো মূল্যের রপ্তানি বাণিজ্য করেছে। বিআরআই চুক্তির আগে ২০১৯ সালেই ইতালির এই বাণিজ্য ছিল ১৩ বিলিয়ন ইউরো।

অন্যদিকে ইতালিতে ২০১৯ সালে চীনা রপ্তানি বাণিজ্য ছিল ৩১.৭ বিলিয়ন ইউরো আর তা এখন বেড়ে হয়েছে ৫৭.৫বিলিয়ন ইউরো।

অথচ ইউরোজোনের দুটি বৃহত্তম অর্থনীতি ফ্রান্স ও জার্মানি বিআরআই’র সদস্য না হওয়া সত্ত্বেও চীনে তাদের বাণিজ্য ইতালির তুলনায় অনেক বেশি।

সবমিলিয়ে চীন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে নিজের পূর্বসূরিদের চেয়ে আরও বেশি পশ্চিমাপন্থী এবং ন্যাটোপন্থী পররাষ্ট্রনীতির নেতৃত্ব দেওয়ার চেষ্টা করছেন ইতালির নারী প্রধানমন্ত্রী মেলোনি।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন:

বিশেষ প্রতিবেদন -এর সর্বশেষ