facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ০৭ নভেম্বর বৃহস্পতিবার, ২০২৪

Walton

জঙ্গি সংগঠন বলায় মাহমুদুর রহমানকে ক্ষমা চাইতে বলল ইস্কন


০২ নভেম্বর ২০২৪ শনিবার, ১২:৪৯  পিএম

স্টাফ রিপোর্টার

শেয়ার বিজনেস24.কম


জঙ্গি সংগঠন বলায় মাহমুদুর রহমানকে ক্ষমা চাইতে বলল ইস্কন

বাংলাদেশে অবস্থিত আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘকে (ইস্কন) ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর এজেন্ট, জঙ্গি সংগঠন উল্লেখ করে নিষিদ্ধ করার কথা বলেন আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। তাঁকে সাত দিনের মধ্যে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে বলল ইস্কন। এই সময়ের মধ্যে তিনি ক্ষমা না চাইলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়াসহ কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার ইঙ্গিত দিয়েছে সংঘটি।

শনিবার সকাল ১১টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত "ইস্কন সম্পর্কে প্রচারিত বিভ্রান্তিকর ও ভিত্তিহীন বক্তব্য ও সংবাদের প্রতিবাদ" শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে ইস্কন বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এসব কথা বলা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, ‘আমরা সংবাদমাধ্যম ও সামাজিকমাধ্যমে জানতে পেরেছি আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান ইস্কনকে জঙ্গি সংগঠন বলেছে। তিনি আমাদের র-এর এজেন্ট বলেছেন। ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িয়েছেন। উনাকে এসব প্রমাণ করতে হবে।

আর প্রমাণ করতে না পারলে জাতির সামনে এসে ক্ষমা চাইতে হবে। ইস্কন পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে হিন্দু ধর্ম প্রচার করে। আমরা আমেরিকা, রাশিয়া বা কোনো দেশের গোয়েন্দা সংস্থা না।’ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ইস্কন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক শ্রী চারু চন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী বলেন, ‘সম্প্রতি আমরা "দৈনিক আমার দেশ" পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের পক্ষ থেকে আমাদের সংগঠনের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন ও অসত্য হুমকি এবং নিষেধাজ্ঞার আহ্বানের ব্যাপারে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি।

তার বক্তব্য শুধু আমাদের সংগঠনকেই আঘাত করেনি, বরং এটি বাংলাদেশের ধর্মীয় সম্প্রীতি, সহনশীলতা এবং সামাজিক ঐক্যের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। আমাদের বিশ্বাস, এ ধরনের অযাচিত ও ভিত্তিহীন বক্তব্য দেশের শৃঙ্খলা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য ক্ষতিকর। মাহমুদুর রহমানকে অবহিত করতে চাই, তিনি যদি তার বক্তব্য পরিহার করে দুঃখ প্রকাশ করে জাতির কাছে ক্ষমা চান, তাহলে আমরা তাকে সাধুবাদ জানাব, অন্যথায় তার বিরুদ্ধে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা এবং আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

আমরা লক্ষ্য করছি, সম্প্রতি বিভিন্ন মহল প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ইস্কন বাংলাদেশকে নিয়ে বিভ্রান্তিকর গুজব ছড়াচ্ছে। যেমন, সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদসমূহে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে যে ছবি বা পতাকার কথা উল্লেখ করা হয়েছে, তা সম্পূর্ণভাবে বিভ্রান্তিকর ও ভিত্তিহীন।

প্রকৃতপক্ষে, ইস্কনের কোনো নিজস্ব পতাকা নেই। যে পতাকাটি দেখানো হয়েছে, তার সাথে ইস্কনের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। ইস্কন বাংলাদেশ তার সকল কর্মকাণ্ডে আইন ও শৃঙ্খলা মেনে চলে এবং বাংলাদেশে শান্তি, সহনশীলতা ও ধর্মীয় ঐক্য বজায় রাখার জন্য দৃঢ়নিষ্ঠ। তাই এসব গুজবের মাধ্যমে একটি শান্তিপূর্ণ ও আধ্যাত্মিক সংগঠনের বিরুদ্ধে জনমনে ভুল ধারণা সৃষ্টি করা হচ্ছে।

ইসকন একটি অরাজনৈতিক ধর্মীয় আন্তর্জাতিক সংগঠন। ইসকন বাংলাদেশ বরাবরই সকলের প্রতি মানবিক সহমর্মিতা ও ধর্মীয় সহনশীলতার বার্তা প্রচার করেছে এবং জাতীয় সম্প্রীতি ও ঐক্যের পক্ষে কাজ করেছে। সুতরাং, এসব মিথ্যা প্রচারণা শুধু বাংলাদেশ ইস্কনের ভাবমূর্তিকেই ক্ষতিগ্রস্থ করেনি, বরং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও ইস্কনের পাশাপাশি বাংলাদেশের সুনাম নষ্ট করছে এবং আমরা এ ধরনের বিভ্রান্তিকর প্রচারণার তীব্র নিন্দা জানাই।

সেইসঙ্গে সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি যে, তারা যেন এ ধরনের ভিত্তিহীন অপপ্রচারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে এবং সকল ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষকে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে সহায়তা করে।

সংখ্যালঘুদের ন্যায্য আট দফা দাবির প্রতি আমরা সংহতি প্রকাশ করি। পাশাপাশি, আমি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা-নির্যাতনের প্রতিবাদ এবং সনাতনীদের প্রতিমা, বাড়ি-ঘর, দোকানপাট ভাংচুর, লুট, অগ্নিসংযোগ, পুলিশ-শিক্ষকদের লাঞ্ছনা করে অব্যাহতি দেওয়া এবং ধর্ষণসহ বিভিন্ন অপরাধের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছি।

সেইসঙ্গে অনতিবিলম্বে সনাতন ধর্মাবলম্বীসহ দেশের সকল সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন, হামলা বন্ধ করার জন্য বর্তমান প্রশাসনের নিকট সবিনয়ে অনুরোধ করছি। সেইসাথে, যারা গুজব ছড়িয়ে অথবা ইস্কনকে বিভিন্ন রাজনৈতিক ট্যাগ লাগিয়ে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: