১২ নভেম্বর ২০২৪ মঙ্গলবার, ১১:২৬ এএম
ডেস্ক রিপোর্ট
শেয়ার বিজনেস24.কম
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও মেহেদি হাসান মিরাজের দৃঢ়তায় বাংলাদেশ পেয়েছিল চ্যালেঞ্জিং পুঁজি। ব্যাটারদের এনে দেওয়া ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে ভালোই লড়াই করলেন বোলাররা। কিন্তু আশা জাগিয়েও আফগানিস্তানের বিপক্ষে জিততে পারল না টাইগাররা।
সোমবার রাতে আফগানদের কাছে পাঁচ উইকেটে হেরে গেছে বাংলাদেশ।
শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ওভারে আট উইকেটে ২৪৪ রান করে বাংলাদেশ। জবাবে ১০ বল ও পাঁচ উইকেট হাতে রেখে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় আফগানিস্তান (২৪৬/৫)। রান তাড়ায় আফগানদের নেতৃত্ব দিয়েছেন ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ। দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন তিনি।
এই হারে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের শিরোপা জয়ের সুযোগ হাতছাড়া করল বাংলাদেশ। আফগানরা সিরিজ জিতল ২-১ ব্যবধানে। বাংলাদেশের বিপক্ষে এ নিয়ে টানা দুই সিরিজ জিতল তারা। যদিও প্রথম দুই সিরিজ জেতে টাইগাররা। শারজাহতে এবারের সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৯২ রানে হেরেছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৬৮ রানের জয় দিয়ে সমতায় ফেরে তারা।
আফগানিস্তানের রান তাড়ার কাজটা সহজ করে দিয়েছেন গুরবাজ। নিয়মিত বিরতি দিয়ে সতীর্থরা বিদায় নিলেও একপ্রান্ত লাগলে রাখেন তিনি। ৮৪ রানের মধ্যে তিন উইকেট তুলে নিয়ে আশা জাগিয়েছিল বাংলাদেশ। এ সময় সাজঘরে ফিরে যান সেদিকুল্লাহ অটল (১৪), রহমত শাহ (৮) ও অধিনায়ক হাসমতউল্লাহ শাহিদি (৬)।
চতুর্থ উইকেট জুটিতে জয়ের পথে এগোতে থাকে আফগানিস্তান। আজমতউল্লাহ ওমরজাইকে নিয়ে কাঁটায় কাঁটায় ১০০ রানের জুটি গড়েন গুরবাজ। গুরবাজ ম্যাচ শেষ করে আসতে পারেননি। ১২০ বলে ১০১ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। পাঁচটি চার ও সাতটি ছক্কায় ইনিংস সাজান তিনি। ৪৬ ম্যাচের ওয়ানডে ক্যারিয়ারের এটা গুরবাজের অষ্টম সেঞ্চুরি। পুরো ম্যাচে চারবার জীবন পেয়েছেন আফগান ওপেনার।
ওমরজাই অবশ্য দলকে জিতিয়েই ২২ গজ ছেড়েছেন। ৭৭ বলে তিনটি চার ও পাঁচ ছক্কার সুবাদে ৭০ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন তিনি। মোহাম্মদ নবি ২৭ বলে ৩৪ রানে অজেয় থাকেন। তার হাতে উঠেছে সিরিজ সেরার পুরস্কার। তবে অলরাউন্ডিং পারফর্ম করা ওমরজাই পেয়েছেন ম্যাচ সেরার খেতাব।
বাংলাদেশের পক্ষে দুটি করে উইকেট নেন নাহিদ রানা ও মোস্তাফিজুর রহমান। একটি শিকার ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজের। মিরাজ অবশ্য ব্যাট হাতেও আলো ছড়িয়েছিলেন। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে নিয়ে ১৪৫ রানের জুটি গড়েন তিনি। এই জুটির ওপর দাঁড়িয়ে লড়াকু সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ। ৭২ রানে চার উইকেট হারিয়েছিল টাইগাররা।
উইকেটের রাশ টেনে ধরতে গিয়ে ধীরেসুস্থে ব্যাট করেন মিরাজ। মাহমুদউল্লাহ ব্যাট করেছেন পরিস্থিতির দাবি মিটিয়ে। জুটি ভাঙে মিরাজের বিদায়ে। ১১৯ বলে ৬৬ রান করেন এই ম্যাচে টাইগারদের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক। আর ২৩৬তম ওয়ানডে খেলতে নামা মাহমুদউল্লাহ আভাস দিয়েছিলেন ক্যারিয়ারের পঞ্চম সেঞ্চুরির।
কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে ইনিংসের শেষ বলে রান আউট হয়ে যান মাহমুদউল্লাহ। সেঞ্চুরির দারুণ সুযোগ এসেছিল তার সামনে। তিন বলে চার রান দরকার ছিল। কিন্তু ৪৯তম ওভারের চতুর্থ বলে এক রান নিয়ে শরিফুল ইসলামকে স্ট্রাইক দেন তিনি। শেষ বলে আবার স্ট্রাইকার পান মাহমুদউল্লাহ। এবার প্রয়োজন ছিল তিন রানের।
সেই চেষ্টাই করেছিলেন মাহমুদউল্লাহ। কিন্তু পারেননি। দুই রান নিতে গিয়ে কাঁটা পড়েন তিনি। ৯৮ বলে ৯৮ রানে ২২ গজ ছাড়েন মাহমুদউল্লাহ। বাংলাদেশের ইনিংসে এটাই ছিল সবচেয়ে বড় আক্ষেপ। এর আগে ব্যাটিংয়ে নামা টাইগারদের শুরুটা ছিল দারুণ। উদ্বোধনী জুটিতে ৫৩ রান করেন দুই ওপেনার তানজিদ হাসান ও সৌম্য সরকার।
দুজনই আউট হয়েছেন উইকেটে থিতু হওয়ার পর। তানজিদ ২৯ বলে ১৯ ও সৌম্য ২৩ বলে ২৪ রান করেন। দলের পাঁচ ব্যাটার যেতে পারেননি দশকের ঘরে। আফগানিস্তানের বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল ওমরজাই। সাত ওভারে ৩৭ রানে চার উইকেট নেন তিনি। একটি করে শিকার নবি ও রশিদ খানের।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ২৪৪/৮ (৫০ ওভার)।
আফগানিস্তান: ২৪৬/৫ (৪৮.২ ওভার)।
ফল: আফগানিস্তান পাঁচ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচ সেরা: আজমতউল্লাহ ওমরজাই (আফগানিস্তান)
সিরিজ সেরা: মোহাম্মদ নবি (আফগানিস্তান)
সিরিজ: তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ২-১ ব্যবধানে জয়ী আফগানিস্তান।
শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।