২৬ অক্টোবর ২০২৪ শনিবার, ১১:২৭ এএম
ডেস্ক রিপোর্ট
শেয়ার বিজনেস24.কম
ডিএসইর বাজার মূলধন কমলো ১২ হাজার কোটি টাকা
দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সব সূচকের পতনের মধ্য দিয়ে লেনদেন হয়েছে। সেই সঙ্গে টাকার অংকে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। এছাড়া সপ্তাহ ব্যবধানে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ১২ হাজার কোটি টাকার বেশি।
পুঁজিবাজারের সাপ্তাহিক হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
বিদায়ী সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে লেনদেন শুরুর আগে ডিএসইতে বাজার মূলধন ছিল ৬ লাখ ৬৯ হাজার ১৬৬ কোটি টাকা। আর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে লেনদেন শেষে বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৫৬ হাজার ৮৬৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন কমেছে ১ দশমিক ৮৭ শতাংশ বা ১২ হাজার ২৯৮ কোটি টাকা।
গত সপ্তাহের তুলনায় ডিএসইর সব সূচকও কমেছে। চলতি সপ্তাহে প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১৪৩ দশমিক ৩৮ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৭৩ শতাংশ। এছাড়া ডিএসই-৩০ সূচক কমেছে ৫১ দশমিক ২২ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৬৫ শতাংশ। আর ডিএসইএস সূচক কমেছে ৩০ দশমিক ১২ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৫৭ শতাংশ।
ডিএসইতে সব সূচকের পতন হলেও বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৬৯৩ কোটি ৪২ লাখ টাকা। এর আগের সপ্তাহে মোট লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ২৭২ কোটি ২ লাখ টাকা। এক সপ্তাহে লেনদেন বেড়েছে ৪২১ কোটি ৪০ লাখ টাকা।
সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে ৩৯৬টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ৬৩টি কোম্পানির, কমেছে ৩০৬টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৭টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
গত সপ্তাহে সূচকের পতনে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে স্কয়ার ফার্মা, গ্রামীণফোন, ব্র্যাক ব্যাংক, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানি, ন্যাশনাল ব্যাংক ও রবির শেয়ার। ডিএসইতে গত সপ্তাহে মোট ১ হাজার ৬৯৩ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। আগের সপ্তাহে যা ছিল ১ হাজার ২৭০ কোটি টাকা।
খাতভিত্তিক লেনদেনচিত্রে দেখা যায়, গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের ২২ দশমিক ৭ শতাংশ দখলে নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে ব্যাংক খাত। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৬ শতাংশ দখলে নিয়েছে ওষুধ ও রসায়ন খাত। ১১ দশমিক ২ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাত। এছাড়া ৮ দশমিক ৫ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে চতুর্থ অবস্থানে ছিল বস্ত্র খাত। আর তথ্য ও প্রযুক্তি খাতের দখলে ছিল ৬ দশমিক ১ শতাংশ।
গত সপ্তাহে ডিএসইতে সব খাতের শেয়ারে নেতিবাচক রিটার্ন এসেছে। নেতিবাচক রিটার্নে শীর্ষে ছিল কাগজ, জীবন বীমা, তথ্যপ্রযুক্তি ও টেলিযোগাযোগ খাত। এসব খাতে নেতিবাচক রিটার্ন এসেছে যথাক্রমে ১১ দশমিক ৯, ৯ দশমিক ৪, ৬ দশমিক ১ ও ৫ দশমিক ৯ শতাংশ।
ইফাদ অটোসের শেয়ারদর বেড়েছে ২৪ শতাংশ
সমাপ্ত সপ্তাহে (২০ অক্টোবর-২৪ অক্টোবর) দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন হওয়া ৩৯৬ কোম্পানির মধ্যে ৬৩টি কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে। তাতে সপ্তাহ শেষে দরবৃদ্ধির শীর্ষে উঠে এসেছে ইফাদ অটোস লিমিটেড।
বিদায়ী সপ্তাহে ইফাদ অটোসের শেয়ারদর আগের সপ্তাহের তুলনায় ২৪ দশমিক ০৯ শতাংশ বেড়েছে। সপ্তাহ শেষে কোম্পানিটির সমাপনী মূল্য দাঁড়িয়েছে ২৭ টাকা ৩০ পয়সা।
দরবৃদ্ধির তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসা ইউনাইটেড ফাইন্যান্সের শেয়ারদর বেড়েছে ২২ দশমিক ৭৬ শতাংশ। আর ১৫ দশমিক ০৫ শতাংশ শেয়ারদর বাড়ায় তালিকার তৃতীয়স্থানে অবস্থান করেছে রানার অটো।
সাপ্তাহিক দর বৃদ্ধির শীর্ষ তালিকায় উঠে আসা অন্যান্য কোম্পানিগুলো হলো- ওয়াইম্যাক্স, ফার কেমিক্যাল, ফার ইস্ট নিটিং, পূবালী ব্যাংক, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স এবং খান ব্রাদার্স।
সাপ্তাহিক লেনদেনের শীর্ষে লাভেলো আইসক্রিম
বিদায়ী সপ্তাহে (২০ অক্টোবর-২৪ অক্টোবর) দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ৩৯৬ কোম্পানির শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে। তাতে সপ্তাহ শেষে লেনদেনের শীর্ষে উঠে এসেছে লাভেলো আইসক্রিম পিএলসি।
সমাপ্ত সপ্তাহে কোম্পানিটির ২৮ কোটি ২৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। তাতে লেনদেনের শীর্ষে জায়গা নিয়েছে কোম্পানিটি। আলোচ্য সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনে লাভেলো আইসক্রিমের অবদান ৮ দশমিক ৩৪ শতাংশ।
লেনদেন তালিকার দ্বিতীয় স্থানে থাকা অগ্নি সিস্টেমসের সপ্তাহজুড়ে ১২ কোটি ৬২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর তালিকার তৃতীয় স্থানে উঠে আসা এনআরবি ব্যাংকের বিদায়ী সপ্তাহে শেয়ার হাতবদল হয়েছে ১০ কোটি ৬১ লাখ টাকা।
সাপ্তাহিক লেনদেনের শীর্ষ তালিকায় থাকা অন্যান্য কোম্পানিগুলো হলো- স্কয়ার ফার্মা, গ্রামীণফোন, ব্র্যাক ব্যাংক, মিডল্যান্ড ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, ইবনে সিনা এবং ফারইস্ট নিটিং।
ওয়ালটনের উদ্যোক্তা পরিচালকের শেয়ার হস্তান্তরের ঘোষণা
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসির উদ্যোক্তা পরিচালক এসএম আশরাফুল আলম ৩০ লাখ ৩০ হাজার শেয়ার হস্তান্তরের ঘোষণা দিয়েছেন। আগামী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে ডিএসইর ট্রেডিং সিস্টেমের বাইরে তার স্ত্রী সোনিয়া আকতারকে এ শেয়ার হস্তান্তর করবেন তিনি। স্টক এক্সচেঞ্জ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
দেশের পুঁজিবাজারে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের লেনদেন শুরু হয় ২০২০ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর। কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ৬০০ কোটি ও পরিশোধিত মূলধন ৩০২ কোটি ৯২ লাখ ৮০ হাজার টাকা। রিজার্ভে রয়েছে ১০ হাজার ১৬ কোটি ৩২ লাখ টাকা। কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ৩০ কোটি ২৯ লাখ ২৮ হাজার ৩৪৩। এর মধ্যে ৭৪ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ শেয়ারই রয়েছে উদ্যোক্তা পরিচালকদের হাতে। এছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে দশমিক ৫২, বিদেশী বিনিয়োগকারী দশমিক শূন্য ৯ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ২৫ দশমিক ৩২ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।
সমাপ্ত ২০২৩-২৪ হিসাব বছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৪৪ টাকা ৭৮ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ২৫ টাকা ৮৪ পয়সা। সে হিসাবে কোম্পানিটির ইপিএস বেড়েছে ৭৩ দশমিক ৩০ শতাংশ। গত ৩০ জুন শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৩৭৯ টাকা ৩০ পয়সায় (পুনর্মূল্যায়িত), পুনর্মূল্যায়ন ছাড়া যা ২৭৭ টাকা ৮৬ পয়সা।
ডিভিডেন্ড পেল ৪ কোম্পানির বিনিয়োগকারী
বিদায়ী সপ্তাহে (২০-২৪ অক্টোবর) শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ৪ কোম্পানির ঘোষিত ডিভিডেন্ড বিনিয়োগকারীদের কাছে প্রেরণ করা হয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
কোম্পানি চারটি হলোঃ রেকিট বেনকিজার, একমি পেস্টিসাইডস, বিচ হ্যাচারি এবং রানার অটোমোবাইলস।
আলোচ্য অর্থবছরে রেকিট বেনকিজার ৫৫০ শতাংশ, একমি পেস্টিসাইডস ০.১০ শতাংশ, বিচ হ্যাচারি ২ শতাংশ এবং রানার অটোমোবাইলস ১০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করে।
ঘোষিত ক্যাশ ডিভিডেন্ড বাংলাদেশ ইলেকট্রিক ফান্ড ট্রান্সফার নেটওয়ার্কের (বিইএফটিএন) মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের ব্যাংক হিসাবে প্রেরণ করা হয়েছে।
শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।