facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২২ এপ্রিল মঙ্গলবার, ২০২৫

Walton

বাবা-মায়ের ৫ ভুলে শিশুর জীবন ধ্বংস!


৩১ অক্টোবর ২০১৬ সোমবার, ০৭:২০  পিএম

শেয়ার বিজনেস24.কম


বাবা-মায়ের ৫ ভুলে শিশুর জীবন ধ্বংস!

দাম্পত্য জীবনে স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া, মনোমালিন্য হতেই পারে। কিন্তু কতটুকু সন্তানের সামনে প্রকাশ করবেন, তা ভাবার বিষয়। কেননা, মা-বাবার ঝগড়া শিশুর মনোজগতে আলোড়ন ফেলে। বাবা-মায়ের অসাবধানতাবশত কিছু ভুল দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতির কারণ হতে পারে সন্তানের। এমনকি ধ্বংস হয়ে যায় শিশুর জীবন।

সম্প্রতি ‘টাইম ম্যাগাজিন’ পাঁচটি জিনিস তুলে ধরেছেন যেগুলো ছোটবেলায় শিশুর মনে খুব গভীর প্রভাব ফেলে। তাই সন্তানকে ভালোভাবে বড় করার জন্য বাবা-মায়ের এ বিষয়গুলোর প্রতি সচেতন থাকা জরুরি।

১. নিরাপত্তাবোধ

যখন শিশুর সঙ্গে তার বাবা-মা ভালো ব্যবহার করেন তখন সে নিজেকে নিরাপদ মনে করে। আবার তার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলে শিশুটি নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে। আর যখন শিশুর সঙ্গে বাবা-মা খুবই বাজে আচরণ করে তখন সে তাদের খুবই অপছন্দ করে। আর এ বিষয়টি সে সারাজীবন মনে রাখে। তাই সন্তানকে লালন-পালন করার সময় তাকে যতটা সম্ভব নরম ব্যবহার করুন। পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তার সঙ্গে আলোচনা করুন যে সেও মনে করে যে পারিবারের একজন সদস্য হিসেবে তাকে সম্মান দেওয়া হচ্ছে।

২. মনোযোগ

কোথাও ঘুরতে গেলে বা বাড়িতে শিশু সন্তানকে নিয়ে খেলা করার সময় সে লক্ষ্য করে বাবা-মা তার প্রতি কতটা মনোযোগ দিচ্ছে। ধরুন আপনি সকালে হাঁটতে বের হয়েছেন তখন তাকেও নিয়ে যেতে পারেন। কারণ ছোটবেলা থেকে সে যা দেখবে তাই মনে রাখবে। আপনি যদি তাকে নিয়ে ঘুরতে বের হন তাহলে সে মনে করবে আপনি তার প্রতি মনোযোগী। এটা তাকে সুস্থ মানসিকতা নিয়ে বড় হতে সাহায্য করবে।

৩. অনিরাপত্তাবোধ

শিশুর ছোট্ট জগতের মোটামুটি পুরোটাই জুড়ে থাকে বাবা-মা। তার ভালোমন্দ নির্ভর করছে বাবা-মায়ের ভালো থাকার ওপর—এ সত্যটা তার মন অনেক আগেই জেনে যায়। বাবা-মায়ের বন্ধুত্বপূর্ণ ও মাধুর্যমণ্ডিত সম্পর্ক তাকে যে একধরনের নিরাপত্তাবোধ দেয়, সেটা তার আত্মবিশ্বাস তৈরির জন্য অপরিহার্য। পরস্পরকে তীব্র আক্রমণ, কথায় কথায় ছেড়ে যাওয়ার হুমকি ইত্যাদি বাচ্চাদের মধ্যে এক গভীর নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করে।

শিশু যা দেখে তাই তার মনে প্রভাব ফেলে। সেটি খুব যত্নসহকারে মনে রাখে। তাই স্বামী-স্ত্রী ঝগড়া করার আগে মনে রাখবেন আপনার শিশু পাশে আছে কি-না। কারণ ছোটবেলায় সে যদি আপনাদের ঝগড়া করতে দেখে বড় হয় তাহলে স্বামী-স্ত্রীর বন্ধন সম্পর্কে তার খারাপ ধারণা জন্মাবে।  সে মনে করবে স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া করাটাই স্বাভাবিক। বড় হয়ে সেও তার বন্ধুদের সঙ্গে ঝগড়ায় লিপ্ত হবে। আর বিয়ের পর স্ত্রী বা স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া করার প্রবণতাও তার ভেতরে বেশি থাকবে। বর্তমানে শিশু অপরাধ বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ ও পারিবারিক কলহ। তাই একজন বাবা বা মা হিসেবে আপনার মনে রাখা জরুরি।

৪. মুখের ভাষা

জীবনে অনেক ঘাত-প্রতিঘাত পার করতে হয়। অনেক সময় পরিবেশ অনুকূলে থাকে না। তখন কারো ওপর অসন্তুষ্ট হলে মুখে যা আসে তাই বলে ফেলেন অনেকে। তবে তখন শিশুর জন্য সচেতনভাবে কথা বলতে হবে। কারণ আপনি কোন ভাষায় কথা বলছেন সেটিও আপনার শিশু মনে রাখছে।

আর যতটা সম্ভব ইতিবাচক শব্দগুলো তার সামনে বলার অভ্যাস করা উচিত। কারণ যদি ছোটবেলায় তার মাথায় ইতিবাচক চিন্তা ঢুকানো যায় তাহলে সারাজীবন সে ইতিবাচক থাকবে। আবার উল্টো দিকে তার মাথায় যদি নেতিবাচক শব্দ ঢোকে তাহলে সারাজীবন তার মাথায় নেতিবাচক শব্দ ঘোরাফেরা করবে। আর এ নেতিবাচক শব্দগুলো তার জীবন ধ্বংস করে দেবে।

যেমন উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ‘লেখাপড়ায় খারাপ করলে তুমি চোর বাটবার হবে’। একথা না বলে আপনি বলুন, ‘ভালো করে লেখাপড়া করলে তুমি অনেক বড় অফিসার হবে।’ কারণ আপনি যখন ‘বড় অফিসার’ কথাটি ব্যবহার করবেন তখন ‘বড় অফিসার’ কী জিনিস তা নিয়ে সে চিন্তা করবে। কীভাবে বড় অফিসার হওয়া যায় সেটি তার মাথায় ঘোরাফেরা করবে। আর আপনি যখন ‘চোর বাটপার’ শব্দটি ব্যবহার করবেন তখন ‘চোর বাটপার’ কী জিনিস তা নিয়ে চিন্তা করবে। এবং কীভাবে দক্ষ ‘চোর বাটপার’ হওয়া যায় তা নিয়ে যদি চিন্তা করে তাহলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই। কারণ আপনি তার চিন্তার জগত তৈরি করেছেন ‘চোর বাটপার’ হিসেবে।

৫. পারিবারিক ঐতিহ্য

পারিবারিক ঐতিহ্য শিশুর জন্য খুবই উপকারী। তাই পরিবারের ঐতিহ্যগুলো শিশুর সামনে তুলে ধরুন। সময়ে পেলে তার দাদা-দাদী বা নানা-নানীর বাড়িতে নিয়ে যান। শিশুর মন সবসময় কৌতুহলী থাকে। সে প্রতিনিয়ত নতুন এ অজানা বিশ্বকে জানতে চায়। আর যখন তার পরিবারের সোনালি ঐতিহ্য সম্পর্কে সে জানতে পারে তখন পরম আদরে তা গ্রহণ করে। সে তার মূল খুঁজে পায়। কারণ একটা সময় সবাই তার মূলে ফিরে যেতে চায়। তার ঐতিহ্য নিয়ে গর্ব করতে ভালোবাসে।

তাই একজন বাবা মা হিসেবে দায়িত্ব পারিবারিক ঐতিহ্যগুলো তার সামনে তুলে ধরা, তার দাদা-দাদীকে নিয়ে তার সামনে মজার মজার গল্প করা ও তাদের প্রশংসা করা। যখন তাদের নিয়ে প্রশংসা করবেন তখন সেও আপনার প্রশংসা পাওয়ার জন্য তাদের মত হওয়ার চেষ্টা করবে।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন:

স্বাস্থ্য -এর সর্বশেষ