facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ১৫ মার্চ শনিবার, ২০২৫

Walton

বিজলি রায়ের করুণ পরিণতি: কারাগার থেকে হিমঘর, তারপর স্বদেশে ফেরা


১৪ মার্চ ২০২৫ শুক্রবার, ০৯:০৯  পিএম

ডেস্ক রিপোর্ট

শেয়ার বিজনেস24.কম


বিজলি রায়ের করুণ পরিণতি: কারাগার থেকে হিমঘর, তারপর স্বদেশে ফেরা

ভারতে ফেরার ব্যবস্থা হতে হতে কারাবন্দী বিজলি রায় মারা যান। ২০২১ সালে শরীয়তপুরে অনুপ্রবেশের দায়ে আটক হয়েছিলেন তিনি। ছয় মাসের সাজা শেষে মুক্তি পেলেও, অভিভাবকের খোঁজ না মেলায় দেশে ফেরা সম্ভব হয়নি। দুই বছর পর, যখন সব প্রক্রিয়া শেষ হলো, তখন বিজলি আর বেঁচে নেই।

আজ শুক্রবার চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দরে বিজলি রায়ের মরদেহ দুই দেশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রায় দুই মাস রাজশাহী মেডিকেল কলেজের হিমঘরে থাকার পর অবশেষে তিনি দেশে ফিরলেন, তবে জীবিত নয়, লাশ হয়ে। রাজশাহীর সিনিয়র জেল সুপার রত্না রায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পরিবারের খোঁজ মিলল সাংবাদিকের প্রচেষ্টায়

বিজলির বাড়ি ভারতের বিহার রাজ্যের মোজাফফরপুর জেলার মিনাপুর থানার চক জামাল গ্রামে। তাঁর ঠিকানা অনুসন্ধান ও পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের উদ্যোগ নেন সাংবাদিক শামসুল হুদা। তার প্রচেষ্টাতেই মৃত্যুর পর হলেও বিজলি বাড়ি ফিরলেন। শামসুল হুদা এর আগেও বাংলাদেশ-ভারতের কারাগারে আটক ৪৩ জনকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছেন।

বিজলির ফিরে যাওয়ার দীর্ঘ প্রক্রিয়া

বিজলি রায়ের কাগজপত্রে গ্রামের নাম ভুল থাকায় দীর্ঘদিন তাঁকে ফেরানো সম্ভব হয়নি। গত বছরের ডিসেম্বর মাসে শামসুল হুদা গ্রাম পঞ্চায়েতের মাধ্যমে তাঁর পরিবারের সন্ধান পান। এরপর ভারতের দূতাবাস, বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও কারা অধিদপ্তরের সমন্বয়ে শুরু হয় বিজলির ফেরার প্রক্রিয়া।

কিন্তু এর মধ্যেই আসে দুঃসংবাদ। জানুয়ারির মাঝামাঝি বিজলি রায় অসুস্থ হয়ে রাজশাহী মেডিকেলে ভর্তি হন এবং ১৫ জানুয়ারি মারা যান। তখন তাঁর মরদেহ দেশে ফেরানোর নতুন লড়াই শুরু হয়। শামসুল হুদা ভারতীয় দূতাবাস ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে মরদেহ হস্তান্তরের ব্যবস্থা করেন।

অবশেষে লাশ ফিরল দেশে

আজ সকাল ৮টায় রাজশাহী মেডিকেলের হিমঘর থেকে বিজলির মরদেহ বের করা হয়। সব প্রক্রিয়া শেষে দুপুর ৩টা ৩০ মিনিটে তাঁর মরদেহ ভারতের বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ভারতের দূতাবাস মরদেহ মিনাপুরে পৌঁছে দেওয়ার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেয়।

রাজশাহীর সিনিয়র জেল সুপার রত্না রায় বলেন, ‘সব প্রক্রিয়া শেষ করে আজ আমরা বিজলির মরদেহ তাঁর দেশের কাছে হস্তান্তর করেছি। জীবিত বিজলিকে ফেরাতে পারিনি, তবে অন্তত তাঁর মরদেহ পরিবার পেয়েছে।’

এই করুণ পরিণতি কেবল বিজলির নয়, বরং সীমান্তের দুই পাশে আটকে থাকা অনেক নামহীন মানুষের বাস্তবতা।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন:

বিশেষ প্রতিবেদন -এর সর্বশেষ