facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ১৯ অক্টোবর শনিবার, ২০২৪

Walton

ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ে নারী কর্মীদের সংখ্যা বাড়ছে


১১ এপ্রিল ২০২৩ মঙ্গলবার, ১০:৩৬  এএম

স্টাফ রিপোর্টার

শেয়ার বিজনেস24.কম


ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ে নারী কর্মীদের সংখ্যা বাড়ছে

ধীরে হলেও ব্যাংকের চাকরিতে অংশগ্রহণ বাড়ছে নারী কর্মীদের। নতুন করে চাকরিতে এসেছেন এমন ব্যাংকারদের মধ্যে এখন ১৭ শতাংশই নারী। নারী কর্মী নিয়োগে এখনো এগিয়ে রয়েছে বিদেশি ব্যাংকগুলো। এ ছাড়া ব্যাংকের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে ৯ শতাংশের বেশি রয়েছেন নারী কর্মী। নারী কর্মীদের চাকরি বদলের প্রবণতাও আগের তুলনায় কমেছে। ব্যাংক খাতের ওপর বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ লিঙ্গসমতাবিষয়ক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২২ সালের ডিসেম্বর শেষে দেশের ব্যাংক খাতে নারী কর্মীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৩১ হাজার ৯৩৯। বর্তমানে ব্যাংকে নারী কর্মকর্তার হার ১৬ দশমিক ২৯ শতাংশ, যা ২০২১ সালে ছিল ১৫ দশমিক ৮০ শতাংশ। ব্যাংকে নারীর প্রতিনিধিত্ব বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তা হিসেবেও তাদের দেখা যাচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত ২০২২ সালের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ের পরিসংখ্যান বলছে, ব্যাংকে যারা ক্যারিয়ার শুরু করছেন, তাদের মধ্যে ১৬ দশমিক ৯৬ শতাংশ নারী। ব্যবস্থাপনার মধ্যম স্তরে নারীদের অংশগ্রহণ ১৫ দশমিক ৬৭ শতাংশ। আর ব্যাংকের উচ্চপর্যায়ে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তাদের মধ্যে ৯ দশমিক ২২ শতাংশ নারী।

২০২২ সালের জুন নাগাদ দেশের ব্যাংক খাতে বোর্ড সদস্য বা পরিচালক হিসেবে নারীদের অংশগ্রহণ ছিল মাত্র ১৩ দশমিক ৫৬ শতাংশ। তবে ডিসেম্বর শেষে এই হার দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক ২২ শতাংশে। ২০১৮ সালে ব্যাংক পরিচালক পদে নারীদের হার ছিল ১২ দশমিক ৭৬ শতাংশ; অর্থাৎ নীতিনির্ধারণেও নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ছে। সরকারি ব্যাংকগুলোয় নীতিনির্ধারণের জন্য পরিচালক নিয়োগ দেয় সরকার। নারী উদ্যোক্তা, সাবেক নারী ব্যাংকার, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের এই পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। আর বেসরকারি ব্যাংকগুলোয় মালিকদের স্ত্রী, কন্যা, পুত্রবধূ ও ঘনিষ্ঠজনদের পরিচালক হিসেবে দেখা যায়।

২০২২ সালের ডিসেম্বরে সরকার রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান এবং পরিচালক নিয়োগসংক্রান্ত নতুন এক নীতিমালা করেছে। সেই নীতিমালায় বলা হয়েছে, এসব প্রতিষ্ঠানের পরিচালকদের এক-তৃতীয়াংশই থাকবেন নারী। এ ছাড়া সরকারের শেয়ার রয়েছে, এমন বেসরকারি ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রেও এই নীতিমালা অনুসরণ করতে হবে।

ব্যাংকে নারীদের কর্মসংস্থানের সবচেয়ে বড় অংশীদার হলো দেশের বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো। বর্তমানে ৩১ হাজার ৯৩৯ জন নারী ব্যাংক খাতে কর্মরত আছেন। এর মধ্যে ২১ হাজার ১৯৮ জন কাজ করছেন দেশের বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোয়। এ ছাড়া রাষ্ট্রায়ত্ত ৬ ব্যাংকে নারী কর্মীর সংখ্যা ৮ হাজার ১১৮, বিশেষায়িত ৩ ব্যাংকে ১ হাজার ৭০৬, বিদেশি মালিকানায় থাকা ৯ ব্যাংকে ৯১৭ জন নারী কর্মী কর্মরত রয়েছেন। করোনা সংকট ও পরবর্তী সময়ে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে দেশের অর্থনীতি সামগ্রিকভাবে চাপের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এই সময়ে বেসরকারি ব্যাংকগুলোয় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি কমে এসেছে। সরকারি ব্যাংকের নিয়োগপ্রক্রিয়াও চলছে ধীরগতিতে। তা না হলে পরিস্থিতির আরও পরিবর্তন হতো বলে মনে করেন অনেকে।

এদিকে ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, পড়ালেখা শেষ করে ব্যাংকগুলোয় প্রচুর নারী কর্মী যোগ দেন। কিন্তু পরে তাদের একটা অংশ চাকরি ছেড়ে দিতে বাধ্য হন। মূলত কাজের চাপ সামলাতে না পারা ও সন্তান লালন-পালনের জন্য ব্যাংকের চাকরি ছাড়েন তারা। তবে অনেক সময় এমনও হয়ে থাকে, পরিবার কিংবা সমাজ থেকে নেতিবাচক মনোভাবের কারণেও নারী ব্যাংকাররা মাঝপথে চাকরি ছেড়ে দিচ্ছেন।কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মকর্তাদের মধ্যে ১৬ শতাংশ নারী কর্মী রয়েছেন। তাদের মোট সংখ্যা ১ হাজার ৪৩। এটি ২০২১ সালের ডিসেম্বর প্রান্তিক থেকে ৩ জন বা শূন্য দশমিক ২৯ শতাংশ কম। আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কর্মরত নারীদের মধ্যে বোর্ড সদস্যদের ১৫ দশমিক ৬১ শতাংশ। আর নতুন কর্মক্ষেত্রে যুক্ত হয়েছেন ১৮ দশমিক ৫৪ শতাংশ। এ ছাড়া মধ্যবর্তী পর্যায়ে কর্মরত ১৩ দশমিক ৬২ শতাংশ। আর উচ্চপর্যায়ে কর্মরত রয়েছেন ৭ দশমিক ৮০ শতাংশ।

 

 

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: