facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২১ এপ্রিল সোমবার, ২০২৫

Walton

ভাগ অংশের সমাধান পারে না প্রাথমিকের ৯৫% শিশু


১৪ জুন ২০২৩ বুধবার, ০১:৩৭  পিএম

স্টাফ রিপোর্টার

শেয়ার বিজনেস24.কম


ভাগ অংশের সমাধান পারে না প্রাথমিকের ৯৫% শিশু

দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা গণিত বিষয়ে। গণিতের ভাগ অংশের অংক করতে পারেন না ৯৫ শতাংশের বেশি শিশু। এর মধ্যে ছেলে শিক্ষার্থীরা ৯৫.৮৫ শতাংশ এবং মেয়ে শিক্ষার্থীদের ৯৭.২০ শতাংশ শিক্ষার্থী ভাগ করতে পারেন না। বুধবার (১৪ জুন) রাজধানীতে জাতীয় শিক্ষা সংলাপে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ওয়েব ফাউন্ডেশনসহ চারটি সংস্থার যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত গবেষণায় এসব তথ্য উঠে আসে।

গবেষণা ফলাফলে জানানো হয়েছে, জরিপে ৫-১৬ বছর বয়সী রাজশাহী ও খুলনা অঞ্চলের ১৫৩৩ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। জরিপে তাদের খুব সাধারণ কিছু বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হয়েছে। যা তারা বিদ্যালয় এবং অন্যান্য শিখন কালে চর্চা করে থাকে।

এতে দেখা যায়, গণিতের একক অংক শনাক্ত করতে পারেনি তাদের ১৪ দশমিক ১৯ শতাংশ ছেলে শিক্ষার্থী এবং ১৩ দশমিক ০৬ শতাংশ মেয়ে শিক্ষার্থী। তবে, জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে বিয়োগ অংক করতে পেরেছে ১৮ দশমিক ৬৬ শতাংশ ছেলে শিক্ষার্থী এবং ২২ দশমিক ২৪ শতাংশ মেয়ে শিক্ষার্থী।

গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে, অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৮৪ দশমিক ৮৫ শতাংশ ছেলে শিক্ষার্থী এবং ৮২ দশমিক ৮৬ শতাংশ মেয়ে শিক্ষার্থী ইংরেজিতে গল্প পড়তে পারেন না। এছাড়া ইংরেজি বর্ণ পড়তে পারেনি ১৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ ছেলে এবং ১৫ দশমিক ২২ শতাংশ মেয়ে শিক্ষার্থী। তবে, ইংরেজি শব্দ চিহ্নিত করতে পেরেছেন ২৪ দশমিক ১০ শতাংশ ছেলে এবং মেয়ে শিক্ষার্থীদের ২৩ দশমিক ৬৬ শতাংশ ছেলে শিক্ষার্থী।

গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফল বলছে, অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৬১ দশমিক ৯৫ শতাংশ ছেলে এবং ৫৩ দশমিক ১৪ শতাংশ মেয়ে শিক্ষার্থী বাংলায় গল্প পড়তে পারেননি। আর বাংলা বর্ণ পড়তে পারেননি ১০ দশমিক ২৮ শতাংশ ছেলে এবং ৮ দশমিক ৭১ শতাংশ মেয়ে শিক্ষার্থী। তবে, অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে বাংলায় শব্দ চিহ্নিত করতে পেরেছেন ২১ দশমিক ০৯ শতাংশ ছেলে এবং ১৫ দশমিক ১১ শতাংশ মেয়ে শিক্ষার্থী।

সংলাপে সভাপতির বক্তব্যে রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, `আমাদের এখন শিক্ষার গুণগত মান বাড়াতে কাজ করতে হবে। শুধুমাত্র আয় বাড়লে শিক্ষার উন্নতি হবে, তা নয়। তাহলে তো সিলেট সবচেয়ে এগিয়ে থাকার কথা। কিন্তু, তা হয়নি। এখানে গবেষণা ফলাফল তুলে ধরা হয়েছে। আমার আহবান, আগামীতে যেন গবেষণার পাশাপাশি সীমাবদ্ধতাগুলো তুলে ধরা হয়।`

তিনি বলেন, `করোনাকালে আমাদের যে শিখন ঘাটতি তা পূরণ করতে কাজ করতে হবে। আমাদের শিক্ষকদের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে হবে। শিক্ষার গুণগত মান বাড়াতে আমাদের দিনের পড়া দিনেই শ্রেণিকক্ষে শেষ করতে হবে; নতুন শিক্ষাক্রমে তা করা হয়নি। পাশাপাশি, শিক্ষায় সবার সমান অংশগ্রহণ ও সুযোগ নিশ্চিতে বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে। এটি শুধুমাত্র শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে হয়েছে, অন্য কোনো ক্ষেত্রে হয়নি।`

ওয়েভ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মহসিন আলী বলেন, `আমাদের শিক্ষায় অংশগ্রহণ বেড়েছে, এখন আমাদের শিক্ষার গুণগত মান বাড়াতে কাজ করতে হবে। ওয়েব ফাউন্ডেশন শুরু থেকেই বিভিন্ন ধরনের কাজ করছে এবং এর অন্যতম একটি হলো শিক্ষা। আমরা সিভিতে লেখা দেখি স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি দেখি কিন্তু, তিনি বাংলায় একটি বাক্য শুদ্ধ করে লিখতে পারেন না। আমাদের যুবদের দক্ষতা এবং যোগ্যতা বাড়াতে হবে এবং সেজন্য কাজ করতে হবে।`

সংলাপে বিআইডিএসের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. এস এম জুলফিকার আলী বলেন, `বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক উন্নতি হলে আমাদের শিক্ষার মানে পার্থক্য রয়ে গেছে। আমাদের ২০২৬ সালের লক্ষ্যমাত্রা এবং ২০৪১ সালের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এখনই গুণগত শিক্ষা নিশ্চিতে কাজ করতে হবে। সেজন্য যুবদের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে। সেজন্য এখন আমাদের অংশগ্রহণ যা আছে তা ধরে রেখে মান অব্যাহত রাখতে কাজ করতে হবে। তা না হলে শুধু দেশে না দক্ষিণ এশিয়ায়ও আমরা পিছিয়ে যাব।`

স্ট্রিট চাইল্ড ইউকে’র প্রোগ্রাম ম্যানজার ইমতিয়াজ হৃদয় বলেন, `আমরা শুধুমাত্র বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের তথ্য দেখে ভীত হই; কিন্তু, কভিডসহ চলমান চ্যালেঞ্জে একই অবস্থা আফগানিস্তান, মিয়ানমার ও নেপালেও। আমাদের শিক্ষার মান বাড়াতে শুধু আলোচনা করলেই হবে না বরং আমাদের পলিসি লেভেল এবং অ্যাডভোকেসি লেভেলে তা গ্রহণ করতে হবে।`

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: