facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৮ নভেম্বর বৃহস্পতিবার, ২০২৪

Walton

মাহির মন খারাপ হলেও ‘সেই লেভেলের না’


০৯ জানুয়ারি ২০২৪ মঙ্গলবার, ১১:৫৪  এএম

ডেস্ক রিপোর্ট

শেয়ার বিজনেস24.কম


মাহির মন খারাপ হলেও ‘সেই লেভেলের না’

‘চৌধুরী সাহেবকে কাঁদানোর’ হুঁশিয়ারি দিয়ে সংসদ নির্বাচনের মাঠে নামা চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি শেষ পর্যন্ত নিজের ঝুলিতে তুলতে পেরেছেন ৯ হাজার ৯টি ভোট। তাঁর এই ভোটের সংখ্যা রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনে বাতিল হওয়া ভোটের চেয়ে কিছুটা বেশি। তবে শুধু তানোর উপজেলায় তিনি বাতিল হওয়া ভোটের চেয়েও কম ভোট পেয়েছেন। তানোরের মুণ্ডুমালা উত্তরপাড়া গ্রাম মাহির জন্মস্থান। তাঁর বাড়িও রয়েছে সেখানে।

জেলার ছয়টি আসনের মধ্যে রাজশাহী-১ আসনে প্রার্থীর সংখ্যা ছিল সবচেয়ে বেশি। মোট ১১ জন প্রার্থী এই নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে আওয়ামী লীগ-মনোনীত প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধুরী নৌকা প্রতীকে ১ লাখ ৩ হাজার ৫৯২ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন, যাঁকে ভোটের প্রচারণায় ‘চৌধুরী সাহেব’ সম্বোধন করে বক্তব্য দিয়ে আসছিলেন মাহিয়া মাহি। ফলাফলে দ্বিতীয় স্থানে থাকা স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. গোলাম রাব্বানী কাঁচি প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ৯২ হাজার ৪১৯টি। তাঁর পরে ৯ হাজার ৯ ভোট পেয়ে তৃতীয় স্থান অর্জন করেছেন ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহিয়া মাহি (শারমিন আক্তার নিপা)।

তানোর ও গোদাগাড়ী উপজেলায় প্রাপ্ত মোট ভোটের হিসাবে দেখা যাচ্ছে, রাজশাহী-১ আসনে মোট ১৫৮টি ভোটকেন্দ্র ছিল। মাহিয়া মাহি প্রতিটি কেন্দ্রেই ভোট পেয়েছেন। তিনি তানোরের ৬১টি কেন্দ্রের মধ্যে ৬০টি কেন্দ্রে ‘ডাবল ডিজিটে’ ভোট পেয়েছেন। তারপরও তাঁর মোট ভোট হচ্ছে ২ হাজার ৮২টি। এই উপজেলায় বাতিল ভোটের সংখ্যা হচ্ছে ২ হাজার ৯৭২টি। তানোর ও গোদাগাড়ী দুই উপজেলায় মোট বাতিল ভোটের সংখ্যা হচ্ছে ৭ হাজার ৪৯৭।

নির্বাচনে এমন ফলের পর ‘মন কিছুটা খারাপ’ বলে জানিয়েছেন মাহিয়া মাহি। নির্বাচনকে ‘গেম’ উল্লেখ করে গতকাল সোমবার রাতে নিজের ফেসবুক পেজে ভিডিও বক্তব্যে মাহি বলেন, ‘সবাই নিশ্চয় ভাবছেন আমার প্রচণ্ড মন খারাপ। কিছুটা তো মন খারাপ হবেই। কারণ, আমি হেরে গেছি গেমে। নির্বাচন একটা গেম। সেই গেমে হেরে গেছি। মন খারাপ কিছুটা, কিন্তু সেই লেভেলের না।’

নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে উল্লেখ করে মাহি বলেন, ‘নির্বাচন অনেক সুষ্ঠু হয়েছে। যে যাঁর যোগ্যতা অনুযায়ী ভোট পেয়েছেন। যদিও আমি অনেক কম ভোট পেয়েছি। এটা ব্যাপার না। আমি নতুন অবস্থায় একটা মেয়ে মানুষ হিসেবে যে ভোট করেছি, এটা সবার অ্যাপ্রিশিয়েট করা দরকার। প্রশাসন অনেক তৎপর ছিল। ভোটের দিনও পরিবেশ ভালো ছিল। প্রশাসন না থাকলে যাঁরা প্রার্থী ছিলেন, তাঁরা মনে হয় মারামারি করে একেকজনের মাথা ফাটিয়ে ফেলত।’

নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরীর উদ্দেশে তিনি বলেন, এই রাস্তাঘাট, বরেন্দ্রভূমির পানির সমস্যা, এই দুটি বিষয়ে দৃষ্টি দেবেন নতুন এমপি হয়েছেন যিনি। গত ১৫ বছরে যেসব উন্নয়নমূলক কাজ করেননি, সেসব যেন এই পাঁচ বছরে তিনি করেন। তাঁর যে জনপ্রিয়তা শূন্যে নেমে এসেছিল গত ১৫ বছরে, সেটা যাতে তিনি কাটিয়ে ওঠেন এই পাঁচ বছরে।

মাহি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘তা নাহলে কিন্তু আমি মাঠে আছি। আগামী পাঁচ বছর পর আবারও নির্বাচনে দেখা হবে আপনার সঙ্গে। ওনার জনপ্রিয়তা জিরো। উনি যতটুকু ভোট পেয়েছেন, এটা তো নৌকার কারণে।’

নির্বাচনে অন্য প্রার্থীদের মধ্যে আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক উপকমিটির সদস্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহনেওয়াজ আয়েশা আখতার জাহান বেলুন প্রতীকে পেয়েছেন ২ হাজার ৭১৮ ভোট। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের শামসুজ্জামান নোঙর প্রতীকে ১ হাজার ৯১১ ভোট, জাতীয় পার্টির মো. শামসুদ্দীন ৯৩৮ ভোট, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের (বিএনএফ) মো. আল-সাআদ টেলিভিশন প্রতীকে ৬০৩ ভোট, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের মো. বশির আহমেদ ছড়ি প্রতীকে ৩৩৫ ভোট, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির নূরুন্নেসা আম প্রতীকে ২৯৬ ভোট, তৃণমূল বিএনপির মো. জামাল খান দুদু সোনালী আঁশ প্রতীকে ২৭৩ ভোট এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আখতারুজ্জামান ঈগল প্রতীকে ২০২ ভোট পেয়েছেন। এই আটজনের সবারই প্রাপ্ত ভোট আসনের বাতিল ভোটের চেয়ে কম।

মাহিয়া মাহি বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। গত ১৮ ডিসেম্বর নির্বাচনী প্রতীক পাওয়ার পর থেকে প্রচারণায় বক্তব্যে টানা তিনবারের সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরীকে কখনো ‘জমিদার সাহেব’, কখনো ‘চৌধুরী সাহেব’ সম্বোধন করে বক্তব্য দিয়ে আসছিলেন।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: