০৪ জুন ২০২৩ রবিবার, ১১:৫২ এএম
ধর্ম ডেস্ক
শেয়ার বিজনেস24.কম
ইসলাম ধর্মের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে একটি হলো নামাজ। আল্লাহর প্রতি ইমান আনার পর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও অবশ্য পালনীয় ইবাদত হলো নামাজ। প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর ওপর নামাজ আদায় করা ফরজ।
নামাজই একমাত্র ইবাদত যার মাধ্যমে মুসলমান নর-নারী সব মন্দ ও অশ্লীল কাজ থেকে বিরত থেকে আল্লাহর কাছে নিজেকে সমর্পিত করে। একমাত্র নামাজই মানুষকে সব ধরনের অন্যায় ও পাপ থেকে দূরে থাকতে সাহায্য করে।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘আমিই আল্লাহ, আমি ছাড়া আর কোনো মাবুদ নেই। অতএব তুমি শুধু আমারই ইবাদত কর এবং আমার স্মরণের জন্য সালাত প্রতিষ্ঠা কর।’ (সুরা ত্বা হা, আয়াত ১৪)।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ রব্বুল আলামিন ৮২ বার নামাজের কথা বলেছেন। আল্লাহ বলেন, ‘আর তোমরা নামাজ প্রতিষ্ঠা কর, জাকাত প্রদান কর এবং রুকুকারীদের সঙ্গে রুকু কর।’ (সুরা বাকারা, আয়াত ৪৩)।
আল্লাহ আরও বলেন, হে নবী, আমার বান্দাদের মধ্যে যারা মুমিন, তাদের বলুন নামাজ কায়েম করতে। (সুরা ইবরাহিম, আয়াত ৩১)।
জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল (সা.) বলেছেন, মুসলিম ও কাফেরদের মধ্যে পার্থক্যের মাপকাঠি হলো নামাজ। অর্থাৎ নামাজ ত্যাগ করলে তার কুফরিতে লিপ্ত হওয়ার আর বিলম্ব থাকে না। নামাজ হলো ইমানের জন্য প্রাচীরস্বরূপ। (সহিহ মুসলিম : ২৫৬)।
একজন মুমিন যখন অন্তরে আল্লাহ অভিমুখী হন এবং আল্লাহভীতিকে শক্তিশালী করার জন্য নিয়ত করেন তখন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা ছাড়া আর বিকল্প কিছুই থাকে না। সালাত এমন একটি কাজ যা নিয়মিতভাবে কয়েক ঘণ্টা পরপর ফিরে আসে যাতে মানুষ আল্লাহকে ভুলে না যায়। আল্লাহ বলেন, ‘আমি তোমাদের সঙ্গেই আছি, যদি তোমরা সালাত কায়েম কর, জাকাত দাও, আমার রসুলদের প্রতি ইমান আন ও তাঁদের সম্মান কর এবং আল্লাহকে উত্তম ঋণ প্রদান কর।’ (সুরা মায়েদা, আয়াত ১২)।
এ আয়াতে পরিষ্কারভাবে আল্লাহ বলেছেন, তিনি সালাত আদায়কারীদের সঙ্গে আছেন। আল্লাহ রব্বুল আলামিন পরিবারের সবাইকে সালাত আদায়ে অভ্যস্ত করার জন্য তাগিদও দিয়েছেন। তোমার পরিবারবর্গকে সালাতের আদেশ দাও এবং তাঁর ওপর অবিচল থাক।
(সুরা ত্বা হা, আয়াত ১৩২)। আমরা প্রতিনিয়ত কত আপদ-বিপদ ও সমস্যার সম্মুখীন হই। তার শেষ নেই। সে জন্য আল্লাহ বলেন, হে ইমানদারগণ, তোমরা ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য চাও। নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে রয়েছেন। (সুরা বাকারা, আয়াত ১৫৩)।
সালাতের প্রতিদানের ব্যাপারে আল্লাহ বলেন, নিশ্চয়ই যারা ইমান আনে, সৎ কাজ করে, সালাত কায়েম করে এবং জাকাত আদায় করে তাদের প্রতিদান তাদের রবের কাছে প্রস্তুত রয়েছে, আর তাদের কোনো ভয় নেই এবং কোনো চিন্তাও নেই। (সুরা বাকারা, আয়াত ২৭৭)। সুবহানাল্লাহ।
রসুল (সা.) বলেছেন, কিয়ামতের দিন বিচার দিবসে সর্বপ্রথম নামাজের হিসাব নেওয়া হবে। যদি তার সালাত আদায় সম্পূর্ণ থাকে তবে সে মুক্তি পাবে এবং সফলকাম হবে। আর যদি এ বিষয়ে ঠিক না থাকে তবে সে হবে ব্যর্থ ও ধ্বংসপ্রাপ্ত। (তিরমিজি শরিফ)।
সালাত একজন মুমিন বান্দাকে সব পাপ ও অশ্লীল কাজ থেকে বিরত রাখে। আল্লাহ বলেন, নিশ্চয়ই সালাত মানুষকে অশ্লীল ও গর্হিত কাজ থেকে দূরে রাখে। (সুরা আনকাবুত, আয়াত ৪৫)।
মানুষকে খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখার জন্য সালাত যথেষ্ট ভূমিকা রাখে। নিয়মিতভাবে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করলে শরীর ও মন পবিত্র থাকে। তখন ভালো কাজ করার দিকে মানুষের মন আকৃষ্ট হয় এবং খারাপ কাজের প্রতি ঘৃণার সৃষ্টি হয়। আল্লাহ রব্বুল আলামিন আমাদের সবাইকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করার তৌফিক দান করুন। আমাদের সবাইকে খারাপ ও অশ্লীল কাজ থেকে বিরত রাখুন।
লেখক: মো. আমিনুল ইসলাম, অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংকার
শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।