২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ বুধবার, ১১:৩৯ পিএম
ডেস্ক রিপোর্ট
শেয়ার বিজনেস24.কম
![]() |
মামুন অর রশিদের ভাষ্যমতে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তিনি আখানগর ইউনিয়নের কালীবাড়ি বাজারের একটি চায়ের দোকানে বসেছিলেন। সেখান থেকে বিএনপি নেতা জোবায়দুল হক চৌধুরী তাঁকে ডেকে নেন এবং কিছুক্ষণ পর তার সহযোগীদের নিয়ে হঠাৎই হামলা চালান। পরে মামুনকে ধরে একটি চালকলে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে চলে প্রায় ৩০ মিনিট ধরে বেধড়ক মারধর। হামলাকারীরা তাঁর গলা চেপে ধরে শ্বাসরোধের চেষ্টা করে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
মামুন জানান, গত ৫ আগস্টের পর থেকে এলাকায় চাঁদাবাজি ও জমি দখলের অভিযোগ উঠে আসছিল জোবায়দুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে। এই বিষয়টি তিনি ফেসবুকে তুলে ধরেন। এরপর থেকেই তাঁকে ফোনে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। অবশেষে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সুযোগ পেয়ে তাকে পিটিয়ে ‘শাস্তি’ দেওয়া হয়।
পরে স্থানীয়রা মামুনকে উদ্ধার করে ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসকরা জানান, তাঁর শরীরের বিভিন্ন অংশে মারধরের চিহ্ন রয়েছে, বিশেষ করে গলায় আঘাতের চিহ্ন স্পষ্ট।
এ ঘটনায় মামুন অর রশিদের পক্ষ থেকে রুহিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় জোবায়দুলসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। ঘটনার পর মশিউর রহমান নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
হামলার বিষয়ে জোবায়দুল হক চৌধুরীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “সে (মামুন) আমাকে নিয়ে ফেসবুকে লেখালেখি করছিল, তাই কয়েকবার দেখা করতে বলেছিলাম। পাত্তা দেয়নি। কালকে বাজারে পেলাম, কিন্তু আমি মারিনি। কে মেরেছে জানি না, তবে তার মাইরটা কম হয়েছে!”
এই ঘটনায় জেলা বিএনপি দ্রুত পদক্ষেপ নেয়। বুধবার দুপুরে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সাল আমিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন ও সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে জোবায়দুল হক চৌধুরীকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বিএনপি নেতা মির্জা ফয়সাল আমিন বলেন, “যারা চাঁদাবাজি, দখল, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত, তাদের জন্য দলে কোনো জায়গা নেই। এসব অনৈতিক কাজের বিরুদ্ধে দল জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে।”
এই ঘটনার প্রতিবাদে ঠাকুরগাঁওয়ের সাংবাদিকরা তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালের সামনে এক ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। তাঁরা অবিলম্বে হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
রুহিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম নাজমুল কাদের বলেন, “সাংবাদিক মামুনের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। ইতোমধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, এবং মূল অভিযুক্তসহ অন্যদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।”
এই হামলার ঘটনায় ঠাকুরগাঁওয়ের গণমাধ্যমকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে দ্রুতই বিচারের আওতায় আনা হবে।
সাংবাদিকের কণ্ঠরোধের চেষ্টা কি সফল হবে, নাকি ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে? এখন সেটাই দেখার বিষয়!
শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।