০৩ ডিসেম্বর ২০২৪ মঙ্গলবার, ১০:৪১ এএম
ডেস্ক রিপোর্ট
শেয়ার বিজনেস24.কম
প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ২০২১ সালে গ্রেপ্তার হওয়া অভিনেত্রী রোমানা ইসলাম স্বর্ণা এবার অভিযোগ করলেন, তাকে সুপরিকল্পিতভাবে ফাঁসানো হয়েছে। সাবেক স্বামী কামরুল ইসলাম জুয়েল সে সময় পুলিশকে ব্যবহার করে তাকে কারাগারে পাঠিয়েছিলেন। সে সময়কার ডিবি প্রধান হারুন রশীদ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও ফজলে রাব্বীর মদদেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সোমবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ক্র্যাব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এমনটাই দাবি করেন রোমানা স্বর্ণা। আর অভিনেত্রী কারাভোগের প্রতিবাদেই এই সংবাদ সম্মেলন।
এ সময় স্বর্ণা জানান, সাবেক স্বামী তার নামে মামলাসহ ২৮টি বিয়ের অপপ্রচার চালিয়েছেন, এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন। আর এসব অভিযোগের প্রমাণ আজও দিতে পারেননি বলে দবি করেছেন এই অভিনেত্রী।
সংবাদ সম্মেলনে অভিনেত্রী বলেন, ‘এক বন্ধুর মাধ্যমে জুয়েলের সঙ্গে পরিচয়ের পর ২০১৯ সালে বিয়ে হয়। আমার ক্যারিয়ারে যখন সুসময় তখন বিয়ে করি জুয়েলকে। তবে বিয়ের পরই পারিবারিক দ্বন্দ্ব এক পর্যায়ে গড়ায় মামলায়। আগের বউয়ের কথা গোপন রেখে বিয়ে করে। এসব জানার পর বৈবাহিক জীবনে নেমে আসে অশান্তি ও নির্যাতন। একটা পর্যায়ে তার সঙ্গে ঘর না করার সিদ্ধান্ত নেই। নির্যাতনের জন্য কয়েকবার সাধারণ ডায়েরি করেও লাভ হয়নি। বিয়ের আগে বলেছিল, অভিনয়ে অসুবিধা নেই। কিন্তু বিয়ের পর আমাকে অভিনয় করতে দেয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিয়ের পর মায়ের বাসায় থাকতাম। একবার আমার প্রথম ঘরের সন্তানকে শুটিং থেকে অপহরণ করে। আওয়ামী লীগ নেতাদের মাধ্যমে বিভিন্ন সময় হুমকি দিত। দুইবার তাকে ডির্ভোস দিয়েছিলাম। শেষ পর্যন্ত আমাকে ভিত্তিহীন মামলা দিয়ে হয়রানি করে। ডির্ভোস তুলে নিলে মামলা তুলে নেবে এমন শর্তও দেওয়া হয়।’
এ সময় স্বর্ণা আরও অভিযোগ করে বলেন, ‘সাবেক ডিবি প্রধান হারুন জুয়েলের অপকর্ম করতে সহযোগিতা করত। তাই উপায় না থাকায় একটা পর্যায়ে সমঝোতা করি। মামলা তুলে নেই। প্রথম ডিভোর্সের পর কিছুদিন ভালো গেলেও দ্বিতীয়বার ডির্ভোস দিলে আমাকে আটকানোর জন্য মিথ্যা মামলা দেয়। আমি যেন অভিনয় করতে না পারি, কাউকে মুখ দেখাতে না পারি। সেজন্য আমাকে গ্রেপ্তার করানোর জন্য ডিবি হারুনকে মোটা অংকের অর্থ দিয়েছিল বলে জানতে পারি। দেড় মাস জেলে থাকার পর, ডির্ভোস দিতে পারব না- সেই শর্তে জামিন করায়। পরিবারের কথা চিন্তা করে এই শর্তে রাজি হই। ডিভোর্স চলাকালীন ভয় ভীতি দেখিয়ে নতুন করে কাবিন ছাড়াই বাসায় এসে থাকত জুয়েল। দেড় বছর গৃহবন্দি করে রাখে আর সন্তান পরিবারকে মেরে ফেলার হুমকি দিত। পরিবারের কথা ভেবে এতদিন সহ্য করেছি। জেল থেকে ফেরার পর জানতে পারি জুয়েল সৌদি গেছে। সেই সুযোগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা আবেদন করে আমি সেখানে চলে যাই। তার আগে, পড়াশোনার জন্য ছেলেকে পাঠাই। যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছি জেনে জুয়েল নানাভাবে আমাকে হুমকি দেয়। দেশে আমার পরিবার থাকায় তাদের নানাভাবে হুমকি দেয়। যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েও রেহাই পাইনি।’
স্বামীর ক্ষমতার বিষয়ে এই অভিনেত্রী বলেন, ‘সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জমান খান, প্রয়াত ফজলে রাব্বী মিয়া, ডিবি হারুন- জুয়েলকে সহযোগিতা করত। আসাদুজ্জামান খান কামাল প্রতিদিন কোটি কোটি টাকা চাঁদা তুলত। সেই টাকা জুয়েলের মাধ্যমে সৌদি পাচার করত। জুয়েল মূলত হুন্ডির ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। হারুনের টাকাও জুয়েলের মাধ্যমে বিদেশে পাচার হতো। জুয়েল আমার দ্বিতীয় স্বামী। তবে আমার নামে মামলাসহ ২৮টি বিয়ে করার কথা রটানো হয়েছিল, যেগুলো ভিত্তিহীন। এই বিয়েগুলোর প্রমাণ আজও দিতে পারেনি। আমাকে যেভাবে মিডিয়ার সামনে উপস্থাপন করা হয়েছিল তারও প্রমাণ দিতে পারেনি।’
রোমানা স্বর্ণা আরও বলেন, ‘নানা হুমকি দিত, তাই এতদিন কিছু বলতে পারিনি। সরকার পতনের পর দেশে এসেও কিছু দিন অসুস্থ থাকায় এই বিষয়ে কথা বলিনি। এখনো কোনো মামলা করিনি। তবে শিগগিরই এই বিষয়ে সবাই জানতে পারবেন।’
শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।