২০ মার্চ ২০২৩ সোমবার, ০৯:৪৭ এএম
স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
শেয়ার বিজনেস24.কম
পুঁজিবাজারে এসে চার কারণে ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির ভালো করার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এর মধ্যে প্রথমেই যে কারণ তা হলো- অন্য বীমা কোম্পানি যেখানে সীমার অতিরিক্ত ব্যয় করে, সেখানে ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ ব্যয় করছে সীমার অনেক কম। যা ব্যবস্থাপনার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে। দ্বিতীয়ত, প্রতিবছরই বাড়ছে প্রিমিয়াম আয়। যা কোম্পানিটির প্রতি গ্রাহকদের আস্থা নিশ্চিত করে। তৃতীয় কারণ প্রিমিয়াম আয়ের সঙ্গে বাড়ছে সম্পদের পরিমাণ। যা ভালো কোম্পানি হিসেবে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করে। অন্যদিকে চতুর্থ যে কারণে গ্রাহকরা এ কোম্পানির প্রতি আস্থা রাখছেন তা হলো- গ্রাহকদের মৃত্যুদাবি ১৫ দিনের মধ্যে পরিশোধ করছে ট্রাস্ট লাইফ। যা বীমা কোম্পানির সবচেয়ে বড় সুনামের জায়গা।
প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) অনুমোদন পেয়ে পুঁজিবাজার থেকে অর্থ উত্তোলনের প্রক্রিয়ায় রয়েছে ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড। আগামী ৩ এপ্রিল থেকে কোম্পানিটির আইপিও আবেদন জমা নেওয়া শুরু হবে। যা চলবে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত। বিমা খাতের কোম্পানিটি আইপিওর মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে ১৬ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে।
ট্রাস্ট ইসলামী লাইফের সর্বশেষ হিসাব সমাপনী প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০২২ সালে ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ প্রিমিয়াম সংগ্রহ করেছে মোট ৩৫ কোটি ৩২ লাখ টাকা। এর মধ্যে প্রথম বর্ষ বা নতুন প্রিমিয়াম ১৮ কোটি ২৬ লাখ টাকা এবং দ্বিতীয় ও তদূর্ধ্ব বর্ষের নবায়ন প্রিমিয়াম ১৭ কোটি ৬ লাখ টাকা। আর ২০২১ সালে ট্রাস্ট ইসলামী লাইফের প্রিমিয়াম সংগ্রহ ছিল মোট ৩০ কোটি ২ লাখ টাকা।
অর্থাৎ ২০২২ সালে ট্রাস্ট লাইফের প্রিমিয়াম সংগ্রহ বেড়েছে মোট ৫ কোটি ২৯ লাখ টাকা বা ১৭.৬৩ শতাংশ।
অন্যদিকে ২০২২ সালে ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ ব্যবস্থাপনা খাতে ব্যয় করেছে মোট ১৯ কোটি ১৭ লাখ টাকা। এ সময় কোম্পানিটির ব্যয়ের অনুমোদন ছিল ২০ কোটি ৬২ লাখ টাকা। অর্থাৎ কোম্পানিটি অনুমোদিত ব্যয়সীমার চেয়ে ১ কোটি ৪৬ লাখ টাকা বা ৭.০৬ শতাংশ কম খরচ করেছে।
২০২২ সালে চতুর্থ প্রজন্মের লাইফ বীমা কোম্পানি ট্রাস্ট ইসলামী লাইফের লাইফ ফান্ড বেড়েছে ৩ কোটি ২৩ লাখ টাকা বা ২৬.২৪ শতাংশ। বর্তমানে কোম্পানিটির মোট লাইফ ফান্ডের পরিমাণ ১৫ কোটি ৫৪ লাখ টাকা।
এ ছাড়াও ট্রাস্ট ইসলামী লাইফের সম্পদ বেড়েছে ১২ শতাংশ। একই সঙ্গে বিনিয়োগ বেড়েছে সাড়ে ৪ কোটি টাকা। বর্তমানে ট্রাস্ট লাইফের বিনিয়োগের পরিমাণ মোট ২৮ কোটি টাকা।
আনুষ্ঠানিকভাবে ২০১৪ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি যাত্রা শুরুর পর এখন পর্যন্ত ২০ কোটি টাকার বেশি বিভিন্ন ধরনের বীমা দাবি পরিশোধ করেছে ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স।
ট্রাস্ট ইসলামী লাইফের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দীন বলেন, শুরু থেকেই ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ বীমা আইন- ২০১০ সহ প্রযোজ্য অন্য আইনকানুন এবং বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের নিয়ম-শৃঙ্খরা পরিপালন করে আসছে।
কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের নির্দেশনায় সুপরিকল্পিতভাবে এগিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, গ্রাহকদের অকৃত্তিম ভালোবাসা এবং কোম্পানির পরিচালক-শেয়ারহোল্ডারসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা খুব স্বল্প সময়েই পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে যাচ্ছি।
ট্রাস্ট ইসলামী লাইফে গ্রাহকসেবাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা তুলে ধরে কোম্পানির এই মুখ্য নির্বাহী বলেন, শুরু থেকেই এই ধারাবাহিকতায় এসবি ও ম্যাচ্যুরিটি প্রতিদিনের দাবি প্রতিদিন পরিশোধসহ ১৫ দিনের মধ্যে মৃত্যুদাবি পরিশোধ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
গ্রাহকসেবায় অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ আরো এগিয়ে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন ট্রাস্ট লাইফের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দীন।
চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ৮৫৩তম সভায় কোম্পানিটির আইপিও অনুমোদন দেয়।
১০ টাকা অভিহিত মূল্যে ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ পুঁজিবাজার থেকে ১ কোটি ৬০ লাখ শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে ১৬ কোটি টাকা উত্তোলন করবে।
উত্তোলিত এই টাকা দিয়ে সরকারি ট্রেজারি বন্ড, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ, এফডিআর বিনিয়োগ এবং ইস্যু ব্যবস্থাপনা খরচ খাতে ব্যয় করা হবে। কোম্পানিটির ৩০ জুন, ২০২২ তারিখে মোট উদ্বৃত্ত ৭৩ লাখ ২০ হাজার টাকা।
কোম্পানিটির ইস্যু ম্যানেজারের দায়িত্বে রয়েছে বিএমএসএল ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির আগে কোম্পানিটি কোনো প্রকার লভ্যাংশ অনুমোদন, ঘোষণা বা বিতরণ করতে পারবে না।
শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।