
দেশের বাজারে আবারও ইতিহাস গড়লো সোনার দাম। নতুন করে ভরিপ্রতি দাম বেড়ে ৩ হাজার ৩৩ টাকা বাড়ায়, ২২ ক্যারেটের হলমার্ক সোনার প্রতি ভরি এখন ১ লাখ ৬৫ হাজার ২০৯ টাকা—যা বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) বুধবার রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে। নতুন দাম বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) থেকে কার্যকর হবে বলে জানানো হয়েছে।
বাজুস জানায়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি সোনার (পিওর গোল্ড) মূল্যবৃদ্ধির কারণে এ দাম সমন্বয় করা হয়েছে। অথচ মাত্র কয়েকদিন আগে, গত রোববার ভরিপ্রতি দাম ১ হাজার ৩৮ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ৬২ হাজার ১৭৬ টাকায় নামানো হয়েছিল। এর আগে ১২ এপ্রিল সর্বোচ্চ দাম ছিল ১ লাখ ৬৩ হাজার ২১৪ টাকা।
নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি ভরি ২১ ক্যারেটের সোনা বিক্রি হবে ১ লাখ ৫৭ হাজার ৬৯৭ টাকায়, ১৮ ক্যারেটের সোনা ১ লাখ ৩৫ হাজার ১৭৪ টাকায় এবং সনাতন পদ্ধতির সোনা ১ লাখ ১১ হাজার ৬৬০ টাকায়। ফলে ২২ ক্যারেট সোনায় ভরিপ্রতি ৩ হাজার ৩৩ টাকা, ২১ ক্যারেটে ২ হাজার ৮৯২ টাকা, ১৮ ক্যারেটে ২ হাজার ৪৮৪ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতিতে ২ হাজার ১২৩ টাকা দাম বেড়েছে।
বিশ্ববাজারের অস্থিরতা এর পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপের কারণে বৈশ্বিক বাণিজ্যে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। ফলে চলতি সপ্তাহে বিশ্ববাজারে সোনার দাম প্রথমবারের মতো প্রতি আউন্স ৩ হাজার ৩০০ ডলার ছাড়িয়ে যায়। আজ বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স সোনা সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৩১৬ ডলারে উঠে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে সোনার দাম বাড়ানোর মূল কারণ বিশ্ববাজারে বড় উল্লম্ফন। যদিও জুয়েলার্স সমিতি স্থানীয় বাজারে তেজাবি সোনার মূল্যবৃদ্ধির কথা বলছে, স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা জানান, মূল চালিকা শক্তি হলো আন্তর্জাতিক বাজারের চাপ।
মূল্যবৃদ্ধির কারণে দেশের জুয়েলারি ব্যবসা পড়েছে মারাত্মক ধাক্কায়। বাজুসের সহসভাপতি মাসুদুর রহমান বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নীতির কারণে বিশ্ববাজারে অস্থিরতা বাড়ছে, যার সরাসরি প্রভাব পড়ছে দেশের সোনার বাজারে। বর্তমানে স্বর্ণের বিক্রি দুই মাসের ব্যবধানে প্রায় ৭০ শতাংশ কমে গেছে। ক্রেতারাও বাধ্য না হলে সোনার দোকানে যাচ্ছেন না।
ভবিষ্যতে সোনার ভরি দুই লাখ টাকা ছাড়িয়ে যাবে কিনা—এমন প্রশ্নের জবাবে মাসুদুর রহমান বলেন, "এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না, তবে আমাদের প্রত্যাশা, বৈশ্বিক বাজারের অস্থিরতা শিগগির কেটে যাবে।"
শেয়ার বিজনেস24.কম