নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রওজা জিয়ারত প্রত্যেক মুমিনের স্বপ্ন এবং একান্ত আকাঙ্খার বস্তু। নবীজির রওয়া জিয়ারতের বিশেষ ফজিলতও রয়েছে। এক হাদিসে হজরত ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে আমার ওফাতের পর আমার (রওজা) জিয়ারত করল, সে যেন আমার জীবদ্দশায় আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করল।’

হজের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়েছে। শুরু হয়েছে হজের ফিরতি ফ্লাইট। বিভিন্ন দেশ থেকে হজ করতে আসা লোকজন ফিরে যাচ্ছেন নিজ দেশে। এসব হাজিদের নিজ নিজ ভাষায় ২০ লাখ কপি কোরআন উপহার দিচ্ছে সৌদি আরব। খবর আরব নিউজ।

পবিত্র হজব্রত পালন শেষে দেশে ফিরছেন হাজিরা। অশ্রুসিক্ত নয়নে দেশে ফিরলেও পবিত্র ভূমি মক্কা-মদিনায় পড়ে থাকছে তাঁদের মন। হজ পালনে তাঁদের অর্থ ব্যয়, পরিশ্রম, দীর্ঘ সফর ও মক্কা-মদিনার প্রতি সীমাহীন ভালোবাসার কারণে আল্লাহ তাঁদের খালি হাতে ফেরাবেন না। ঈমান, নিয়ত ও নিষ্ঠার কারণে যাঁদের হজ কবুল হয়েছে, আল্লাহ তাঁদের অসংখ্য পুরস্কারে পুরস্কৃত করবেন।

বিশ্বব্যাপী ২০২০ সালে করোনা ভাইরাস মহামারি ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন বিধিনিষেধ আরোপ করে সৌদি আরব। দেশটিতে প্রবেশে কড়াকড়ি নিয়ম জারি করা হয়। কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে ওই বছর মাত্র ১০ হাজার মানুষকে হজ করার সুযোগ দেয় দেশটি।

সারা বিশ্ব থেকে সৌদি আরবে সমবেত হওয়া ২০ লাখের বেশি মুসলমান হজের মূল আনুষ্ঠানিকতায় অংশ নিতে তাঁবুনগরি মিনা থেকে হাজির হচ্ছেন আরাফাত ময়দানে।

শুরু হয়েছে পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা। রোববার (২৫ জুন, ৭ জিলহজ) রাতে মক্কা থেকে হজযাত্রীরা তাবুর শহর বলে পরিচিত ঐতিহাসিক মিনার উদ্দেশে রওনা হন। এরই মধ্যে তাদের বেশিরভাগ মিনায় পৌঁছে গেছেন। এর মধ্য দিয়ে শুরু হয়ে গেছে এবার পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা।

পবিত্র নগরী মক্কা থেকে মিনায় মুসল্লিদের জড়ো হওয়ার মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে পবিত্র হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা। মঙ্গলবার (২৭ জুন) অনুষ্ঠিত হবে পবিত্র হজ। এদিকে রোববার (২৫ জুন) মক্কা শহর থেকে মিনার উদ্দেশ্যে রওনা করবেন হাজিরা।

বিশ্বের নানা প্রান্তের মুসলমানরা আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে হাজির হয়েছেন মক্কায়। ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক...’ ধ্বনিতে মুখরিত কাবা চত্বর। আগামীকাল রোববার (২৫ জুন) ভোরে মিনার উদ্দেশে যাত্রার মধ্য দিয়ে হজের মূল কার্যক্রম শুরু হবে।

কোরবানি ইসলামের এক অন্যতম নিদর্শন ও গুরুত্বপূর্ণ ওয়াজিব ইবাদত। এই ইবাদতটি শুধু মুসলমান উম্মতের জন্য নয় বরং পূর্ববর্তী উম্মতের মধ্যেও ছিল। কোরবানি শব্দটি আরবি। এর শাব্দিক অর্থ নিকটবর্তী হওয়া, সান্নিধ্য, ঘনিষ্ঠতা, আত্মত্যাগ ইত্যাদি।

ইসলামের দৃষ্টিতে জিলহজ অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ মাস। রসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘জিলহজের প্রথম ১০ দিনের আমল আল্লাহর কাছে যতটা প্রিয় তা অন্য কোনো সময়ে নয়। সাহাবিরা আরজ করেন, আল্লাহর পথের জিহাদ থেকেও প্রিয়? তিনি বললেন, হ্যাঁ।

হজের সময় মক্কার মসজিদুল হারাম ও মদিনার মসজিদে নববীতে ছবি তোলার ক্ষেত্রে কিছু নির্দেশনা জারি করেছে সৌদি আরবের হজ ও ওমরা মন্ত্রণালয়।

মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের গবেষণা সংস্থা আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিদ্যা কেন্দ্র (আইএসি) পবিত্র জিলহজ মাসের প্রথম দিনের ঘোষণা দেওয়া দেশের তালিকা প্রকাশ করেছে।

সৌদি আরবের বাদশার অতিথি হয়ে প্রতি বছর বিভিন্ন দেশের মানুষ হজ করে থাকেন। আর এ বছর দেশটির ব্যবস্থাপনায় হজ পালন করবেন ৯০টি দেশের ১ হাজার ৩০০ অতিথি। শনিবার (১৭ জুন) বাদশাহ সালমান এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করেছেন।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ রব্বুল আলামিন বলেন, ‘আমি জিন ও মানুষকে সৃষ্টি করেছি শুধু আমার ইবাদত করার জন্য।’ (সুরা জারিয়াত, আয়াত ৫৬)। সুতরাং কোরবানি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত।

পবিত্র হজের অন্যতম ওয়াজিব বিধান হলো জামারায় কঙ্কর নিক্ষেপ করা। শয়তানকে উদ্দেশ করে হজযাত্রীরা তিনটি স্থানে কঙ্কর নিক্ষেপ করেন। যদিও এই তিনটি স্থানে শয়তান বিদ্যমান নেই, কিন্তু হজযাত্রীদের কঙ্কর নিক্ষেপণ দেখে শয়তান অপমানে জ্বলতে থাকে।

শ্রেষ্ঠ ও মর্যাদাপূর্ণ নবীগণের অন্যতম হলেন হজরত ইবরাহিম (আ.)। মহাগ্রন্থ আল কোরআনে ২৫টি সুরায় তাঁর নাম এসেছে। তাঁর নাম অনুযায়ী আল কোরআনে সুরা ইবরাহিম নামে একটি সুরা নামকরণ হয়েছে।

কোরবানি ওয়াজিব ইবাদত। কোনও ব্যক্তির কাছে সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণ বা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রৌপ্যের মূল্যের সমপরিমাণ টাকা থাকলে সে ব্যক্তির ওপর কোরবানি করা ওয়াজিব। কোরবানি ওয়াজিব হওয়ার জন্য ওই ব্যক্তিকে অবশ্যই প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থ মস্তিষ্ক, মুকিম হতে হবে। 

হজ ও ওমরার গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো তাওয়াফ করা। তাওয়াফ বলা হয়, কাবা ঘরের চারপাশে ৭ বার প্রদক্ষিণ করা। তাওয়াফ শুরু করতে হয়, হাজরে আসওয়াদ যে কোনায় অবস্থিত, সেখান থেকে তাওয়াফের জায়গার ওপর দিয়ে মসজিদে হারামের দিকে একটা দাগ দিয়ে চিহ্নিত করে দেয়া আছে। 

মানুষ জন্মগতভাবে সামাজিক জীব। সমাজ ছাড়া মানুষ কখনো চলতে পারে না। পৃথিবীর প্রথম মানুষ হজরত আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করে জান্নাতে একা থাকতে দেওয়া হয়নি বরং মা হাওয়া (আ.)-কে সৃষ্টি করে তাঁর সঙ্গে একত্রে বসবাস করতে দেওয়া হয়েছিল।

বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তাড়াহুড়ো করতে নিষেধ করেছেন আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। বরং ধীরস্থিরভাবে যেকোনও কাজ করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘ধৈর্য ও স্থিরতা আল্লাহর পক্ষ থেকে, আর তাড়াহুড়া শয়তানের পক্ষ থেকে।’