
পবিত্র রমজান মাসে ৩০ দিন রোজা রাখেন মুসলমানরা। সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহারসহ সকল ধরনের অপবিত্র কাজ থেকে বিরত থাকেন তারা। ভোররাতে সেহরি খাওয়ার মাধ্যমে রোজা শুরু হয় এবং সন্ধ্যায় ইফতার করার মাধ্যমে তা সম্পন্ন হয়। এই আমলের বিনিময়ে আল্লাহ তায়ালা নিজ হাতে পুরস্কার প্রদান করবেন বলে হাদিসে উল্লেখ আছে।
নিচে রোজার ফজিলত সম্পর্কিত সাতটি গুরুত্বপূর্ণ হাদিস তুলে ধরা হলো—
১. রোজাদারের মুখের সুবাস: নবী (সা.) বলেছেন, ‘রোজাদারের মুখের দুর্গন্ধ আল্লাহর কাছে মৃগনাভির সুগন্ধ অপেক্ষা উৎকৃষ্ট।’ (বুখারি, হাদিস: ১৯০৪; মুসলিম, হাদিস: ১১৫১; তিরমিজি, হাদিস: ৭৬৪)
২. ইফতারের আনন্দ: আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘রোজাদারের জন্য দুটি আনন্দ রয়েছে: এক, যখন সে ইফতার করে এবং দুই, যখন সে তার প্রভুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে।’ (তিরমিজি, হাদিস: ৭৬৬)
৩. রমজানে জাহান্নাম থেকে মুক্তি: জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘প্রতিটি ইফতারের সময় এবং রমজানের প্রতি রাতে কিছু লোককে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেওয়া হয়।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস: ১৬৪৩)
৪. রোজাদারকে ইফতার করানোর সওয়াব: রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে ইফতার করাবে, সে রোজাদারের সমান সওয়াব পাবে, তবে রোজাদারের সওয়াব কিছু কমানো হবে না।’ (তিরমিজি, হাদিস: ৮০৭)
৫. খেজুর দিয়ে ইফতার করা সুন্নত: আনাস (রা.) বলেন, ‘নবী (সা.) নামাজের পূর্বে তাজা খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন। তাজা খেজুর না থাকলে শুকনো খেজুর খেতেন, সেটিও না পেলে কয়েক ঢোক পানি পান করতেন।’ (তিরমিজি, হাদিস: ৬৯৬)
৬. রমজানের রোজার প্রতিদান: আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ঈমান ও পুণ্যের আশায় রমজানের রোজা রাখবে, তার পূর্বের সকল গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।’ (বুখারি, হাদিস: ৩৮)
৭. ইচ্ছাকৃতভাবে রোজা কাজা করার ক্ষতি: রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো বৈধ কারণ বা অসুস্থতা ছাড়া রমজানের একটি রোজা ছেড়ে দেয়, সে যদি আজীবন রোজা রাখে, তবু সেই একদিনের রোজার ক্ষতিপূরণ হবে না।’ (তিরমিজি, হাদিস: ৭২৩)
রমজান শুধু আত্মসংযমের মাস নয়, বরং আত্মশুদ্ধি, ইবাদত-বন্দেগি এবং মহান আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের সুবর্ণ সুযোগ। রোজার ফজিলত ও গুরুত্ব সম্পর্কে এই হাদিসগুলো আমাদের অনুপ্রাণিত করবে এবং সঠিকভাবে রোজা পালনে উদ্বুদ্ধ করবে।
শেয়ার বিজনেস24.কম