
ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের একটি হলো হজ। এটি পালন করতে গিয়ে অনেকেই শুধু ইচ্ছার তীব্রতা নিয়েই রওনা দেন, কিন্তু হজের ফরজ, ওয়াজিব ও সুন্নাত কাজগুলো সম্পর্কে পর্যাপ্ত ধারণা না থাকলে ইবাদতটি পূর্ণাঙ্গভাবে আদায় হয় না। তাই হজে যাওয়ার আগে এসব বিষয় ভালোভাবে জেনে রাখা জরুরি।
হজের তিনটি ফরজ কাজ আছে—প্রথমত, ইহরাম বাঁধা; দ্বিতীয়ত, ৯ জিলহজ দুপুরের পর থেকে ১০ জিলহজ সুবহে সাদিক পর্যন্ত যেকোনো সময় আরাফার ময়দানে অবস্থান; এবং তৃতীয়ত, আরাফা থেকে ফেরার পর কাবা শরিফে তাওয়াফে জিয়ারত বা তাওয়াফে ইফাজা করা। এর যেকোনো একটি ছেড়ে দিলে হজ শুদ্ধ হবে না।
এর পাশাপাশি কিছু গুরুত্বপূর্ণ ওয়াজিব কাজ রয়েছে, যেগুলো পালন না করলে হজ অসম্পূর্ণ থাকে এবং তার জন্য ‘দম’ তথা পশু কোরবানি দিতে হয়। যেমন—মুজদালিফায় রাত যাপন, সাফা-মারওয়ার মধ্য দিয়ে সাতবার চক্কর (সাঈ), মিনায় রমি (শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ), তামাত্তু ও কিরান হজকারীদের কোরবানি করা, মাথা মুণ্ডানো বা চুল ছোট করা এবং হজ শেষে বিদায়ী তাওয়াফ (তাওয়াফে বিদা) করা।
তবে এত কিছুর পাশাপাশি কিছু সুন্নাত কাজও রয়েছে, যেগুলো করলে হজ পূর্ণতা পায় এবং নবীজি (সা.)-এর সুন্নাত অনুসরণে সাওয়াব বেড়ে যায়। এর মধ্যে রয়েছে—ইহরামের সময় গোসল করা, নতুন বা পরিষ্কার চাদর পরা, তালবিয়া বেশি বেশি পড়া, তাওয়াফের সময় ‘ইজতিবা’ ও ‘রমল’ করা, হাজরে আসওয়াদে চুমু বা ইশারা দেওয়া, সাঈর সময় সবুজ বাতির মধ্য দিয়ে জোরে হাঁটা (পুরুষদের জন্য) এবং কোরবানির সময় মিনায় রাত যাপন ইত্যাদি।
এই ফরজ, ওয়াজিব ও সুন্নাত কাজগুলো মনে রেখে হজ পালন করলে তা পরিপূর্ণ হয় এবং তা একজন মুসলমানের জীবনে সত্যিকারের আত্মিক পরিশুদ্ধি এনে দিতে পারে।