১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ বৃহস্পতিবার, ১০:১৯ পিএম
ডেস্ক রিপোর্ট
শেয়ার বিজনেস24.কম
![]() |
বাংলাদেশের একটি দর্শনীয় দ্বীপ হিসেবে মনপুরা দ্বীপ পরিচিতি পেয়েছে। বিশেষত, ২০০৯ সালে মুক্তি পাওয়া চলচ্চিত্র `মনপুরা` এর মাধ্যমে দ্বীপটি ভ্রমণপ্রেমীদের কাছে আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। যদিও দ্বীপটি সরাসরি দেশের মূল ভূখণ্ডের সাথে সংযুক্ত নয়, এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ভ্রমণকারীদের মুগ্ধ করেছে।
মনপুরা নামের উৎস নিয়ে বিভিন্ন মত আছে। একদিকে বলা হয়, দ্বীপের খ্যাতি ও উপকূলীয় খাবারের কারণে `মনপুরা` নামকরণ হয়েছে। অন্যদিকে, মনগাজী শাহবাজপুর জমিদারের নামেও দ্বীপটির নামকরণ হতে পারে বলে ধারণা করা হয়। আরও একটি লোককথা রয়েছে, যেখানে বলা হয়, একসময় এই দ্বীপে বাঘ এবং হাতির মতো হিংস্র প্রাণী ছিল এবং এক ব্যক্তি বাঘের আক্রমণে মারা যাওয়ার পর থেকেই দ্বীপটির নাম `মনপুরা` হয়ে যায়।
মনপুরা দ্বীপ বঙ্গোপসাগরের উত্তরদিকে মেঘনা নদীর মোহনাতে অবস্থিত। ভোলা জেলার মূল ভূখণ্ড থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে এই দ্বীপটি রয়েছে। তিন দিকে মেঘনা নদী এবং এক দিকে বঙ্গোপসাগর দ্বীপটি ঘিরে আছে।
মনপুরা দ্বীপের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ হলো তার মাইলের পর মাইল বিস্তৃত সবুজ ম্যানগ্রোভ বন। এছাড়া, দ্বীপের নদী এবং বনের দৃশ্য পর্যটকদের আকর্ষণ করে। মনপুরা ল্যান্ডিং স্টেশন, আলমনগর কেওড়া বন এবং অতিথি পাখির বিচরণের জন্য পরিচিত চরগুলো মনপুরাকে আরও বিশেষ করে তোলে।
মনপুরা দ্বীপ ভ্রমণের জন্য শীতকালই সবচেয়ে উপযুক্ত। শীতকালীন সময়ে সাইক্লিং ও ক্যাম্পিং করার সুযোগ পাওয়া যায় এবং অতিথি পাখির দর্শনও এই সময়ে সম্ভব। বর্ষাকালে সমুদ্রপথে যাতায়াত কঠিন হয়ে পড়ে, তাই শীতকালেই যাওয়াটা ভালো।
মনপুরা দ্বীপে পৌঁছানোর জন্য ঢাকার সদরঘাট থেকে লঞ্চ বা ট্রলার ব্যবহার করতে হবে। ঢাকার সদরঘাট থেকে লঞ্চ প্রতি দিন বিকেল ৫টায় ছাড়ে এবং পরদিন সকাল সাড়ে ৭টায় মনপুরা পৌঁছায়।
এছাড়া, ভোলা শহর থেকেও মনপুরা যাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। তজুমদ্দিন ঘাট থেকে সি-ট্রাক ৩টায় মনপুরার উদ্দেশ্যে রওনা হয় এবং পরদিন সকাল ১০টায় ফিরতে থাকে।
মনপুরায় থাকার জন্য উপজেলা সরকারি ডাকবাংলো বা পানি উন্নয়ন বোর্ডের ভবনে থাকতে পারেন, তবে আগে থেকেই অনুমতি নিতে হবে। এখানে খাবারের জন্য সেরা কিছু মেনু হলো মহিষের দুধের দই, মেঘনার ইলিশ এবং শীতকালে হাঁসের মাংস ভুনা। এছাড়া, বোয়াল, গলদা চিংড়ি এবং কোরাল মাছও পাওয়া যায়।
মনপুরা দ্বীপে ভূমি ক্ষয়ের প্রবণতা রয়েছে, তাই এ সময় সতর্ক থাকা জরুরি। নদীভ্রমণের সময় লাইফ জ্যাকেট পড়ুন এবং স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন।
মনপুরা দ্বীপের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে শীতকালে এটি একটি আদর্শ গন্তব্য।
শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।