facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৩ ডিসেম্বর সোমবার, ২০২৪

Walton

আরাফাত ময়দান মুখরিত ‘লাব্বাইক’ ধ্বনিতে


২৭ জুন ২০২৩ মঙ্গলবার, ১২:১৭  পিএম

ধর্ম ডেস্ক

শেয়ার বিজনেস24.কম


আরাফাত ময়দান মুখরিত ‘লাব্বাইক’ ধ্বনিতে

সারা বিশ্ব থেকে সৌদি আরবে সমবেত হওয়া ২০ লাখের বেশি মুসলমান হজের মূল আনুষ্ঠানিকতায় অংশ নিতে তাঁবুনগরি মিনা থেকে হাজির হচ্ছেন আরাফাত ময়দানে।

সৃষ্টিকর্তার কাছে হাজিরা দিতে তাদের ‘লাব্বাইক আল্লাহুমা লাব্বাইক’ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠেছে বিদায় হজের স্মৃতি বিজড়িত এই ময়দান।

সেখানে তারা সূর্যাস্ত পর্যন্ত থেকে হজের খুতবা শুনবেন এবং জুমা ও আসরের নামাজ পড়বেন।

এ বছর আরাফাতের ময়দানে হজের খুতবা দেবেন মসজিদে নামিরার খতিব ইউসুফ বিন মুহাম্মদ বিন সাঈদ।

এ খুতবা ২০টির বেশি ভাষায় রেডিও ও টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হবে বিশ্বময়। এই ২০ ভাষার মধ্যে বাংলাও রয়েছে।

কোভিড মহামারীর ভয়াবহতা কাটিয়ে দুবছর পর কিছুটা বড় পরিসরে হজ হয়েছিল ২০২২ সালে। তাতে অংশ নিয়েছিলেন বিভিন্ন দেশের ১০ লাখ মুসলমান। এবার হজ ফিরে গেছে মহামারীর আগের রূপে।


সৌদি গেজেট জানিয়েছে, ২০১৯ সালের হজে অংশ নিয়েছিলেন ২৫ লাখ মুসলমান। এরপর এবারই সবচেয়ে বেশি মানুষ হজে অংশ নিচ্ছেন।

এবার যারা হজ করছেন, তারা ১৬০টি দেশের বাসিন্দা। ১ লাখ ২২ হাজার বাংলাদেশিও আছেন তাদের মধ্যে।

নাইজেরিয়া থেকে হজ করতে আসা মোহাম্মেদ হামাদ আরব নিউজকে বলেন, “স্রষ্টার কাছাকাছি আসার এ অনুভূতি অসাধারণ। তিনি সর্বশক্তিমান, কল্যাণ, শান্তি আর সমৃদ্ধির জন্য তার কাছে সরাসরি ফরিয়াদ জানানোর এ এক অনন্য সুযোগ।”

আফগানিস্তান থেকে মক্কায় হাজির হওয়া মোহাম্মদ নুমান বলেন, “আমাকে এবার হজে আসার তৌফিক দিয়েছেন, আল্লাহর কাছে শুকরিয়া। আমার কেমন লাগছে বলে বোঝাতে পারব না। আমাদের সবার হজ আল্লাহ কবুল করে নিন।”

এ বছর হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে রোববার। পবিত্র নগরী মক্কায় কাবা শরীফ তাওয়াফ করে রাতে এশার নামাজের পর সবাই জড়ো হতে শুরু করেন ১০ কিলোমিটার দূরে তাবুনগরী মিনায়।

সোমবার সারা দিন ও রাত তারা সেখানে কাটান ইবাদত-বন্দেগির মধ্য দিয়ে। আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় তারা জিকির করেন, নামাজ পড়েন জামাতে।

হজের মূল আনুষ্ঠানিকতার জন্য মঙ্গলবার ভোরের আগেই তারা সমবেত হতে থাকেন আরাফাতের ময়দানে।

ইসলামী রীতি অনুযায়ী, জিলহজ মাসের নবম দিনটি আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করে ইবাদতে কাটানোই হল হজ।

সেলাইবিহীন শুভ্র এক কাপড়ে সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত তারা আরাফাতের ময়দানেই থাকবেন। যার যার মত সুবিধাজনক জায়গা বেছে নিয়ে ইবাদত করবেন; হজের খুতবা শুনবেন।

চার বর্গমাইল আয়তনের এই বিশাল সমতল মাঠের দক্ষিণ দিকে মক্কা হাদা তায়েফ রিং রোড, উত্তরে সাদ পাহাড়। সেখান থেকে আরাফাত সীমান্ত পশ্চিমে আরও প্রায় পৌনে এক মাইল বিস্তৃত।

মুসলমানদের বিশ্বাস অনুযায়ী, আদি পিতা আদম ও আদি মাতা হাওয়া পৃথিবীতে পুনর্মিলনের পর এই আরাফাতের ময়দানে এসে আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছিলেন। ১৪০০ বছরের বেশি সময় আগে এখানেই ইসলামের শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (স.) দিয়েছিলেন তার বিদায় হজের ভাষণ।

এই আরাফাতে উপস্থিত না হলে হজের আনুষ্ঠানিকতা পূর্ণাঙ্গ হয় না। তাই হজে এসে যারা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, তাদেরও অ্যাম্বুলেন্সে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হয় স্বল্প সময়ের জন্য।

প্রতিবছরের মতো এবারও হজের দিন ভোরে কাবা আচ্ছাদিত করা হয় নতুন গিলাফে। মসজিদুল হারাম ও মসজিদে নববীর সভাপতির তত্ত্বাবধানে ফজরের নামাজের পর নতুন গিলাফ পরানো হয়।

আরাফাতের ময়দানের আনুষ্ঠানিকতা সেরে আবারও মিনায় ফেরার পথে সন্ধ্যায় মুযদালিফায় মাগরিব ও এশার নামাজ পড়বেন সমবেত মুসলমানরা। মুজদালিফায় রাতে থাকার সময় তারা পাথর সংগ্রহ করবেন, যা মিনার জামারায় শয়তানের উদ্দেশ্যে ছোঁড়া হবে।

বুধবার সকালে মিনায় ফিরে সেই পাথর তারা প্রতীকী শয়তানকে লক্ষ্য করে ছুঁড়বেন। এরপর কোরবানি দিয়ে ইহরাম ত্যাগ করবেন এবং সবশেষে কাবা শরিফকে বিদায়ী তাওয়াফের মধ্যে দিয়ে শেষ হবে হজের আনুষ্ঠানিকতা।

হজের মৌসুম এবার পড়েছে গরমের মধ্যে। সোমবার দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়েছে।

সৌদি গেজেট জানিয়েছে, হিটস্ট্রোক ও পানিশূন্যতা এড়াতে সবাইকে ছাতা ব্যবহার করতে এবং পর্যাপ্ত পানি পানের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

হজ করতে আসা বিপুল সংখ্যক মানুষের স্বাস্থ্যসেবার দায়িত্বে রয়েছেন ৩২ হাজারের বেশি স্বাস্থ্যকর্মী।

সৌদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় হজে আসা ব্যক্তিদের জন্য মক্কা ও মিনায় হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্র প্রস্তুত রেখেছে। বিশেষ করে ‘হিট স্ট্রোকের’ রোগীদের জন্য দুইশর বেশি শয্যা প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: