৩০ জানুয়ারি ২০২৫ বৃহস্পতিবার, ০৫:৫৫ পিএম
ডেস্ক রিপোর্ট
শেয়ার বিজনেস24.কম
নির্বাচন কমিশন (ইসি) এবার নিজেরাই নির্বাচনসংক্রান্ত আইনবিধি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় সংস্কার প্রস্তাব তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। ভোটার তালিকা আইন, সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ আইন ও নির্বাচন পর্যবেক্ষক নীতিমালা পর্যালোচনার কাজ শুরু করেছে সংস্থাটি। যদিও এসব বিষয়ে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশ রয়েছে, তবুও ইসি নিজস্ব দৃষ্টিকোণ থেকে আইন পর্যালোচনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সংস্কার কমিশনের সুপারিশের বিপরীতে ইসির উদ্যোগ
ইসি সূত্র জানিয়েছে, নিজেদের পর্যালোচনার ভিত্তিতে কিছু আইনবিধি সংশোধনের প্রস্তাব অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে পাঠানোর পরিকল্পনা করছে কমিশন। ইতোমধ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন সংস্কার কমিশনের বেশ কিছু সুপারিশের ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছেন। তাঁর মতে, কিছু সুপারিশ বাস্তবায়িত হলে ইসির স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন হতে পারে।
বৃহস্পতিবার পর্যালোচনা সভা
বৃহস্পতিবার ইসি চারটি গুরুত্বপূর্ণ আইন ও নীতিমালা পর্যালোচনার জন্য বৈঠকে বসছে। এসব বিষয়ের ওপর সংস্কার কমিশনের সুপারিশ থাকলেও ইসি নিজস্ব দৃষ্টিকোণ থেকে পর্যালোচনা চালাবে। সংশ্লিষ্ট মহলে প্রশ্ন উঠেছে, নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশের আগেই ইসির এমন উদ্যোগ কতটা যৌক্তিক। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, সংস্কার কমিশন ও ইসির প্রস্তাবগুলোর মধ্যে সাংঘর্ষিক অবস্থা সৃষ্টি হতে পারে।
সংস্কার ও নির্বাচন প্রস্তুতি
গত অক্টোবরে বদিউল আলম মজুমদারের নেতৃত্বে গঠিত সংস্কার কমিশন নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্টদের মতামত নিয়ে ১৫ জানুয়ারি সুপারিশের সারসংক্ষেপ প্রকাশ করে। ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি থেকে এসব প্রস্তাব নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করবে সরকার। তবে এর মধ্যেই ইসি নিজেদের মতো করে আইন পর্যালোচনার উদ্যোগ নিয়েছে।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৫ সালের শেষ বা ২০২৬ সালের প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে সরকারের পক্ষ থেকে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। ইসি সম্ভাব্য ডিসেম্বর ২০২৫-এ নির্বাচন ধরে নিয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং অক্টোবরের মধ্যে সব প্রস্তুতি চূড়ান্ত করতে চাইছে। তাই সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ আইন ও ভোটার তালিকা আইনে কিছু সংশোধনী আনার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছে ইসি।
সাংঘর্ষিক অবস্থান এড়ানোর তাগিদ
নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্য ও বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ইসির আইন পর্যালোচনার উদ্যোগের সঙ্গে সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলোর সমন্বয় থাকা উচিত। এ বিষয়ে কমিশনের সদস্য মো. আব্দুল আলীম বলেন, আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসারে সীমানা নির্ধারণ আইন, পর্যবেক্ষক নীতিমালা ও ভোটার তালিকা আইনে সুপারিশ দেওয়া হয়েছে, যা আগামী সপ্তাহে প্রকাশিত হতে পারে। তিনি মনে করেন, এ ক্ষেত্রে ইসি ও সংস্কার কমিশনের মধ্যে সমন্বয় জরুরি।
নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ অবশ্য জানান, ইসি আইন সংশোধন নয়, বরং পর্যালোচনা করছে, যা সংস্কার কমিশনের সুপারিশের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়ার কথা নয়। প্রয়োজনে বৃহত্তর আলোচনার মাধ্যমে বিষয়গুলো নির্ধারণ করা হবে।
নির্বাচন সংস্কারের এ প্রক্রিয়ায় ইসির উদ্যোগ ও সংস্কার কমিশনের সুপারিশের মধ্যে সমন্বয় কতটা সম্ভব হয়, তা নিয়েই এখন চলছে নানা আলোচনা ও বিতর্ক।
শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।