facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২১ ডিসেম্বর শনিবার, ২০২৪

Walton

কাজী নজরুলকে জাতীয় কবি হিসেবে স্বীকৃতি: অপেক্ষার অবসান


০৬ ডিসেম্বর ২০২৪ শুক্রবার, ১২:০৭  পিএম

ডেস্ক রিপোর্ট

শেয়ার বিজনেস24.কম


কাজী নজরুলকে জাতীয় কবি হিসেবে স্বীকৃতি: অপেক্ষার অবসান

বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে এবার রাষ্ট্রীয়ভাবে জাতীয় কবির মর্যাদা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এতদিন জাতীয় কবি হিসেবে তার নাম মানুষের মুখে মুখে থাকলেও তা আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি পায়নি। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার এই স্বীকৃতি নিশ্চিত করতে একটি গেজেট প্রকাশের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে।

গতকাল (বৃহস্পতিবার) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের ভিত্তিতে এই অনুমোদন দেওয়া হয়। তবে, সংবিধানে কাজী নজরুল ইসলামের নাম অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাবটি সংসদের অভাবে আপাতত অনুমোদিত হয়নি বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।

সংবিধানে অন্তর্ভুক্তি নিয়ে পরিকল্পনা
সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আতাউর রহমান জানান, “সংবিধানে অন্তর্ভুক্তি করতে হলে সংসদ প্রয়োজন। বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদে এটি সম্ভব নয়। তবে ভবিষ্যতে এ বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হবে।”

এ বিষয়ে কাজী নজরুল ইসলামের নাতনি খিলখিল কাজী জানান, “এই স্বীকৃতির জন্য আমরা দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছি। অবশেষে এ সিদ্ধান্তটি এসেছে, যা আমাদের পরিবারের জন্য অত্যন্ত আনন্দের।”

ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট
কাজী নজরুল ইসলামকে জাতীয় কবি হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি বহুদিনের। ১৯৮৭ সালে ‘কবি কাজী নজরুল ইনস্টিটিউট আইন’-এ তাকে জাতীয় কবি হিসেবে উল্লেখ করা হলেও, রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি এতদিন অনুপস্থিত ছিল।

কবির জীবনী ও অবদান
১৮৯৯ সালের ২৪ মে (১১ জ্যৈষ্ঠ, ১৩০৬ বঙ্গাব্দ) পশ্চিমবঙ্গের চুরুলিয়ায় জন্ম নেওয়া কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন বাংলা সাহিত্যের অপ্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিভা। বিদ্রোহী, প্রলয়োল্লাস, আগমনী, এবং রণসংগীত “চল্ চল্ চল্” তার অন্যতম জনপ্রিয় সৃষ্টি। সাহিত্য, সঙ্গীত ও সংস্কৃতির প্রায় সব শাখায় তার অবদান অবিস্মরণীয়।

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে ভারত সরকারের অনুমতিক্রমে নজরুলকে সপরিবারে বাংলাদেশে আনা হয়। ১৯৭৬ সালে তাকে স্বাধীন বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রদান করা হয়। একই বছর ২৯ আগস্ট (১২ ভাদ্র) তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

তার সাহিত্যকর্মে বৈচিত্র্যের পাশাপাশি বিপ্লবী চেতনার প্রতিফলন ঘটে। তার উল্লেখযোগ্য রচনাগুলোর মধ্যে রয়েছে ছোটগল্প রিক্তের বেদনব্যথার দান, উপন্যাস মৃত্যুক্ষুধাবাঁধনহারা, এবং কবিতা বিদ্রোহী, খেয়াপারের তরণী, ও কামাল পাশা

শেষ কথা
কাজী নজরুল ইসলামের জাতীয় কবির মর্যাদায় রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি বাংলাদেশের সাহিত্য, সংস্কৃতি ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার জন্য এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত। এটি শুধু নজরুল পরিবারের জন্য নয়, পুরো জাতির জন্য গর্বের বিষয়।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন:

বিশেষ প্রতিবেদন -এর সর্বশেষ