১৮ নভেম্বর ২০১৬ শুক্রবার, ০৪:২৫ পিএম
শেয়ার বিজনেস24.কম
ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপের (টিপিপি) ক্ষতি পুষিয়ে নিতে চীনা নেতৃত্বাধীন বাণিজ্য চুক্তিগুলোর প্রতি সমর্থন জানানোর পরিকল্পনা করছে অস্ট্রেলিয়া। পেরুর রাজধানী লিমায় ১৯-২০ নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কো-অপারেশন (এপেক) শীর্ষ সম্মেলনকে সামনে রেখে দেশটির সরকার এমন ইঙ্গিত দিয়েছে। খবর দ্য গার্ডিয়ান।
ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে দেয়া এক সাক্ষাত্কারে অস্ট্রেলিয়ার বাণিজ্যমন্ত্রী স্টিভ কিয়োবো বলেন, তার দেশ চীন সরকার প্রস্তাবিত ফ্রি ট্রেড এরিয়া অব দ্য এশিয়া প্যাসিফিকের (এফটিএএপি) প্রতি সমর্থন জানাবে। তিনি বলেন, ‘টিপিপির ভবিষ্যত্ কঠিন মনে হচ্ছে। এ অবস্থায় চীনের প্রস্তাব নিয়ে পর্যালোচনার জন্য আমি অন্য মন্ত্রীদের সঙ্গে একযোগে কাজ করে যাব। ভবিষ্যতে একটি মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল গড়ে তোলার জন্য ঐকমত্যের ভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহণের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এফটিএএপি প্রস্তাব তৈরি করা হয়েছে।’
টিপিপিতে প্রশান্ত মহাসাগরীয় ১২টি দেশ অন্তর্ভুক্ত হলেও বাদ পড়েছে চীন। বাণিজ্য চুক্তিটি এশিয়া মহাদেশে প্রভাব বিস্তারের জন্য ওবামা প্রশাসনের অন্যতম অর্থনৈতিক হাতিয়ার।
তবে এক্ষেত্রে চুক্তিটির শক্ত দুই প্রতিদ্বন্দ্বী রয়েছে। প্রথমটি হলো এফটিএএপি, যা গোটা এপেকজুড়ে বিস্তৃত। অন্যটি হলো আসিয়ানভুক্ত ১০টিসহ মোট ১৬টি দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি রিজিওনাল কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ (আরসিইপি), যাতে যুক্তরাষ্ট্র অন্তর্ভুক্ত নয়।
২০১৪ সালে এপেক সদস্যরা এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অর্থনৈতিক সংহতি বাড়ানোর লক্ষ্যে একটি মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল গঠনের রূপরেখা অনুমোদন করে, যা ফ্রি ট্রেড এরিয়া অব দ্য এশিয়া-প্যাসিফিক (এফটিএএপি) হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে এপেক বর্তমানে এফটিএএপির বাস্তবায়ন নিয়ে কৌশলগত গবেষণা চালাচ্ছে। এ গবেষণার মাধ্যমে এফটিএএপির অর্থনৈতিক ও সামাজিক মুনাফা ও ক্ষতি এবং বাস্তবায়নের সম্ভাব্য উপায় ও চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে জানা যাবে।
অস্ট্রেলিয়ায় টিপিপি চুক্তির প্রতি প্রকাশ্য জনসমর্থন রয়েছে। দেশটি মনে করে, চুক্তিটি এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে সহায়ক হবে। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়ের পর থেকেই টার্নবুল সরকার জনসমর্থনের ব্যাপারে নিরব রয়েছে। নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বরাবরই টিপিপির বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। নিজের নির্বাচনী প্রচারণাতেও তিনি বিষয়টিকে সামনে রেখেছিলেন।
ট্রাম্পের জয় নিশ্চিত হওয়ার পর থেকেই চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যমগুলো বলে আসছে, যুক্তরাষ্ট্রের উচিত হবে বেইজিং-নেতৃত্বাধীন বাণিজ্য প্রস্তাবগুলোয় সামিল হওয়া। চলতি সপ্তাহে চায়না ডেইলির সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, ‘মার্কিন স্বার্থকে এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে আরসিইপি অধিক কার্যকর হবে। বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসনকে বুঝতে হবে। ওয়াশিংটন দ্রুত বর্ধনশীল প্লাটফরমটির সুবিধা গ্রহণ করতে পারে।’
এবারের এপেক সম্মেলনে ডোনাল্ড ট্রাম্প সশরীরে উপস্থিত থাকবেন না। তবে সম্মেলন চলাকালে তার প্রচ্ছন্ন উপস্থিতি থাকবে, এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। পেরু সম্মেলনে উপস্থিত থাকছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। এটি তার জন্য ক্ষমতা হস্তান্তরের আগে শেষ আন্তর্জাতিক সম্মেলন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুল বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের জানান, আঞ্চলিক নেতাদের আলোচনার কেন্দ্রে থাকবেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘কোনো সন্দেহ নেই, সবাই এ ব্যাপারে কথা বলবে।’ তার মতে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন শুধু দেশটির জন্যই নয়, বরং সারা বিশ্বের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এ কারণে আলোচনায় বিষয়টি যথেষ্ট গুরুত্ব পাবে।
শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।