২৮ জানুয়ারি ২০২৪ রবিবার, ০১:৫২ পিএম
স্টাফ রিপোর্টার
শেয়ার বিজনেস24.কম
জাতীয় পার্টি থেকে জি এম কাদের ও মুজিবুল হক চুন্নুকে অব্যাহতি দিয়েছেন দলটির প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও কো-চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ। দলের গঠনতন্ত্রের ২০/১ ধারার ক্ষমতাবলে এ সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
রোববার (২৮ জানুয়ারি) গুলশানে নিজ বাসভবনে জি এম কাদের বিরোধী নেতাকর্মীদের নিয়ে এক মতবিনিময় সভায় এ সিদ্ধান্ত নেন তিনি। এ সময় পরবর্তী কাউন্সিল না হওয়া পর্যন্ত কাজী মামুনুর রশীদকে নতুন মহাসচিব ঘোষণা করা হয়েছে।
নিজেকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ঘোষণা করে রওশন এরশাদ বলেন, ‘নেতাকর্মীদের অনুরোধে পার্টির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিলাম। পরবর্তী সম্মেলন না হওয়া পর্যন্ত কাজী মানুনুর রশীদকে মহাসচিব ঘোষণা করছি।’
উল্লেখ্য, রোববার (২৮ জানুয়ারি) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়েছে। আমি বেগম রওশন এরশাদ জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা কো-চেয়ারম্যান এবং প্রধান পৃষ্ঠপোষক- এই মর্মে ঘোষণা করছি যে, বিগত দিনের জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক ব্যর্থতা পর্যালোচনা করে আমি কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত ঘোষণা করছি। আমাদের প্রাণপ্রিয় সংগঠন জাতীয় পার্টিতে এখন একটি ক্রান্তিকাল বিরাজ করছে। যেমন:
এক. দ্বাদশ নির্বাচনের পূর্বে পার্টির চেয়ারম্যান ও মহাসচিবের বক্তব্য ও বিবৃতি এবং দ্বাদশ নির্বাচন পরবর্তী সময়ে তাদের ভূমিকা পার্টিকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
দুই. জাতীয় নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ২৮৭টি আসনে প্রার্থী মনোনয়ন প্রদান করে ২৬টি আসনে সমঝোতা করা এবং আসন সমঝোতার পরেও জনসম্মুখে অস্বীকার করে- দেশবাসী এবং পার্টির মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে পার্টিকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে।
তিন. ২৬টি আসন সমঝোতার পর বাকি আসনের প্রার্থীদের রাজনৈতিকভাবে জনগণের বিরূপ সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয়েছে। চেয়ারম্যান ও মহাসচিব তাদের কোনো খোঁজ-খবর না নেয়ার ফলে ভোটের মাঠে পার্টি চরমভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। প্রার্থীরা নির্বাচন থেকে সরে আসতে বাধ্য হয়েছেন।
চার. নির্বাচনে ভরাডুবি হওয়ায় পার্টির নেতাকর্মীরা তার প্রতিবাদ করার অধিকার রাখেন। এই প্রতিবাদী নেতাকর্মীদের সঙ্গে কোনোরূপ আলোচনা কিংবা সান্ত্বনা প্রদান না করে ক্রমাগত বহিষ্কার ও অব্যাহতির মাধ্যমে পার্টির অস্তিত্ব নষ্ট করা হয়েছে।
পাঁচ. পার্টির অবস্থা সার্বিকভাবে বিবেচনায় করে আমি গত ২২ জানুয়ারি, ২০২৪ ইং তারিখ পার্টির চেয়ারম্যান ও মহাসচিবকে দলে ঐক্য ফিরিয়ে এনে সকল বহিষ্কার ও অব্যাহতির আদেশ বাতিল করে ঐক্যবদ্ধ জাতীয় পার্টি গঠনের আহ্বান জানিয়েছিলাম। কিন্তু দুঃখের বিষয় তারা তা আমলে নেননি।
ছয়. এই ধারাবাহিকতায় গত ২৫ জানুয়ারি জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে পল্লীবন্ধুর ৬৬৮ জন নেতাকর্মী পার্টি থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করায় দলে বিরাট সংকট সৃষ্টি হয়েছে।
আমার সিদ্ধান্ত- এক. এমতাবস্থায় উল্লেখিত সংকট নিরসনে পার্টির নেতাকর্মীদের অনুরোধে এবং পার্টির গঠনতন্ত্রের ২০/১ ধারায় বর্ণিত ক্ষমতাবলে আমি পার্টির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব থেকে জি. এম. কাদের ও মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুকে অব্যাহতি প্রদান করলাম।
দুই. নেতাকর্মীদের অনুরোধে আমি পার্টির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ করলাম।
তিন. পরবর্তী সম্মেলন না হওয়া পর্যন্ত আমি কাজী মো. মামুনুর রশিদকে মহাসচিবের দায়িত্ব প্রদান করলাম। তিনি সার্বিকভাবে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।
চার. পার্টির অন্যান্য পদ-পদবী স্ব স্ব অবস্থায় বহাল থাকবে এবং পার্টির যে সকল নেতাকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে কিংবা বহিষ্কার করা হয়েছে এবং যাদের পার্টির কমিটির বাইরে রাখা হয়েছিল, তাদের পূর্বেকার স্ব-পদে পুনর্বহাল করা হবে।
পাঁচ. যথা-শিগগিরই পার্টির জাতীয় সম্মেলন আহ্বান করা হবে।
শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।