০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ বৃহস্পতিবার, ১১:০৪ এএম
শেয়ার বিজনেস ডেস্ক
শেয়ার বিজনেস24.কম
![]() |
স্থানীয় আট বাণিজ্যিক ব্যাংককে ডলার লেনদেনের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ইরাক। জালিয়াতি, মানি লন্ডারিং ও মার্কিন মুদ্রার অন্যান্য অবৈধ ব্যবহার কমাতে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার বাগদাদ সফরের পর এমন সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে ইরাকের কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
সিদ্ধান্ত অনুসারে, ব্যাংকগুলোকে ইরাকের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দৈনন্দিন ডলার নিলামে অংশ নেয়া থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। যদিও আমদানিনির্ভর দেশটিতে হার্ড কারেন্সির জন্য এটি একটি প্রধান উৎস। এমন উদ্যোগ প্রতিবেশী ইরানে মুদ্রা পাচারের বিরুদ্ধে মার্কিন ক্র্যাকডাউনের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
ইরাকের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নথিতে নিষিদ্ধ ব্যাংকগুলোর তালিকা দেয়া হয়েছে। ব্যাংকটির একজন কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। যেসব ব্যাংক ডলার লেনদেন করতে পারবে না সেগুলো হলো আহসুর ইন্টারন্যাশনাল ব্যাংক ফর ইনভেস্টমেন্ট, ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক অব ইরাক, ইউনিয়ন ব্যাংক অব ইরাক, কুর্দিস্তান ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ব্যাংক ফর ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, আল হুদা ব্যাংক, আল জানুব ইসলামিক ব্যাংক ফর ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড ফাইন্যান্স, আরাবিয়া ইসলামিক ব্যাংক ও হাম্মুরাবি কমার্শিয়াল ব্যাংক।
এ ব্যাংকগুলোর প্রতিনিধিত্বকারী ইরাকের প্রাইভেট ব্যাংক অ্যাসোসিয়েশনের প্রধানের সঙ্গে রয়টার্সের পক্ষ থেকে যোগাযোগের চেষ্টা করে সাড়া পাওয়া যায়নি।
ট্রেজারি বিভাগের একজন মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা ইরাকি আর্থিক ব্যবস্থাকে অপব্যবহারের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য সেন্ট্রাল ব্যাংক অব ইরাকের গৃহীত পদক্ষেপের প্রশংসা করছি। ফলে বৈধ ইরাকি ব্যাংকগুলো সংশ্লিষ্ট ব্যাংকিং সম্পর্কের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সংযোগ অর্জন করেছে।’
২০২৩ সালের জুলাইয়ে ইরাকি ব্যাংকিং সিস্টেমের মাধ্যমে ইরানে ডলার পাচারের বিরুদ্ধে ব্যাপক ব্যবস্থা নেয়া হয়। ওই সময় ১৪ ব্যাংককে ডলার লেনদেন থেকে নিষিদ্ধ করেছিল ইরাক সরকার। ইরাকি ও মার্কিন কর্মকর্তাদের মতে ওয়াশিংটনের অনুরোধের পর এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল।
ইরাকের কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, ডলার লেনদেন থেকে নিষিদ্ধ ব্যাংকগুলোকে রুটিন কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি অন্যান্য মুদ্রায় লেনদেন পরিচালনারও অনুমতি দেয়া হয়েছে।
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্টের নিষেধাজ্ঞাবিষয়ক শীর্ষ কর্মকর্তা ব্রায়ান নেলসন বাগদাদ সফর করেন। সফরকালে ইরাকের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। কীভাবে ইরাকি ও আন্তর্জাতিক আর্থিক ব্যবস্থাকে অপরাধী, দুর্নীতিবাজ ও সন্ত্রাসীদের হাত থেকে রক্ষা করা যায়, তা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা করেন কর্মকর্তারা।
প্রসঙ্গত, ইরাকের বর্তমান সরকার ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীর সমর্থনে ক্ষমতায় এসেছিল। দীর্ঘদিন ধরেই আর্থিক খাতসহ অর্থ পাচারের হট স্পট হিসেবে দেখা হয় ইরাককে। তবুও পশ্চিমা কর্মকর্তারা ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শিয়া আল-সুদানির সঙ্গে অর্থনৈতিক ও আর্থিক সংস্কারের জন্য সহযোগিতার প্রশংসা করেছেন। বিশ্লেষকদের ধারণা, এর অর্থ ইরান ও তার মিত্রদের ডলার অ্যাক্সেস করার ক্ষমতা কমানো এবং ইরাকি অর্থনীতিকে আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ করা।
শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।