২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ রবিবার, ০১:৫২ পিএম
ডেস্ক রিপোর্ট
শেয়ার বিজনেস24.কম
রাজধানী ঢাকার বাসিন্দাদের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সরকার নতুন এক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ১০০টিরও বেশি `জিপি-ক্লিনিক` চালুর পরিকল্পনা করা হয়েছে, যেখানে বিনামূল্যে রোগ পরীক্ষা ও ওষুধ সরবরাহ করা হবে। সরকারি হাসপাতালের সেবা গ্রহণের আগে রোগীদের এসব ক্লিনিক থেকে চিকিৎসা নিতে হবে। প্রয়োজন হলে এখানকার চিকিৎসকেরা রোগীকে হাসপাতালে পাঠাবেন।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এই ক্লিনিকগুলো রেফারেল পদ্ধতি চালুর একটি অংশ। বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের সঙ্গে এ নিয়ে ইতোমধ্যে আলোচনা হয়েছে। রেফারেল পদ্ধতি চালু হলে সরকারি হাসপাতালগুলোতে ভিড় কমবে এবং স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নত হবে।
বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে জেনারেল প্র্যাকটিশনার (জিপি) ব্যবস্থা চালু রয়েছে। বাংলাদেশেও ঢাকায় এ ধরনের স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্থাপন করা হচ্ছে। ঢাকার প্রতিটি ওয়ার্ডে অন্তত একটি জিপি-ক্লিনিক থাকবে, যা শহরের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার স্থায়ী কাঠামো হিসেবে কাজ করবে।
কোন কোন সেবা মিলবে? সরকার পাঁচ ধরনের স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে: ১. প্রতিরোধমূলক সেবা: টিকাদান, রোগ শনাক্তকরণ, স্বাস্থ্যশিক্ষা। ২. মৌলিক চিকিৎসা: সাধারণ রোগ, দীর্ঘস্থায়ী রোগ ব্যবস্থাপনা, মাতৃ ও শিশুস্বাস্থ্যসেবা। ৩. পরীক্ষা-নিরীক্ষা: প্রয়োজনীয় ল্যাব টেস্ট ও নমুনা সংগ্রহ। ৪. ওষুধ সরবরাহ: বিনামূল্যে মৌলিক ওষুধ প্রদান ও চিকিৎসা পরামর্শ। ৫. রেফারেল ব্যবস্থা: বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে পাঠানো ও হাসপাতালে ভর্তির সহায়তা।
জিপি-ক্লিনিকের কাঠামো প্রতিটি ক্লিনিকে ১১ জন কর্মী থাকবেন, যার মধ্যে থাকবেন ৪ জন চিকিৎসক (২ জন নারী, ২ জন পুরুষ), ২ জন নার্স, ১-২ জন মিডওয়াইফ, ১ জন ওষুধবিদ, ১ জন প্যারামেডিক, ১ জন ল্যাব টেকনিশিয়ান এবং প্রশাসনিক ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী।
এই ক্লিনিকগুলো সপ্তাহে পাঁচ দিন খোলা থাকবে এবং শুধুমাত্র নির্ধারিত এলাকার বাসিন্দাদের সেবা দেবে। জটিল রোগ যেমন হৃদরোগ, ক্যানসার, কিডনি বা স্নায়ুরোগের চিকিৎসা এখানে দেওয়া সম্ভব হবে না। তবে এসব ক্ষেত্রে রোগীকে সরকারি হাসপাতালে পাঠানো হবে।
সরকারের লক্ষ্য ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সরকার আশা করছে, জিপি-ক্লিনিক চালুর মাধ্যমে শহরের স্বাস্থ্যসেবা কাঠামোকে আরও কার্যকর করা সম্ভব হবে। জনস্বাস্থ্যবিদরা মনে করছেন, কোনো কোনো এলাকায় একাধিক ক্লিনিক প্রয়োজন হতে পারে এবং সেবা দু’টি পালায় পরিচালনা করা উচিত, যেন সন্ধ্যার পরও মানুষ সেবা পায়।
এই উদ্যোগ নগরবাসীর জন্য একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হতে পারে, যা দীর্ঘমেয়াদে ঢাকার স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনবে।
শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।