২৯ মার্চ ২০২৫ শনিবার, ১০:১৮ পিএম
ডেস্ক রিপোর্ট
শেয়ার বিজনেস24.কম
![]() |
কিছুদিন আগেই কেন্দ্রীয় চুক্তিতে থাকা খেলোয়াড়দের নাম ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি), যেখানে সর্বোচ্চ শ্রেণি ‘এ’ প্লাসে থাকা একমাত্র ক্রিকেটার তাসকিন আহমেদ। চুক্তি অনুযায়ী বিসিবির কাছ থেকে মাসে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা করে বেতন পাচ্ছেন দেশের অন্যতম সেরা এই পেসার। এর বাইরে বিসিবি প্রতিটি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার জন্য আলাদা করে ম্যাচ ফি দেয়। যেটা পান চুক্তির বাইরে থাকা ক্রিকেটাররাও। যে যত ম্যাচ খেলেন, তিনি সেই হিসাবে ম্যাচ ফি পান।
ম্যাচ ফি কত টাকা, তা আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি। তবে বিসিবি সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে, এই বছর থেকে প্রতিটি টেস্ট ম্যাচের জন্য ৮ লাখ, ওয়ানডের জন্য ৪ লাখ ও টি-টোয়েন্টির জন্য ২ লাখ ৫০ হাজার করে টাকা পাবেন ক্রিকেটাররা।
স্বাভাবিকভাবেই কৌতূহল জাগতে পারে, সব মিলিয়ে কেমন আয় করেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা।
তাসকিনকেই উদাহরণ হিসেবে ধরা যাক। ‘এ’ প্লাস শ্রেণির ক্রিকেটার হিসেবে মাসে ১০ লাখ করে এক বছরে তাসকিন বেতন পাবেন ১ কোটি ২০ লাখ টাকা। এফটিপি (ভবিষ্যৎ সফরসূচি) অনুযায়ী, এই বছর বাংলাদেশ ৬টি টেস্ট খেলবে, সঙ্গে ১২টি ওয়ানডে এবং ১৫টি টি-টোয়েন্টি। এই এফটিপির বাইরেও এই বছর আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের সঙ্গে সিরিজ আয়োজন করার চেষ্টা করছে বিসিবি। পাকিস্তানের সঙ্গে সিরিজে তিনটি টি-টোয়েন্টি খেলবে বাংলাদেশ, আফগানিস্তানের সঙ্গেও টি-টোয়েন্টি সিরিজই হওয়ার কথা। এ ছাড়া এ বছর এশিয়া কাপ আছে, যেটি হবে টি-টোয়েন্টি সংস্করণে। যেখানে আরও অন্তত তিনটি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ দল।
এই সিরিজগুলোকে হিসাবের বাইরে রেখে যদি শুধু এফটিপিতে থাকা ম্যাচ ও এশিয়া কাপের হিসাব করা হয়, তাহলে এ বছর তাসকিন ৬টি টেস্ট, ১২টি ওয়ানডে ও ১৮টি টি-টোয়েন্টি খেলার সুযোগ পাবেন। যদি তিনি সব কটি ম্যাচ খেলেন, তাহলে এ বছর টেস্ট থেকে ম্যাচ ফি পাবেন ৪৮ লাখ, ওয়ানডে থেকে ৪৮ লাখ ও টি-টোয়েন্টি থেকে ৪৫ লাখ টাকা। তার মানে ম্যাচ ফি বাবদ তাসকিনের আয় হবে মোট ১ কোটি ৪১ লাখ টাকা। তার মানে শুধু জাতীয় দলে খেলেই এ বছর তাসকিনের সম্ভাব্য আয় ২ কোটি ৬১ লাখ টাকা (বেতন ১ কোটি ২০ লাখ+ম্যাচ ফি ১ কোটি ৪১ লাখ)। এর বাইরে সিরিজ চলাকালীন পাবেন দৈনিক ভাতাও।
জাতীয় দল ছাড়াও বাংলাদেশের ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি লিগ বিপিএল, ঘরোয়া ৫০ ওভারের টুর্নামেন্ট ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ ও প্রথম শ্রেণির টুর্নামেন্ট জাতীয় ক্রিকেট লিগ (এনসিএল) থেকে আয়ের সুযোগ আছে ক্রিকেটারদের। এ বছরের শুরুতে বিপিএলে দুর্দান্ত রাজশাহীর হয়ে খেলেন তাসকিন। প্লেয়ার্স ড্রাফটে ‘এ’ শ্রেণিতে থাকা তাসকিনের দাম ছিল ৬০ লাখ টাকা।
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে এবার মোহামেডানের হয়ে খেলছেন তাসকিন, তাঁকে দলে নিতে ক্লাবটিকে ৫০ লাখের আশপাশে খরচ করতে হয়েছে বলে জানা গেছে। এনসিএলে অবশ্য ব্যস্ততার কারণে খেলার সুযোগ হয় না তাসকিনের। তারপরও ঘরোয়া ক্রিকেট থেকেও তাঁর আয় ১ কোটি ১০ লাখের মতো। তার মানে ক্রিকেট খেলে চলতি বছর তাসকিনের সম্ভাব্য আয় ৩ কোটি ৭১ লাখ টাকা। এখানেই শেষ নয়, বাংলাদেশের শীর্ষ ক্রিকেটারদের অনেকেই প্রতিবছর একটি-দুটি বিদেশি ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি লিগে খেলেন। তাসকিন অবশ্য ২০২৩ সালে জিম আফ্রো টি-টেনের পর আর বিদেশি লিগে খেলেননি। তবে অন্যরা খেলেছেন। আসছে পিএসএলে যেমন ডাক পেয়েছেন লিটন দাস, নাহিদ রানা ও রিশাদ হোসেন। সেসব টুর্নামেন্টে খেলে ৫০ লাখ থেকে কয়েক কোটি টাকা পর্যন্ত আয় করেন অনেক ক্রিকেটার।
তাসকিনের কথা তো গেল, নাজমুল হোসেনসহ আরও কয়েকজনের সম্ভাব্য আয়টাও একটু বের করা যাক। বিসিবির চুক্তির ‘এ’ শ্রেণিতে নাজমুল ছাড়াও আছেন মেহেদী হাসান মিরাজ ও লিটন কুমার দাস। বছরে যাঁদের বেতন ৯৬ লাখ করে। এর বাইরে জাতীয় দলে অপরিহার্য হয়ে ওঠা এই কয়েকজন খেলোয়াড়ের ম্যাচ ফি বাবদ সম্ভাব্য আয় ১ কোটি ৪১ লাখ টাকা করে। বিপিএল খেলে নাজমুল, মিরাজ, লিটন তিনজনই পেয়েছেন অন্তত ৬০ লাখ করে। ঢাকা প্রিমিয়ার থেকেও এই তিনজনের গড় আয় ৩০ থেকে ৪০ লাখের মতো। তার মানে ক্রিকেট খেলে এই বছর নাজমুল, মিরাজ ও লিটনের সম্ভাব্য আয় প্রায় ৩ কোটি ২৭ লাখ টাকা করে।
শুধু যে খেলেই ক্রিকেটারদের আয়, তা–ও কিন্তু নয়। তাঁদের আয়ের অন্য একটি বড় খাত বিজ্ঞাপন। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রচার-প্রচারণার জন্য ক্রিকেটারদের বেশ কদর আছে। তবে ওখান থেকে কত টাকা আয় হয়, তা জানায় না কোনো পক্ষই। সেই হিসাবটা তাই বাদই থাকল।
শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।