২৫ এপ্রিল ২০২৩ মঙ্গলবার, ০১:৪১ পিএম
স্টাফ রিপোর্টার
শেয়ার বিজনেস24.কম
ব্যয়বহুল ব্যবসায়িক ভ্রমণের দিন হয়তো আর আগের অবস্থায় ফিরবে না। করপোরেট বাজেটে লাগাম টেনেছে কোম্পানিগুলো। সেইসঙ্গে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে কাজের ধারা। এই দুই কারণে ব্যবসায়িক ভ্রমণের প্রচলিত ধারাটাই বদলে দিয়েছে।
এমনটাই বলা হয়েছে মর্নিং কনসাল্টের ‘বিজনেস, বাট নট অ্যাজ ইউজুয়াল’ শীর্ষক প্রতিবেদনে। যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা প্রতিষ্ঠানটির প্রতিবেদনের বরাতে সিএনবিসি জানিয়েছে, পরিবর্তন এসেছে ব্যবসায়ী জনগোষ্ঠীর বয়সেও। ব্যবসায়িক সফরকারীদের বেশিরভাগই এখন তরুণ। আর তারা ভ্রমণের জন্য বেছে নেন বিমানের ইকোনমি ক্লাসের টিকিট। এই তরুণ ব্যবসায়ীদের অর্ধেকেরই বার্ষিক আয় ৫০ হাজার ডলারের কম। অতএব ব্যবসার কাজে ভ্রমণের জন্য তরুণরা বেশি খরচ করতে নারাজ। প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, একটি ভিন্ন ও নতুন ধারার বিজনেস ট্র্যাভেল মডেল ধীরগতিতে হলেও নিশ্চিতভাবেই তৈরি হচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে ‘নিউ নরমাল’ যুগে প্রবেশ করছে গোটা ব্যবসা শিল্প।
ব্যবসাসংক্রান্ত ভ্রমণ কমলেও বিশ্বজুড়ে বাড়ছে ব্যক্তিগত ভ্রমণ। মর্নিং কনসাল্ট বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে গত বছর ব্যবসাসংক্রান্ত ভ্রমণের হারে দেখা গেছে স্থবিরতা। ৪ হাজার ৪০০ জন মার্কিন নাগরিকের ওপর জরিপ পরিচালনা করেছে প্রতিষ্ঠানটি। জরিপ অনুযায়ী, ২০২২ সালে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ব্যবসায়িক ভ্রমণে প্রবৃদ্ধির হার ১ শতাংশ।
ব্যবসা-বাণিজ্যের কাজের জন্য ভ্রমণ করছেন। কোনো ব্যবসায়ী ভ্রমণ জারি রাখলেও ভ্রমণের হার কমিয়ে দিয়েছেন।
জরিপে অংশগ্রহণকারীর দুই-তৃতীয়াংশ বলেন, ব্যবসায়িক ভ্রমণের ক্ষেত্রে তাদের কোম্পানিতে নীতিগত পরিবর্তন এসেছে। ৬০ শতাংশ বলেন, ব্যবসায়িক সফরের হার কমানো হয়েছে। আর ৫৬ শতাংশ বলেন, আগের চেয়ে অনেক কম কর্মীকে সফরে পাঠানো হচ্ছে।
মহামারির আগে অনেক ব্যবসায়ী বছরে অন্তত তিনবার ব্যবসার কাজে সফর করতেন। জরিপের সময় তাদের প্রশ্ন করা হয়, এরপর তারা কবে আবার সফরে যাওয়ার আশা করছেন। ব্যবসায়ীদের একটি বড় অংশ জানায়, তারা আর কখনো ব্যবসায়িক সফরে যাবেন না বলেই তাদের ধারণা। ব্যবসাসংক্রান্ত সফরে না যাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা গেছে উন্নত দেশের ক্ষেত্রে। যেমন ফ্রান্সের ৫৮, যুক্তরাজ্যের ৫৫, জার্মানির ৫০, কানাডার ৪৯ ও জাপানের ৪৮ শতাংশ বলেছেন, তারা হয়তো আর কখনো ব্যবসায়িক সফরে যাবেন না। সেই তুলনায় মাত্র ১৪ শতাংশ ভারতীয় এ কথা বলেছেন।
এদিকে ব্যবসায়িক সফরের পরিমাণ কমে এলেও খরচ বাড়ছে। ডেলয়েটের আরেক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, গত বছর ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে করপোরেট সফরের ব্যয় দ্বিগুণ হয়েছে। এমনকি ২০২৪-২৫ সালের মধ্যে তা মহামারির আগের সময়ে ফেরত যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সিএনবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে. মূলত উচ্চমূল্যস্ফীতির কারণে বিমান ও হোটেলের ভাড়া অনেকটা বেড়েছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বেড়েছে সফরের ব্যয়। এই পরিস্থিতিতে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো সাশ্রয়ী বিমান ও হোটেলের খোঁজ করছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ বছর আন্তর্জাতিক ব্যবসায়িক সফরের ব্যয় বাড়বে। মূলত বিভিন্ন সম্মেলনে অংশ নিতে কর্মীরা বিদেশ সফরে যাবেন। যারা সাধারণত ব্যবসায়িক ভ্রমণ করেন তাদের দুই-তৃতীয়াংশ জরিপে বলেন, এ বছর সেমিনারে অংশ নেওয়ার আশা করছেন তারা।
এ ছাড়া মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রকৃতির ব্যবসায়িক সফরের প্রবণতা বাড়ছে। মূলত মহামারির সময় মিশ্র প্রকৃতির কাজের ধারা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার কারণে এই প্রবণতা বাড়ছে। অর্থাৎ মানুষ কাজের সঙ্গে অবসরের সমন্বয় ঘটাচ্ছে। বেশি সময় ভ্রমণ করা যায় বলে এসব ক্ষেত্রে মানুষ অনেক সময়ই বেশি ব্যয় করে।
শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।