facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৯ ডিসেম্বর রবিবার, ২০২৪

Walton

দেশে ১৭ হাজার কোটি টাকার প্রসাধনপণ্যের বাজার


২৯ নভেম্বর ২০২৩ বুধবার, ০১:১৫  পিএম

ডেস্ক রিপোর্ট

শেয়ার বিজনেস24.কম


দেশে ১৭ হাজার কোটি টাকার প্রসাধনপণ্যের বাজার

সারা দেশে তাপমাত্রা কমছে। পুরোদমে শীত না পড়লেও রাতের বেলায় শীত অনুভূত হচ্ছে। যারা সারা বছর ত্বক পরিচর্যা করে না বা সময় পায় না, শীতের সময় তাদেরও বাড়তি যত্নের প্রয়োজন হয়। ফলে বডি লোশন, ক্রিম (ময়েশ্চারাইজার), পমেড, লিপজেল, লিপবাম, গ্লিসারিন, পেট্রোলিয়াম জেলি, অলিভ অয়েলসহ বিভিন্ন প্রসাধনী বিক্রি বাড়ছে।

রাজধানীর মহাখালী এসকে শপিং মল, গুলশান ডিসিসি মার্কেট, যমুনা ফিউচার পার্ক ও রামপুরা, বাড্ডার বিভিন্ন কসমেটিকসের দোকানগুলো ঘুরে দেখা গেছে, শীতের প্রসাধনীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে বডি লোশন ও পেট্রোলিয়াম জেলি। এ ছাড়া ঠোঁটের যত্নে লিপজেল, ময়েশ্চার কেয়ার ক্রিম ও অলিভ অয়েলের বিক্রিও বেড়েছে।

এবার দেশীয় কম্পানির শীতের প্রসাধনীর দাম তেমনভাবে না বাড়লেও আমদানীকৃত প্রসাধনীর দাম অনেক বেড়ে গেছে। ডলার সংকট, টাকার অবমূল্যায়ন ও চাহিদা মতো এলসি খুলতে না পারায় আমদানীকৃত শীতের প্রসাধনীর সরবরাহে কিছুটা সংকট তৈরি হয়েছে।

ফলে আমদানীকৃত শীতের প্রসাধনীর দাম ২০ থেকে ৩০ শতাংশ বেড়েছে।
লাইট ক্যাসেল পার্টনারস এবং অ্যালাইড মার্কেট রিসার্চের মতো গবেষণা সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালে দেশে প্রসাধনপণ্যের বাজার ছিল প্রায় সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকার। ২০২৭ সালের মধ্যে তা প্রায় সাড়ে ২৩ হাজার কোটি টাকায় উন্নীত হবে। ২০২১ থেকে ২০২৭ সাল পর্যন্ত সময়ে এই বাজার ৮.১ শতাংশ হারে বাড়বে বলে জানায় গবেষণা সংস্থা দুটি।

সে হিসাবে, চলতি বছর ডলারের বিনিময় হার ১১০.৫০ টাকা ধরে প্রসাধনপণ্যের বাজার প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকার হওয়ার কথা। তবে শুধু শীতের সময়ে আলাদা তথ্য না থাকলেও এই সময়ই পণ্য তুলনামূলক বেশি বিক্রি হয়।

তবে এ বছর প্রসাধনীসামগ্রীর বাজারে প্রবৃদ্ধি কিছুটা কম হবে বলে জানান বিক্রেতারা। তাঁরা বলছেন, মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে যাওয়া এবং আমদানি করা পণ্যের দাম বৃদ্ধির কারণে এ বছর বিক্রি ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কম হতে পারে। তবে আমদানি পণ্যের তুলনায় দাম কম হওয়ায় গত বছরের চেয়ে এবার দেশীয় শীতের প্রসাধনীর বিক্রি বেড়েছে বলে জানান তাঁরা।

দেশে প্রসাধনী খাতের প্রতিষ্ঠিত কম্পানিগুলো হচ্ছে ইউনিলিভার, স্কয়ার, কোহিনূর কেমিক্যালস, কেয়া ও কিউট প্রভৃতি। কোহিনূর কেমিক্যাল কম্পানি (বাংলাদেশ) লিমিটেডের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট (ব্র্যান্ড) গোলাম কিবরিয়া সরকার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘শীতকালে ত্বকের সার্বিক সুরক্ষার জন্য আমরা তিব্বত পমেড, পেট্রোলিয়াম জেলি, বিউটিনা বডি লোশন, তিব্বত গ্লিসারিন, ফ্রুটি লিপ বাম ও তিব্বত লিপজেল বাজারজাত করছি। ভোক্তার ক্রয়ক্ষমতার কথা চিন্তা করে চলতি বছর আমাদের গ্লিসারিনের মূল্য কমানো হয়েছে। পাশাপাশি বিশ্বমানের বিউটিনা বডি লোশনের মূল্য বৃদ্ধি না করে অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। বিউটিনা বডি লোশন ১০০ গ্রামের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ১২০ টাকা এবং ২০০ গ্রামের মূল্য ২০০ টাকা, যা ভোক্তার ক্রয়ক্ষমতার মধ্যেই রয়েছে।’

স্কয়ার টয়লেট্রিজের প্রধান বিপণন কর্মকর্তা জেসমিন জামান বলেন, ‘এ বছর খাদ্যপণ্যসহ প্রায় সব ধরনের জিনিসের দাম বাড়ার কারণে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমেছে। যার কারণে আমাদের শীতের প্রসাধনীসামগ্রীর দাম বাড়ানো হয়নি, বরং কিছু পণ্যের দাম কমানো হয়েছে। তার পরও এবার বিক্রি কম।’ তিনি জানান, দেশে শীতের প্রসাধনপণ্যের যে চাহিদা রয়েছে, তার ৯০ শতাংশই দেশে উৎপাদিত পণ্যে পূরণ হয়। বাকি ১০ শতাংশের মতো আমদানীকৃত পণ্যে পূরণ করা হয়।

ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেডের মার্কেটিং ম্যানেজার (স্কিন কেয়ার) জিশান রহমান বলেন, ‘চলতি বছর ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে আমরা ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছি। গ্রাহকরা এরই মধ্যে লোশনের মতো শীতের পণ্য কেনা শুরু করেছে। প্রবণতা দেখে আমাদের মধ্যে এই আত্মবিশ্বাস জন্মেছে, এই শীতে আমাদের শীতের পণ্যের বাজারে ভালো প্রবৃদ্ধি হবে।’

মহাখালীর এসকে শপিং মলের সানিয়া কসমেটিকসের ব্যবসায়ী মো. সানাউল্লাহ পাটোয়ারী ও রাজধানীর ভাটারা এলাকায় কল্পনা কসমেটিকসের ব্যবসায়ী সুদেব চন্দ্র শিশির বলেন, বিদেশি বডি লোশনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি চলে নিভিয়া ব্র্যান্ডের লোশন। দাম বেড়ে এবার নিভিয়ার ৪০০ গ্রামের বডি লোশন এক হাজার ২৫০ টাকা এবং ৩৮০ গ্রামের নিভিয়ার লোশন এক হাজার ১০০ টাকা হয়েছে। আর দেশে উৎপাদিত বিভিন্ন কম্পানির ৪০০ গ্রামের বডি লোশন ৪৫০ থেকে ৫১০ টাকা এবং ৩০০ গ্রামের বডি লোশনের দাম ৩২০ থেকে ৩৮০ টাকায় কিনতে পারছে ক্রেতারা। যার কারণে বিদেশি শীতের প্রসাধনীর চেয়ে দেশীয় কম্পানির প্রসাধনী বেশি বিক্রি হচ্ছে।

রাজধানীর যমুনা ফিউচার পার্কের হোলসেলের ক্যাশিয়ার তনয় আহমেদ বলেন, আমদানীকৃত প্রসাধনী পণ্যগুলোর দাম এক বছরের ব্যবধানে ২০০ থেকে ২৫০ টাকার মতো বেড়েছে। দাম বাড়ার কারণে অনেকে বড় সাইজের পণ্যের পরিবর্তে ছোট সাইজের পণ্য কিনছে। আবার অনেকে আমদানি পণ্যের বিপরীতে দেশীয় পণ্য কিনছে। 

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: