facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ১৮ ডিসেম্বর বুধবার, ২০২৪

Walton

নগদে ডিজিটাল জালিয়াতির মহাকাণ্ড


১৭ ডিসেম্বর ২০২৪ মঙ্গলবার, ১১:১৪  এএম

ডেস্ক রিপোর্ট

শেয়ার বিজনেস24.কম


নগদে ডিজিটাল জালিয়াতির মহাকাণ্ড

 

নগদে ভুয়া পরিবেশক দেখিয়ে বিশাল অর্থ জালিয়াতি

মোবাইল আর্থিক সেবা ‘নগদ লিমিটেড’-এ বড় ধরনের আর্থিক জালিয়াতির ঘটনা প্রকাশ পেয়েছে। ভুয়া এজেন্ট ও অনুমোদনহীন পরিবেশকদের মাধ্যমে অতিরিক্ত ইলেকট্রনিক মানি (ই-মানি) তৈরি করে ২ হাজার ৩৫৬ কোটি টাকার হিসাব মেলাতে ব্যর্থ হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। অন্তর্বর্তী সরকারের নিয়োগপ্রাপ্ত প্রশাসকের তদারকিতে এসব অনিয়মের চিত্র বেরিয়ে এসেছে।


ছয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন

জালিয়াতির ঘটনায় ছয় কর্মকর্তার তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে ডাক বিভাগের কাছে সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে আছেন নির্বাহী পরিচালক সাফায়েত আলম, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিনুল হকসহ নগদের শীর্ষ পর্যায়ের কয়েকজন কর্মকর্তা।


সরকারি ভাতা বিতরণেও অনিয়মের ছাপ

সরকারি ভাতা বিতরণের সুযোগ নিয়ে নগদ বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছে। এমনকি তিন দিনের মধ্যে উত্তোলন না করা ভাতাভোগীদের অর্থও তুলে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। প্রশাসক দলের তদন্তে আরও উঠে এসেছে, অনুমোদন ছাড়াই ৪১টি পরিবেশক অ্যাকাউন্ট খুলে ১ হাজার ৭১১ কোটি টাকা সরানো হয়েছে।


ডিজিটাল জালিয়াতির ছায়ায় রাজনৈতিক প্রভাব

নগদ পরিচালনায় জড়িত ছিলেন আওয়ামী লীগের একাধিক সংসদ সদস্য এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। তৎকালীন সরকারের প্রশ্রয়েই প্রতিষ্ঠানটি দ্বিতীয় বৃহত্তম মোবাইল সেবাদাতা হিসেবে গড়ে ওঠে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, "এটি দেশের সবচেয়ে বড় ডিজিটাল জালিয়াতির ঘটনা।"


বড় গলদ: অনুমতি ছাড়া কার্যক্রমে ব্যাংকের নীরব ভূমিকা

২০১৯ সালে শর্ত পূরণ ছাড়াই নগদ মোবাইল আর্থিক সেবা চালু করেছিল। ব্যাংক তদারকি না করলেও বারবার নগদকে সময় দেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি নিজেকে `ডিজিটাল ব্যাংক` হিসেবে গড়ে তোলার অনুমতিও পেয়েছিল।


নগদের মালিকানায় প্রভাবশালীরা

নগদের মালিকানায় ছিলেন তৎকালীন সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক, রাজী মোহাম্মদ ফখরুল এবং প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিবের স্ত্রীসহ বিভিন্ন ক্ষমতাসীন দলের নেতারা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রভাবশালী হাতের কারণেই এই অনিয়ম এতদূর গড়িয়েছে।


প্রশাসকের সুপারিশ: ফরেনসিক নিরীক্ষা

নগদের এই ভয়াবহ জালিয়াতি খতিয়ে দেখতে ফরেনসিক নিরীক্ষার সুপারিশ করা হয়েছে। ফরেনসিক নিরীক্ষার মাধ্যমে জালিয়াতি, অনিয়ম ও সুবিধাভোগীদের চিহ্নিত করা হবে বলে মনে করা হচ্ছে।


গরিবের টাকা উদ্ধার কি সম্ভব?

এই অনিয়মে সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের সাবেক চেয়ারম্যান আনিস এ খান বলেছেন, "গরিবের টাকা বেহাত হয়েছে। সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিয়ে এই টাকা ফেরাতে হবে।"


বড় জালিয়াতির এমন ঘটনাগুলো ভবিষ্যতে প্রতিরোধে কঠোর তদারকি ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার দাবি তুলছেন বিশেষজ্ঞরা।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন:

অর্থ ও বাণিজ্য -এর সর্বশেষ