০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ মঙ্গলবার, ০৫:৩৬ পিএম
শেয়ার বিজনেস24.কম
অনেকে মনে করেন পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ অন্যান্য খাত থেকে একটু লোভনীয়; কারণ এখানে নাকি কম কষ্টে বেশি মুনাফা অর্জন সম্ভব হয়। আবেগের বসে অনেকে হয়তো এমন কথা বলতেই পারেন। আসলে একটি কার্যকর পুঁজিবাজার থেকে মুনাফা অর্জন করাটা অতটা সহজ নয়। আর নতুন বিনিয়োগকারীদের জন্য সেটা আরও কঠিন। তবে কিছু সঠিক নির্দেশনা কাজে লাগাতে পারলে নতুনরাই পুঁজিবাজার থেকে প্রত্যাশিত রিটার্ন পেতে পারে।
বাজার বুঝতে হবে:
টাকা দিয়ে পুঁজিবাজার থেকে কিছু শেয়ার কিনলেই তাকে বিনিয়োগ বলা যায় না। বিনিয়োগের আগে আপনাকে জানতে হবে। কোথায় আপনি বিনিয়োগ করবেন, কেন করবেন, কখন করবেন, কীভাবে করবেন এবং কত সময়ের জন্য করবেন। সহজ কথায় পুঁজিবাজার বিষয়ে আপনাকে জ্ঞান অর্জন হবে। এরপর সিদ্ধান্ত নিবেন যে আপনি কি করবেন।
ধৈর্যশীল হতে হবে:
বিনিয়োগ হলো সারা জীবনের একটি ইভেন্টের মতো। এর জন্য স্থির ও ধৈর্যের প্রয়োজন। বিনিয়োগ খুব শিগগিরই টাকা উত্তোলন করতে চাওয়া উচিত নয়। প্রথমে মৌলভিত্তি সম্পন্ন কোম্পানির বিনিয়োগ করা ভালো; কারণ এধরনের কোম্পানিগু ভালো লভ্যাংশ প্রদান করে। আর বিনিয়োগ করে সব সময় দুঃচিন্তায় থাকা উচিত নয়। এমন হলে সিদ্ধান্ত গ্রহণে ভুল হতে পারে।
ঝুঁকি সর্ম্পকে জানতে হবে:
বাগান থেকে গোলাপ তুলবেন অথচ তার কাঁটা সম্পর্কে জানবেন না; এমন চলবে না। বিনিয়োগের আগে আবশ্যই ঝুঁকি সম্পর্কে জানতে হবে। সেই সঙ্গে ঝুঁকি কমিয়ে আনার ব্যবস্থাপনা জানতে হবে।
দুর্বল শেয়ার থেকে দূরে থাকা:
অতি কম মূল্য এবং দুর্বল কোম্পানির শেয়ার কেনা থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ এ ধরণের শেয়ারের ওঠানামা অনেক বেশি হয়ে থাকে। এতে এমন হতে পারে অনেক বেশি লোকসান হয়ে গেছে। এ ধরনের প্যানিকের ফলে ভূল সিদ্ধান্ত হতেও পারে। এধনের শেয়ার থেকে যথাসম্ভব দূরে থাকা ভালো।
কোনো তাড়াহুড়া নয়:
পুঁজিবাজারে দর ওঠানামা করবে এটাই স্বাভাবিক নিয়ম। কোনো শেয়ার কেনার পর এটার দর বেড়ে যাবে এমন ভাবা ঠিক নয়। যদি শেয়ারটির দর সামান্য কমে যায় তবে ভয় পাওয়ার কিছুই নেই। শেয়ারটি বিক্রি না করে ভাবতে হবে; যার ভিত্তিতে আপনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন- সেটা কতটা ঠিক। তা যাচাই করতে হবে। যদি আপনার সিদ্ধান্ত ভুল হয়ে থাকে তখনই আপনি শেয়ারটি বিক্রি করবেন।
এক কোম্পানিতে সব বিনিয়োগ নয়:
কখনও সব ডিম এক ঝূঁড়িতে রাখবেন না। কারণ ঝূড়িটা ক্ষতিগ্রস্ত হলে সব ডিম ভেঙ্গে যেতে পারে বা সব অর্থ লোকসান হতে পারে। বিনিয়োগে বহুমুখীকরণ হলে এধরণের ক্ষতি থেকে পোর্টফোলিওকে মুক্ত রাখা সম্ভব। আপনি যদি কয়েকটা কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করেন; তবে কোনো কোম্পানিতে লোকসান হলে অন্যটাতে লাভ হবে। তাতে আপনার পোর্টফোলিও ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। আর একটি কোম্পানিতে বিনিয়োগ করলে যদি ক্ষতিগ্রস্ত হন তবে আপনার সব অর্থই চলে যেতে পারে।
মিউচ্যুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করুন:
কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগের চেয়ে মিউচ্যুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ অনেকটাই নিরাপদ। একটি নির্দিষ্ট সময়ের পরে ভালো লভ্যাংশ পাওয়া যায়। যদিও বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে মিউচ্যুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ তেমন জনপ্রিয়তা পায়নি। মিউচ্যুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করলে লোকসান হওয়ার সম্ভবনা কম থাকে।
অতিরিক্ত উপদেশ এড়িয়ে চলুন:
পুঁজিবাজার নিয়ে যে যতটুকু বুঝে উপদেশ দেয় তার চেয়ে অনেক বেশি। এটা এই বাজারের চিরাচরিত স্বভাব। বিনিয়োগের সময়ে এমন গুণীজনদের অতিরিক্ত উপদেশ এড়িয়ে চলুন।
কমে কিনে বেশিতে বিক্রি:
পুঁজিবাজারে কোনো শেয়ার কম দামে কিনে বেশি দামে বিক্রি করতে হয়, এটাই চিরাচরিত নিয়ম। তবে এটা করার ক্ষেত্রে সময় জ্ঞান থাকতে হবে। আর সেটা না থাকলে বিপদ হতে পারে। তবে কোনো শেয়ার কম তুলনামূলক কম দরে কিনতে পারলে বেশি দরে বিক্রি করা যায় অনেক সময়ে।
শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।