০৭ মার্চ ২০২৫ শুক্রবার, ১১:১৫ এএম
ডেস্ক রিপোর্ট
শেয়ার বিজনেস24.কম
বাংলাদেশে গত বছর ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে সেনাবাহিনীর ভূমিকা নিয়ে জাতিসংঘ সতর্কতা জারি করেছিল বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক। এর পরপরই রাজনৈতিক পরিবর্তন ঘটে বলে তিনি দাবি করেছেন।
বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসের জনপ্রিয় সাক্ষাৎকারভিত্তিক অনুষ্ঠান ‘হার্ডটক’-এ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ফলকার টুর্ক এসব কথা বলেন। বুধবার বিবিসির ওয়েবসাইটে এই পর্ব প্রকাশ করা হয়। অনুষ্ঠানে বিশ্বের বিভিন্ন মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়, যেখানে গাজা, সুদান, ইউক্রেনসহ বাংলাদেশের প্রসঙ্গ উঠে আসে।
সেনাবাহিনীকে সতর্কবার্তা এবং তার প্রভাব
সাক্ষাৎকারে ফলকার টুর্ক বলেন, ‘আমি এমন একটি উদাহরণ দিচ্ছি যেখানে আমাদের হস্তক্ষেপ গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হয়েছিল। গত বছর বাংলাদেশের জুলাই-আগস্টের ছাত্র আন্দোলনের সময় ব্যাপক দমন-পীড়ন চলছিল। তখন আমরা সেনাবাহিনীকে সরাসরি সতর্ক করি—যদি তারা দমন-পীড়নে জড়িত হয়, তবে তারা শান্তিরক্ষী পাঠানোর অনুমতি হারাতে পারে। এরপর আমরা স্পষ্ট পরিবর্তন দেখলাম।’
জাতিসংঘের হস্তক্ষেপের ফলে পরিস্থিতি বদলেছে বলেও দাবি করেন তিনি। টুর্ক বলেন, ‘অধ্যাপক ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হওয়ার পর আমাকে অনুরোধ করেন, একটি তথ্যানুসন্ধানী দল পাঠিয়ে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে। আমরা তা করি এবং এটি কার্যকর হয়।’
বাংলাদেশ সফর ও ছাত্রদের প্রতিক্রিয়া
ফলকার টুর্ক আরও জানান, তিনি গত বছর বাংলাদেশ সফর করেছেন এবং জাতিসংঘের অবস্থান ও পদক্ষেপের জন্য আন্দোলনকারী ছাত্ররা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা সরাসরি পদক্ষেপ নেওয়ার কারণে এবং তাদের পাশে থাকার ফলে ছাত্ররা আমাদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছিল।’
বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার সংকট ও ইউএসএআইডির ভূমিকা
সাক্ষাৎকারে বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার সংকট নিয়েও আলোচনা হয়। ফলকার টুর্ক যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (ইউএসএআইডি) সহায়তা বন্ধের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে সঙ্গেই বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী প্রভাবিত হচ্ছে। আশা করি, ওয়াশিংটন তাদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করবে।’
সুদানের মানবাধিকার পরিস্থিতি, সিরিয়ার শরণার্থী সংকট ও ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়েও কথা বলেন টুর্ক। ফিলিস্তিনের গাজা পরিস্থিতি নিয়ে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘গাজায় যা ঘটছে, তা ভয়াবহ এবং মানবাধিকার রক্ষার জন্য সবাইকে আরও সক্রিয় হতে হবে।’
জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনারের এই বক্তব্য বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনা সৃষ্টি করতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।