২৫ এপ্রিল ২০২৪ বৃহস্পতিবার, ১০:৪৬ এএম
স্টাফ রিপোর্টার
শেয়ার বিজনেস24.কম
![]() |
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে শিশু সন্তানকে নিয়ে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন এক নারী। বুধবার (২৪ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ৩টার দিকে চাঁদপুর-লাকসাম রেলওয়ে সড়কের হাজীগঞ্জ উপজেলার কাজীরগাঁও এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চাঁদপুর রেলওয়ে (জিআরপি) থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদু রহমান। নিহত নারীর নাম তাহমিনা আক্তার। তিনি হাজীগঞ্জ উপজেলার ধড্ডা গ্রামের দেওয়াঞ্জি বাড়ির মো. রফিকুল ইসলামের মেয়ে। তাহমিনা তার দুই বছরের ছেলে আব্দুর রহমানকে নিয়ে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দেন।
ওসি মাসুদু রহমান বলেন, সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয়রা জানান, ২০১৯ সালে একই উপজেলার সন্না গ্রামের হাওলাদার বাড়ির মো. নুরুল ইসলাম হাওলাদারের ছেলে মো. মাসুদুজ্জামান হাওলাদারের বিয়ে হয় তাহমিনার। পারিবারিক কলহের জেরে প্রবাসী স্বামী মাসুদুজ্জামানের সঙ্গে মাসখানেক আগে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে তাহমিনার। তার এক মেয়ে ও এক ছেলে। সন্তানদের নিয়ে বাবার বাড়িতে বসবাস করতেন তিনি। আত্মহত্যার আগে তাহমিনা ফেসবুকে তার মৃত্যুর জন্য কাউকে দায়ী না করে রেখে যাওয়া মেয়ের দায়িত্ব পরিবারকে নেওয়ার আহ্বান জানান। ছেলে সন্তানকে নিয়ে চাঁদপুর থেকে চট্টগ্রামগামী সাগরিকা এক্সপ্রেস ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি।
জানা গেছে, গত ২৮ মার্চ স্বামী ও পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে হাজীগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দেন তাহমিনা। অভিযোগে বলা হয়, তাহমিনা বিয়ের পর থেকেই তার বাবার বাড়িতে থাকতেন। কারণ বিয়ের পর বাবার কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা ধার নিয়ে স্বামীকে কুয়েত পাঠান। স্বামী প্রবাসে থাকা অবস্থায় পারিবারিক নানা বিষয় নিয়ে মোবাইলে বাকবিতণ্ডা হয় এই দম্পতির। স্বামী তাকে বাবার বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র থাকতে বলেন। এজন্য হাজীগঞ্জ মকিবাদ চৌধুরী পাড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় দুই সন্তানকে নিয়ে থাকতেন তাহমিনা। সেখানে থাকা অবস্থায় মাসুদুজ্জামান তাকে নানা অপবাদ দিয়ে মোবাইল ফোনে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করতেন এবং তাদের ভরণ পোষণ দিতেন না। যে কারণে স্বামী প্রবাসে থাকা অবস্থায় তাকে তালাক দেন তিনি।
তাহমিনার পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, গত ১৮ এপ্রিল দেশে আসেন মাসুদুজ্জামান হাওলাদার। দেশে এসে মোবাইলে তাহমিনাকে প্রাণ নাশের হুমকি দেন এবং তাকে আবার সংসারে ফিরে আসতে বলেন স্বামী। তানাহলে স্বামী-স্ত্রীর বিভিন্ন ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হুমকিও দেন মাসুদুজ্জামান।
তদন্ত কর্মকর্তা ও হাজীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুর রহমান বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর বিষয়টি সুরাহার জন্য স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ অভিযুক্ত মাসুদুজ্জামানের পরিবারের সঙ্গে বসার চেষ্টার করা হয়। কিন্তু তারা রাজি হননি। এরপর এক সপ্তাহ আগে মাসুদ্দুজামান দেশে আসেন। কিন্তু তিনি বাড়িতে না এসে বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে থাকেন। যে কারণে বিষয়টি নিয়ে কোনো সুরাহা করা সম্ভব হয়নি। তিনি আবার প্রবাসে চলে গেছেন।
শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।