১৭ এপ্রিল ২০২৫ বৃহস্পতিবার, ১০:৩৩ এএম
ডেস্ক রিপোর্ট
শেয়ার বিজনেস24.কম
![]() |
বিশ্ববাজারে সয়াবিন তেলের দাম যখন স্থিতিশীল ও নিম্নমুখী, তখন দেশের বাজারে উল্টো চিত্র। বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিওআরভিএমএ) আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট ১৫ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশে নামিয়ে আনার এবং স্থানীয় উৎপাদনে ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা তুলে নেওয়ার অজুহাতে একলাফে লিটারে ১৮ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়। ১ এপ্রিল থেকে নতুন দাম কার্যকরের ঘোষণা দেয় ব্যবসায়ীরা, আর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন মিলারদের দাবির পক্ষে দাঁড়িয়ে সয়াবিনের দাম লিটারে ১৪ টাকা ও পাম তেলের দাম ১২ টাকা বাড়ানোর অনুমোদন দেয়।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেছিলেন, আন্তর্জাতিক বাজার ও ট্যারিফ কমিশনের ফর্মুলা অনুযায়ী দাম সমন্বয় করা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা। ক্যাবের সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন অভিযোগ করেন, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম স্থিতিশীল থাকলেও বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে সরকারকে ঠকিয়েছে ব্যবসায়ীরা। তিনি বলেন, ব্যবসায়ীদের মিথ্যা তথ্যের ফাঁদে পড়ে সরকার জনগণের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়েছে।
গত রমজানে সরবরাহ সংকট সৃষ্টি করে যে বাড়তি দামের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, এখন সেটাই বাস্তবে রূপ নিয়েছে বলে ক্যাবের অভিযোগ। শুধু তাই নয়, আমদানি কর ও ভ্যাট সুবিধা দিয়ে সরকার যখন প্রতি মাসে প্রায় ৫৫০ কোটি টাকা হারিয়েছে, তখন তার এক টাকাও সাধারণ ভোক্তাদের পকেটে যায়নি; বরং সেই সুবিধা মিলারদের পকেটেই গিয়েছে।
বাজারে এই লাগামছাড়া দুর্নীতির জন্য ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি সরকারের নীরবতা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্যাব নেতারা। এস এম নাজের হোসাইন বলেন, "একবার সয়াবিন, একবার পেঁয়াজ, একবার চিনি—সারা বছর ধরেই কোনো না কোনো পণ্যের কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে জনগণের পকেট কাটা হচ্ছে, সরকার শুধু দর্শক হয়ে আছে।"
তিনি আরও বলেন, দাম বাড়ানোর চক্রান্ত হলেই ব্যবসায়ীরা সরবরাহ বন্ধ করে দেন। সরকারের সঙ্গে আলোচনা শুরুর আগেই ব্যবসায়ীরা নিজেদের সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেন। আর সরকার বাধ্য হয় সেই দাবিতে সীল মারতে।
সয়াবিন তেলের দাম বাড়ার প্রভাব নাকি খুব একটা পড়বে না—বাণিজ্য উপদেষ্টার এমন বক্তব্যকেও তীব্র সমালোচনা করেছেন ক্যাবের এই নেতা। তিনি বলেন, শুধু সয়াবিন নয়—চাল, পেঁয়াজ, ডিম, সবজির দামও যখন একসঙ্গে বাড়ে, তখন পরিবারগুলোর ব্যয় কীভাবে সামলাবে? আর আয় বাড়ছে না, ফলে খাদ্য মূল্যস্ফীতির আগুনে আবারও পুড়বে সাধারণ মানুষ।
ভোজ্যতেলের দাম নির্ধারণে ট্যারিফ কমিশনের সিদ্ধান্তকেও একপেশে উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ব্যবসায়ীদের সুবিধামতো দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। মিলমালিক, আমদানিকারক, ভোক্তা প্রতিনিধি ও গণমাধ্যমের উপস্থিতিতে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় দাম নির্ধারণ হলে প্রকৃত তথ্য সামনে আসতো। কিন্তু সরকার `ব্যবসায়ীবান্ধব` নীতি ধরে রেখে ভোক্তাদের স্বার্থ উপেক্ষা করেছে।
ক্যাবের দাবি, বাজার ব্যবস্থার সংস্কার ছাড়া এই দুঃশাসন থামানো যাবে না। খাদ্য নিরাপত্তাকে ঝুঁকির মুখে ঠেলে রাজস্ব আদায়ের নামে নিত্যপণ্যে কর আরোপের পথ পরিহার করে সরাসরি কর বৃদ্ধিতে মনোযোগ দিতে হবে। না হলে দরিদ্র মানুষের জীবন আরও দুর্বিষহ হবে। কভিড পরবর্তী সময়েও মজুরি বাড়েনি, কর্মসংস্থান বাড়েনি—এই বাস্তবতায় দাম বাড়ানোর আগাম ঘোষণা দিয়ে ব্যবসায়ীরা মজুতদারি বাড়িয়ে জনগণের পকেট কাটছে। আর সরকার চুপচাপ সেই সিন্ডিকেটের পাশে দাঁড়িয়ে
শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।