facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ১১ মার্চ মঙ্গলবার, ২০২৫

Walton

বিএসইসি’র ৪ বিভাগের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গুরুতর দুর্নীতির অভিযোগ


০৮ মার্চ ২০২৫ শনিবার, ০২:৩৫  পিএম

ডেস্ক রিপোর্ট

শেয়ার বিজনেস24.কম


বিএসইসি’র ৪ বিভাগের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গুরুতর দুর্নীতির অভিযোগ

শেয়ারবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চার গুরুত্বপূর্ণ বিভাগের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গুরুতর অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। কমিশনের গঠিত পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি তাদের প্রাথমিক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, শেয়ারবাজারে সংঘটিত একাধিক অনিয়ম ও দুর্নীতিতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা প্রত্যক্ষভাবে জড়িত।

তদন্তে উঠে আসা চাঞ্চল্যকর তথ্য

গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর শেয়ারবাজারে সংঘটিত ১২টি অনিয়ম তদন্তে গঠিত কমিটি সম্প্রতি তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, ক্যাপিটাল রেইজিং ইস্যু (আইপিও), মিউচুয়াল ফান্ড, এনফোর্সমেন্ট এবং সুপারভিশন অ্যান্ড রেগুলেশনস অব ইস্যুয়ার কোম্পানিজ (এসআরআইসি) বিভাগের কর্মকর্তারা নানা ধরনের দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। তদন্ত কমিটি দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করলেও এখনো পর্যন্ত কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

প্রতিবেদন প্রকাশে দীর্ঘসূত্রতা, স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন

তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশে বিলম্ব এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় বিএসইসি কর্তৃপক্ষ ব্যাপক চাপের মুখে পড়েছে। শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, কমিশনের ভেতরে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট সক্রিয় থাকায় ব্যবস্থা নিতে দেরি হচ্ছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) এক পরিচালক বলেন, "কমিশন যদি স্বচ্ছ হতে চায়, তবে দ্রুত প্রতিবেদন প্রকাশ করে দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। অন্যথায় বিনিয়োগকারীদের আস্থা আরও কমে যাবে।"

শেয়ারবাজার কারসাজির প্রমাণ, তদন্তে নতুন মোড়

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, আইপিও অনুমোদন প্রক্রিয়ায় স্বল্প মূল্যের কোম্পানিগুলোকে বাজারে প্রবেশের সুযোগ দেওয়া হয়েছে, যা শেয়ারবাজারে বিশৃঙ্খলা তৈরি করেছে। মিউচুয়াল ফান্ড ব্যবস্থাপনায় চরম অব্যবস্থাপনার অভিযোগও উঠে এসেছে।

এনফোর্সমেন্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা শেয়ারবাজার কারসাজির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে বরং তাদের রক্ষা করার চেষ্টা করেছেন। অন্যদিকে, এসআরআইসি বিভাগের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের স্বার্থ রক্ষায় নীতিমালা লঙ্ঘনের গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা ও আন্দোলনের শঙ্কা

বিএসইসির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে বর্তমানে তীব্র উদ্বেগ বিরাজ করছে। ২০ জনের বেশি কর্মকর্তাকে শোকজ করা হলেও এখনো পর্যন্ত বড় কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এর ফলে কমিশনের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। কমিশন চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের সঙ্গে কর্মকর্তাদের সম্পর্কও উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে উঠছে, যা ভবিষ্যতে বড় ধরনের আন্দোলনের দিকে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

দুদকের তদন্ত ও সাবেক কর্মকর্তাদের পাসপোর্ট বাতিল

এদিকে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম এবং সাবেক কমিশনার শেখ সামসুদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে। ইতোমধ্যে তাঁদের পাসপোর্ট বাতিল করা হয়েছে।

বিনিয়োগকারীদের আস্থা সংকট, কমিশনের চ্যালেঞ্জ

যদি এই দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তবে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা আরও তলানিতে নেমে যাবে। ফলে ভবিষ্যতে বাজারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাও কঠিন হয়ে পড়বে। বর্তমানে বিএসইসি এক সংকটময় পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, এবং সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, কমিশনের স্বচ্ছতা ও দক্ষতা নিশ্চিত করতে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন:

শেয়ারবাজার -এর সর্বশেষ