facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ১৯ অক্টোবর শনিবার, ২০২৪

Walton

ব্লক বাটিকের কাজ করে মাসিক ৬০ হাজার টাকা আয় প্রতিবন্ধী আসমার


০৩ এপ্রিল ২০২৩ সোমবার, ০৭:৩৩  পিএম

স্টাফ রিপোর্টার

শেয়ার বিজনেস24.কম


ব্লক বাটিকের কাজ করে মাসিক ৬০ হাজার টাকা আয় প্রতিবন্ধী আসমার

শারীরিক প্রতিবন্ধী হলেও পরিবারের বোঝা হতে চাননি আসমা আক্তার। তাই বাবা মায়ের অনিচ্ছা সত্ত্বেও শিখেছেন ব্লক বাটিকের কাজ। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। আসমা ব্লক বাটিকের কাজ করে ঢাকা বিভাগ থেকে দ্বিতীয় সফল আত্মকর্মী হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পুরস্কারও গ্রহণ করেছেন।

শরীয়তপুর সদরের ডোমসার গ্রামের মৃত লাল মিয়া হাওলাদার ও জবেদা বেগম দম্পতির ষষ্ঠ সন্তান আসমা আক্তার। জন্ম থেকেই মেরুদণ্ডের হাড় বাঁকা হওয়ায় সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারেন না তিনি। কিন্তু শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে তোয়াক্কা না করে পরিশ্রম আর মেধা দিয়ে মাথা উঁচু করে বেঁচে আছেন আসমা। শরীয়তপুর জেলা শহরের মাঝি আমিন উদ্দিন কমপ্লেক্সে একটি দোকান রয়েছে তার। দোকানের বিক্রি থেকে বর্তমানে তার মাসিক আয় ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভার্চুয়ালি উপস্থিতে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন সফল আত্মকর্মী হিসেবে `জাতীয় যুব পুরষ্কার ২০২২` পেয়েছেন তিনি।

রাজধানী ঢাকার ইসলামপুর থেকে কাপড় কিনে এনে শান্তিনগর এলাকার ভাড়া বাসায় নিজে ও তার নিজস্ব কর্মী দিয়ে নান্দনিক সব ডিজাইনে ব্লক বাটিকের কাজ করেন আসমা। কাজ শেষে সেই তৈরি পোশাকের দাম হয়ে যায় দুই থেকে তিনগুণ। তার ব্লক বাটিকের কারখানায় প্রশিক্ষণ নিয়েছেন চার হাজারের বেশি নারী।

আসমা আক্তার বলেন, আমি শারীরিক প্রতিবন্ধী। পড়াশোনা করলেও চাকরি করিনি। আমার পরিবার আমাকে সাবলম্বী হওয়ার জন্য গুরুত্ব দেয়নি। কিন্তু পরিবারের উপর নির্ভরশীল হয়ে থাকলে আমি এখন বোঝা হয়ে থাকতাম। প্রথমে আমি একটি কম্পিউটারের দোকান দিলেও সফল হতে পারিনি। এখন লেডিস শপ ও ব্লক বাটিকের কাজ করছি। ব্লক বাটিকের কাজ করে আমি সাবলম্বী হয়েছি। মাসে এখন আমার ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা আয় হয়। এখানে আমি প্রায় ১ বছর ধরে বিনামূল্যে মেয়েদের কাজ শেখাচ্ছি। আমি চাই সকল প্রতিবন্ধকতা দূরে ঠেলে দিয়ে মেয়েরা আমার মতো নিজের পায়ে দাঁড়াক।

তিনি আরো বলেন, আমার বড় একটি জায়গা দরকার। জাতীয় পুরস্কার পাওয়ার পরে ডিসি স্যার আমাকে আশস্ত করেছেন তিনি আমাকে জায়গার ব্যবস্থা করে দেবেন। আমার ইচ্ছে আমি অনেক বড় পরিসরে এগিয়ে যাব। যতদিন বেঁচে থাকি শরীয়তপুরের মেয়েদের বিনামূল্যে কাজ শিখিয়ে যাব। মেয়েদের সাবলম্বী করতে শুধু ব্লক বাটিক নয়, নকশিকাঁথা, হাতের অন্যান্য কাজও শেখানো হয় আমার কারখানায়।

তিনি বলেন, আমার শপে মূলত ব্লক বাটিকের পোশাক বিক্রি হয়। ক্রেতারা জামদানি, পশু-পাখির নকশা, বর্ণমালার লেখা, ফুল, পাতার ডিজাইন বেশি পছন্দ করেন। এছাড়াও তারা নিজেদের পছন্দের ডিজাইন দিয়ে যান মাঝে মধ্যে। অর্ডারের ডিজাইন অল্প সময়ে তাদেরকে করে দেই। সামনে রমজানের ঈদ। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি হলেও বিক্রি কয়েকগুণ বাড়ানোর ইচ্ছে আমার।

শরীয়তপুর যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, আসমা আক্তার একজন সফল উদ্যোক্তা। তিনি আমাদের জানিয়েছেন পরিত্যক্ত জমিতে তার ব্যবসা পরিচালনার ব্যবস্থা করে দিলে তিনি আরো বড় পরিসরে কাজ করতে পারবেন। আমরা জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় তাকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: