facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ১০ জানুয়ারি শুক্রবার, ২০২৫

Walton

যে বাজারে সবকিছুই পাওয়া যাবে ৫০ থেকে ৫০০ টাকায়


১০ জানুয়ারি ২০২৫ শুক্রবার, ১০:০৬  এএম

ডেস্ক রিপোর্ট

শেয়ার বিজনেস24.কম


যে বাজারে সবকিছুই পাওয়া যাবে ৫০ থেকে ৫০০ টাকায়

গজ কাপড় ৫০ টাকা, স্নিকার্স ২০০ টাকা, থ্রি–পিস ৫০০ টাকা, ১০০ থেকে ৩০০ টাকায় নায়রা কাটের ওয়ান–পিস আর গাউন, ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায় বিছানার চাদর। এত কম দামে এসব পণ্য রাজধানীর মতিঝিলের হলিডে মার্কেট ছাড়া আর কোথাও মিলবে কি না, সন্দেহ! কেবল শুক্র আর শনিবার সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বসে ভাসমান এই বাজার। তাই একে ডাকা হয় হলিডে মার্কেট।

ক্রেতাদের পদচারণে মুখর বাজার
ক্রেতাদের পদচারণে মুখর বাজার

ক্রেতা হয়ে রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের রাস্তার সামনে গিয়েছিলাম ২০২২ সালের এপ্রিলে। তখনো ঢিমেতালে চলছিল মহামারিকাল। তবে হলিডে মার্কেটে গিয়ে তা বোঝার উপায় ছিল না। সেবার এই বাজারে পা রেখে মনে হয়েছিল, করোনা নামের ভাইরাস বিশ্বকে নাড়িয়ে দিলে কী হবে, এই মার্কেটে বিশেষ প্রভাব ফেলতে পারেনি।

এই বাজারে পাওয়া যায় নানা ধরনের ব্যাগ
এই বাজারে পাওয়া যায় নানা ধরনের ব্যাগসাজগোজের বিভিন্ন অনুষঙ্গ, ঘর সাজানোর নানা কিছু, ব্যাগ, শাড়ি, নারী-পুরুষ ও শিশুদের পোশাক, বিছানার চাদর, বাসনকোসন, মগ, চামচ, শুকনা খাবার, শাকসবজি, মাছসহ জীবনযাপনের খুঁটিনাটি—কী নেই। কিছু কিছু জিনিসের সংগ্রহ নজরকাড়া আর মানসম্মত, একই সঙ্গে দামও অন্যান্য বাজারের তুলনায় প্রায় অর্ধেক। মতিঝিলের এই বাজার কম দামে কোন জিনিসগুলো কেনার জন্য সবচেয়ে ভালো বিকল্প, দেখে নেওয়া যাক।
 

থ্রি–পিস

লোন বা মহেশ্বরী থ্রি–পিস থেকে শুরু করে ভার্সিটি বা অফিসে নিয়মিত ব্যবহারের জন্য আরামদায়ক সালোয়ার–কামিজ পাওয়া যাবে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে। এ ছাড়া ওয়ান–পিস বা টু–পিসও কিনতে পাওয়া যাবে। সেই সঙ্গে সচরাচর ব্যবহার করার জন্য মেয়েদের আরামদায়ক জিনস পাওয়া যাবে মাত্র ১৫০ টাকায়। এ ছাড়া আছে বিভিন্ন ধরনের টপ। সেগুলো কেনা যাবে ৫০ থেকে ১৫০ টাকায়। সুতির ওড়না কেনা যাবে ১০০ থেকে ২০০ টাকায়।

জিনিসের দাম অন্যান্য বাজারের তুলনায় প্রায় অর্ধেক
জিনিসের দাম অন্যান্য বাজারের তুলনায় প্রায় অর্ধেক

শাড়ি

এই বাজারে একেবারে সাধারণ সুতির শাড়ি কেনা যাবে ১০০ থেকে ১৫০ টাকায়। অন্যদিকে জর্জেট, কাতান বা জরি-চুমকি বসানো কাজ করা শাড়ি কেনা যাবে ২০০ থেকে ৩০০ টাকায়। বুঝতেই পারছেন, এগুলো ‘সেকেন্ড হ্যান্ড’। তবে লুক একদম নতুনের মতো। অনেকে কাঁথা বানানোর জন্যও এখান থেকে রংবেরঙের সুতি শাড়ি কেনেন।

ব্যাগ

এই বাজারে যে কী সুন্দর সুন্দর এক্সপোর্ট কোয়ালিটি আর সেকেন্ড হ্যান্ড ব্যাগ আছে, না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। আমি নিজেই ২০০ টাকায় একটা নকশা করা কাপড়ের ব্যাগ, সংগ্রহে রাখার জন্য ১০০ টাকায় একটা মিনি ব্যাগ (অনেকটা ব্যাগের মিনিয়েচার) আর কৃত্রিম চামড়ার একটা ব্যাগ কিনেছি ৫০০ টাকায়। সুন্দর সুন্দর স্যান্ডেলের সংগ্রহও চোখে এড়াল না।

বিছানার চাদর

হোমটেক্সের সুতির বিছানার চাদরগুলো পাওয়া যাচ্ছে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকায়। ঘুরে ঘুরে দেখেশুনে বিছানার চাদর কিনলে খুব ভালো মানের চাদর পাবেন অল্প দামে। ডিজিটাল প্রিন্টের কুশন মিলবে মাত্র ৫০ টাকায়। ডাইনিং টেবিলে পাতার জন্য আছে কুরুশকাঁটায় বোনা দস্তরখানা। পর্দা কেনা যাবে ২০০ থেকে ৫০০ টাকা পিস হিসেবে।

৩০০ থেকে ৫০০ টাকায়
পাওয়া যায় বাসনকোসন
৩০০ থেকে ৫০০ টাকায় পাওয়া যায় বাসনকোসন

চামচ

এই বাজারে বিভিন্ন ধরনের চামচের সংগ্রহ মিলবে। ঘুরে ঘুরে কিনলে ইউনিক কিছু চামচ মিলে যাবে। পাওয়া যাবে শোকেসে সাজিয়ে রাখার ও সাজানোর নানা অনুষঙ্গ। আমি ৩৩০ টাকায় ছোট ৬টি কাপের সেট কিনেছি। শোপিস হিসেবে সাজিয়ে রাখলেও দেখতে সুন্দর লাগে। আবার চা–কফি, আইসক্রিম, দই বা ফিরনিও পরিবেশন করা যাবে। এই কাপের সঙ্গে মিলিয়ে ৬টি ছোট চামচও কিনেছি। ফলে ৬টি কাপ আর চামচ আমি ব্যবহার করব ডেজার্ট পরিবেশন পাত্র হিসেবে। আপনিও ঘুরে ঘুরে এ রকম নানা কিছু কিনতে পারেন।

পাওয়া যায় নানা রকম জিনিস
পাওয়া যায় নানা রকম জিনিস

লেইস

৫০ টাকায় যতগুলো লেইস কিনতে পারবেন, তা শাড়ি, ব্লাউজ আর থ্রি–পিসে ব্যবহার করার পরও থেকে যাবে। নামমাত্র দামে একসঙ্গে অনেক লেইস কেনার জন্য এই বাজার সেরা। অনেকে পর্দা, মশারি, বিছানার চাদরে লেইস ব্যবহার করেন। ১০ টাকা পিস হিসেবে সুন্দর সুন্দর কাপড়ের টুকরাও বিক্রি হচ্ছে। এই কাপড় আপনি বাচ্চাদের পোশাক বানানো বা টেবিল মোছাসহ নানা কাজে ব্যবহার করতে পারেন। ১ হাজার ৫০০ টাকায় এই বাজার থেকে আপনি ১টি থ্রি–পিস, ১টি শাড়ি, ১টি বিছানা চাদর, ১টি ব্যাগ, ১টি ওড়না আর ১ ডজন চামচের সেট কিনে ফেলতে পারবেন।

ক্রেতারা দরদাম করেই কেনাকাটা করের এই বাজারে
ক্রেতারা দরদাম করেই কেনাকাটা করে এই বাজারে 

২০০৭ সালে শুরু হয় এই মার্কেটের কার্যক্রম। মধ্যে বেশ কয়েক বছর অনিয়মিতভাবে চলেছে এই বাজার। শুরুতে কেবল শুক্রবার বাজার বসলেও সময়ের সঙ্গে শনিবারও জনপ্রিয়তা পেয়েছে কম দামে কেনাকাটার এই বাজার। নিম্ন ও মধ্যবিত্ত ক্রেতারা সংখ্যায় বেশি। ক্রেতাদের দরদাম করেই কেনাকাটা করতে দেখা গেছে। তবে এই স্ট্রিট মার্কেটে ক্রেতা আর বিক্রেতাদের জন্য টয়লেট, স্বাস্থ্যকর পানীয় ও খাবারের সংকট রয়েই গেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম আর অনলাইনের ‘মার্কেট রিভিউয়ার’দের বদৌলতে ঢাকার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সব শ্রেণির মানুষ এখানে কেনাকাটা করতে আসেন।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: