রক্তে প্লাটিলেট কমার লক্ষণ

বর্ষার শুরুতেই দেশজুড়ে ডেঙ্গুর রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে অনেকেরই রক্তে প্লাটিলেট কমে যায়। যেটি খুবই বিপজ্জনক। আবার প্লাটিলেট ঠিক থাকলেই যে ডেঙ্গু রোগী ভালো থাকবে তা-ও নয়। অনেক কারণেই প্লাটিলেট কমে যেতে পারে। ডেঙ্গু জ্বরে প্লাটিলেট কমে গিয়ে নয়, বরং রোগী মারা যায় ডেঙ্গু শক সিনড্রোমে।

তাই প্লাটিলেট কাউন্ট ১০ হাজারের ওপরে থাকলে এবং অ্যাক্টিভ ব্লিডিং না থাকলে এটা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। ডেঙ্গু ভাইরাসের কারণে রক্তনালীগুলো আক্রান্ত হয়। রক্তনালীর গায়ে যেসব ছোট ছিদ্র থাকে সেগুলো বড় হয়ে যায়। তা দিয়ে রক্তের জলীয় উপাদান বা রক্তরস বের হয়ে আসে।

ফলে রক্তচাপ কমতে থাকে, হেমাটোক্রিট বা পিসিভি বা প্যাকড সেল ভলিউম বাড়তে থাকে। এটা ঠেকাতে তখন রোগীকে পর্যাপ্ত ফ্লুইড বা তরল দিতে হবে। এই তরল মুখে খাওয়ানো যেতে পারে বা শিরায় দেয়া হয়ে থাকে।

মানুষের রক্তে তিন ধরনের রক্তকণিকার সবচেয়ে ছোট কণিকাটি হলো প্লাটিলেট বা অনুচক্রিকা। রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে প্লাটিলেট। তাই এটি কমে গেলে রক্তক্ষরণ হতে পারে এবং বেড়ে গেলে রক্ত জমাট বেঁধে হার্ট অ্যাটাক ও ব্রেইন স্ট্রোক হতে পারে। বয়স্কদের প্লাটিলেট বা অনুচক্রিকার স্বাভাবিক মাত্রা দেড় লাখ থেকে সাড়ে চার লাখ। যখন রক্তের প্লাটিলেট কাউন্ট কম থাকে তখন তাকে বলা হয় থ্রোম্বোসাইটোপেনিয়া। আর যখন বেশি থাকে তখন তাকে বলা হয় থ্রোম্বোসাইটোসিস।

প্লাটিলেট কমে যাওয়ার লক্ষণ :

১. শরীরের যেকোনো স্থান থেকে সূক্ষ্ম রক্তপাত, যা পিনপয়েন্টের আকারে দেখা দেয়। ত্বকে বেগুনি রঙের চিহ্ন দেখা যায়। কারণ ত্বকের নিচে রক্তক্ষরণ হয়।

২. মাসিকে অতিরিক্ত রক্তপাত হওয়া।

৩. মাড়ি বা নাক থেকে রক্তপাত হতে পারে।

৪. প্রস্রাব বা মলের সাথে রক্তপাত।

৫. শরীরের কোথাও কাটলে অনেকক্ষণ ধরে রক্তপাত হয় ইত্যাদি।

ডেঙ্গুতে করণীয় : ডেঙ্গু হলে প্লাটিলেট কত তা ঘন ঘন না দেখে বরং রোগীর অন্যান্য বিষয়ে লক্ষ্য রাখুন। যেমন- রক্তচাপ ঠিক আছে কি না, রোগী পানিশূন্যতায় ভুগছে কি না, রক্তের পিসিভি বা হেমাটোক্রিট কেমন তা দেখা উচিত। যদি এমনটি হয় তাহলে পর্যাপ্ত তরল দিন বা ফ্লুইড কারেকশন করুন, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখুন। প্রয়োজন হলে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করাতে হবে।