১৭ অক্টোবর ২০২৪ বৃহস্পতিবার, ১১:৩৬ এএম
এম.এ ওয়াদুদ মিয়া, শরীয়তপুর
শেয়ার বিজনেস24.কম
দুর্ঘটনার ঝুঁকিতে রয়েছে শরীয়তপুর সদর আধুনিক হাসপাতালটি। হাসপাতালে ঢুকে
প্রথম দেখাতেই মনে হবে নতুন ভবনের ছাদ ঢালাইর জন্য হয়তো লোহার খুটি ও সেড দিয়ে সাটারিং করা হয়েছে। কিন্তু না, তা নয়। ছাদের পলেস্টার যেন খসে না পরে অথবা ছাদ যেন ভেঙে না পরে সেজন্যই লোহার খুটি দিয়ে এভাবেই ঠেকনা দেয়া হয়েছে। এ চিত্রটি হচ্ছে শরীয়তপুরে ১০০ শয্যা বিশিষ্ট আধুনিজ সদর হাসপাতাল ভবনের। প্রতিদিনই ভবনের নিচতলার ছাদের পলেস্টার খসে পড়ছে কোন না কোন অংশ থেকে। ২০১৭ সালে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হলেও বিকল্প কোন ব্যবস্থা না থাকায় সেই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনেই চলছে চিকিৎসা কার্যক্রম।
দুর্ঘটনা এড়াতে দীর্ঘদিন যাবৎ হাসপাতালের অন্তত ১০টি স্থানে ভীম ও কলামের নিচে লোহার খুঁটি দিয়ে ঠেকনা দিয়ে রাখা হয়েছে। ফলে আরোও বেশি আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন রোগী, রোগীদের স্বজন ও হাসপাতালে কর্মরত স্টাফরা।
এদিকে রোগী, চিকিৎসক, হাসপাতালে কর্মরত স্টাফ এবং স্থানীয়রা বলছে, নতুন ভবনের কাজ চলছে খুব ধীর গতিতে। গণপূর্ত বিভাগের দায়িত্বে অবহেলা, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের খাম খেয়ালীপনা এবং স্থানীয় আওয়ামী নেতাদের চাঁদাবাজীর কারণে নতুন ভবনের কাজ দ্রুত শেষ হচ্ছে না। অপরদিকে গণপূর্ত বিভাগ বলছে, বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় এটা করা হয়েছে। শীঘ্রই নতুন ভবনে স্থানান্তর করা হবে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৫ সালে এক তলা ভবনে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের কার্যক্রম চালু হয়। পরবর্তীতে ২০০৩ সালে তৃতীয় তলার ভবন নির্মাণের পর ১০০ শয্যা হাসপাতালে উন্নীত করা হয়। ২০১৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর সকালে হঠাৎ করেই হাসপাতালের নিচতলার ১৭ টি স্থানের ছাদের পলেস্টার একসাথে খসে পড়ে। ফলে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়।
তৎকালীন সময়ে গণপূর্ত বিভাগ ও জেলা প্রশাসন হাসপাতালটি পরিদর্শন করে হাসপাতালটিকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেন। কিন্তু কোন বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় মেরামত করেই ঝুঁকি নিয়ে সে ভবনেই চলছে স্বাস্থ্যসেবা। গত ১ মাসে পূণরায় সেই ভবনের বিভিন্ন স্থান দিয়ে পলেস্টার খসে পড়ায় ভবনের অন্তত দশটি স্থানে ভীম ও কলামের নিচে বসানো হয়েছে লোহার খুঁটি। এতে রোগী, হাসপাতাল স্টাফ, রোগীর স্বজনরা রয়েছে মৃত্যু ঝুঁকিতে।
হাসপাতালের নতুন ভবন নির্মাণ কাজ মন্থরগতিতে চলমান রয়েছে। আগামী ২ মাসের মধ্যে নতুন ভবন বুঝিয়ে দেয়ার কথা থাকলেও কাজ হয়েছে মাত্র ৬৫ ভাগ। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের পূর্বে কোনভাবেই বুঝিয়ে দিতে পারবে না বলে জানিয়েছে গণপূর্ত বিভাগ।
শরীয়তপুর ১০০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার, ডাঃ মিতু আক্তার বলেন, ঝুঁকি নিয়েই আমরা রোগীর চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছি। দ্রুত এটার সমাধান হওয়ার দরকার।
শরীয়তপুর ১০০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ হাবীবুর রহমান বলেন, রোগী, চিকিৎসক এবং হাসপতালের অন্যান্য স্টাফরা ঝুকির মধ্যে আছে। দ্রুত নতুন ভবনটির কাজ শেষ করে আমাদের বুঝিয়ে দিলেই সমস্যার সমাধান হয়ে যায়।
শরীয়তপুর গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মহিবুর রহমান বলেন, প্রকল্পের মেয়াদ যেহেতু জুন পর্যন্ত সেহেতু আমরা চেষ্টা করছি এই জুনেই হাসপাতালের মুল কার্যক্রম নতুন ভবনে স্থানান্তর করার।
শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।