১৭ নভেম্বর ২০১৬ বৃহস্পতিবার, ০৮:৫৩ পিএম
শেয়ার বিজনেস24.কম
আইনি জটিলতা এবং মামলা নিষ্পত্তি হতে দীর্ঘ সময়ের কারণে শরীয়তপুরে পুলিশের জব্দ করা দেড় শতাধিক যানবাহন খোলা আকাশের নিচে পড়ে নষ্ট হচ্ছে। ফলে ঝামেলায় পড়ছেন যানবাহনের মালিক এবং পুলিশ কর্তৃপক্ষ।
পুলিশ বিভিন্ন সময়ে অভিযান চালিয়ে আটক করা এসব যানবাহনের মধ্যে রয়েছে প্রাইভেটকার, ট্রাক, পিকাপভ্যান, মাইক্রোবাস এবং মোটরসাইকেল। জব্দ করা এসব গাড়ির বর্তমান বাজার মূল্য কয়েক কোটি টাকা।
জব্দ করা এসব গাড়ি মামলার আলামত হিসেবে থানার সামনে অযত্ন আর অবহেলায় পড়ে রয়েছে বছরের পর বছর। রোদে পুড়ে আর বৃষ্টিতে ভিজে মরিচা ধরায় বেশির ভাগ যানবাহনই ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। নষ্ট হয়ে যাচ্ছে গাড়ির ইঞ্জিন।
অন্যদিকে দিন দিন জব্দ হওয়া যানবাহনের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় তা রাখার জন্য জায়গার অভাব দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি মামলার আলামত হিসেবে যানবাহনগুলো সঠিকভাবে সংরক্ষণ করতে না পারায় কোর্ট পুলিশ এবং থানা পুলিশকে বিপাকে পড়তে হচ্ছে। জেলা সদরসহ ৬টি থানা চত্বরে দিন দিন আটক গাড়ির সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
শরীয়তপুর কোর্ট, পুলিশ বক্স এবং বিভিন্ন থানা সূত্রে জানা যায়, জেলার ৬টি থানা, কোর্ট এবং পুলিশ লাইনে ১শ ৫০টি গাড়ি পড়ে রয়েছে। তার মধ্যে সদর থানায় ৪১টি, গোসাইরহাট থানায় ৭টি, জাজিরা থানায় ১১টি, ভেদরগঞ্জ থানায় ৫টি, নড়িয়া থানায় ২টি, ডামুড্যা থানায় ১টি, শরীয়তপুর কোর্টে ৩৫টি এবং পুলিশলাইনে ৪৮টি। এসব গাড়ির বেশির ভাগই মোটরসাইকেল। তবে এদের মধ্যে প্রাইভেটকার, পিকাপভ্যান, মাইক্রোবাস এবং ট্রাকও রয়েছে।
জব্দ করা একাধিক গাড়ির মালিকের সাথে আলাপকালে জানা যায়, পুলিশের দায়ের করা মামলায় নিজেদের জামিন হলেও শুধু মাত্র আইনি জটিলতার কারণে গাড়িটি মুক্ত করতে পারছেন না। তারা আশঙ্কা করছেন, আর কিছুদিন এভাবে থাকার পর আইনী জটিলতা কাটিয়ে উঠলেও হয়তো মোটরসাইকেল নয়, লোহা লক্কও ফেরত নিতে হবে।
ভোজেশ্বর বাজারের বাসিন্দা ইয়াকুব পেদা বলেন, সঠিক কাগজপত্র না থাকায় তিনিসহ অনেকেই গাড়ি ফেরত পাওয়ার আশা ছেড়ে দিয়েছেন। আবার অনেকে বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্বেও আইনি জটিলতা এবং হয়রানীর কারণে গাড়ি ফেরত পাওয়ার আশা ছেড়ে দিয়েছেন।
এদিকে জব্দকৃত গাড়িগুলোকে রাষ্ট্রীয় সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করে তা সহজ উপায়ে ছাড়পত্র প্রদানের দাবি জানিয়েছে সুশীল সমাজ। এতে কোটি টাকার রাজস্ব আসবে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে এ ধারণা করছেন তারা।
শরীয়তপুরের ট্রাফিক সার্জেন্ট মো. শামীম হোসেন নতুন সময়কে জানান, জব্দ হওয়া যেসব যানবাহন রয়েছে, তার বেশির ভাগই নাম্বারবিহীন, চুরি এবং ছিনতাই করা। এদের কোনো বৈধ কাগজপত্র না থাকায় জব্দ করা হয়েছে। যা থানায় মামলার আলামত হিসেবে রাখা হয়েছে।
জব্দ করা যানবাহনের সুষ্ঠু সংরক্ষণ এবং তা নষ্ট হওয়ার আগে নিলামে বিক্রি করে সে অর্থ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাভোকেট আবুল কালাম আজাদ।
শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।