facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ১৭ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার, ২০২৪

marcelbd

সম্মিলিত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত গেয়ে উদীচীর প্রতিবাদ


০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ শুক্রবার, ০৫:১০  পিএম

স্টাফ রিপোর্টার

শেয়ার বিজনেস24.কম


সম্মিলিত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত গেয়ে উদীচীর প্রতিবাদ

জাতীয় সংগীত নিয়ে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদ জানিয়ে একযোগে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার কর্মসূচি পালন করেছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের বিপরীত পাশের সড়কে একসঙ্গে জাতীয় সংগীত কণ্ঠে তুলে কর্মসূচিতে অংশ নেয় উদীচী, জাতীয় খেলাঘর আসরসহ বিভিন্ন সংগঠন। ব্যক্তিগতভাবেও কেউ কেউ অংশ নেন এই আয়োজনে।

গত মঙ্গলবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতকে ‘স্বাধীনতার অস্তিত্বের পরিপন্থি’ আখ্যা দিয়ে তা পরিবর্তনের দাবি জানান জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির গোলাম আযমের ছেলে আব্দুল্লাহিল আমান আযমী। তিনি প্রশ্ন তোলেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়েও। বাহাত্তরের সংবিধান ‘বৈধ নয়’ মন্তব্য করে নতুন সংবিধান প্রণয়ন করারও দাবি জানান সেনাবাহিনীর সাবেক এই ব্রিগেডিয়ার জেনারেল।

এর প্রতিবাদে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুমুল প্রতিবাদ জানান অনেকে। এরই প্রেক্ষিতে সম্মিলিত কণ্ঠে এই জাতীয় সংগীত গাওয়ার কর্মসূচি ঘোষণা করে উদীচী। শুক্রবার সকালে দেশের সব জেলা ও বিদেশে উদীচীর শাখা সংসদের শিল্পী-কর্মীসহ সাধারণ মানুষ একসাথে এই জাতীয় সংগীত কর্মসূচি পালন করেছে বলেও জানায় সংগঠনটি।

ঢাকায় কেন্দ্রীয় আয়োজনে সূচনা বক্তব্য দেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি অধ্যাপক বদিউর রহমান। সঞ্চালনা করেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে। পরে সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন সবাই। এসময় সাধারণ মানুষও শিল্পীদের সঙ্গে জাতীয় সংগীতে কণ্ঠ মেলান। জাতীয় সংগীতের সাথে জাতীয় পতাকাও উত্তোলন করা হয়।

শিল্পীরা সম্মিলিত কণ্ঠে একে একে গেয়ে শোনান মুক্তিযুদ্ধে প্রেরণা যোগানো দেশাত্ববোধক গান `মাগো ভাবনা কেন`, `পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে`, `তীর হারা এই ঢেউয়ের সাগর পাড়ি দেব রে` গানগুলো। সবশেষে আবারও জাতীয় সংগীত গেয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।

উদীচীর সভাপতি অধ্যাপক বদিউর রহমান বলেন, “আমরা দায়বদ্ধ মানুষের প্রতি। আমাদের অর্জন আমাদের মুক্তিযুদ্ধ। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যখনই কোনো আঘাত আসবে, আমরা তার প্রতিবাদ করব। আমাদের জাতীয় সংগীত, জাতীয় পতাকা কারো দানে পাওয়া নয়। লাখো শহীদের রক্তে পাওয়া এ আমাদের অর্জন। এই অর্জনকে কোনোভাবেই কলঙ্কিত করা যাবে না। যখনই কেউ মুক্তিযুদ্ধ, জাতীয় পতাকা এবং জাতীয় সংগীতে আঘাত করবে। আমরা তার প্রতিবাদ করবই।”

উদীচীর সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে বলেন, “প্রগতিশীল সব আন্দোলন-সংগ্রামে উদীচী সামনে থেকেছে। যখনই দেশের উপর, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের উপর আঘাত এসেছে- আমরা প্রতিবাদ করেছি। এবারও জাতীয় সংগীত গেয়ে এই কর্মসূচি, সেই ধারাবাহিক প্রতিবাদেরই অংশ।”

উদীচী লিখিত বক্তব্যে জানায়, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে মহান মুক্তিযুদ্ধ, জাতীয় পতাকা, জাতীয় সঙ্গীতসহ এদেশের আপামর জনসাধারণের প্রাণের সব বিষয় নিয়ে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র দেখা যাচ্ছে।

গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, একটি ধর্মান্ধ স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী ছাত্র-জনতার অভূতপূর্ব গণঅভ্যূত্থানের মূল সুরকে বিকৃত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। এরা মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনার বিরোধীতা করা থেকে শুরু করে জাতীয় সঙ্গীত, জাতীয় পতাকার উপর আঘাত হানতে শুরু করেছে।

এই হীন চক্রান্তের প্রতিবাদ এবং এর সাথে জড়িতদের রুখে দেয়ার প্রত্যয় নিয়ে শুক্রবার সকাল ১০টায় দেশের সর্বত্র একযোগে `উন্মুক্ত স্থানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া কর্মসূচি` হাতে নিয়েছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: