০২ জুলাই ২০১৬ শনিবার, ০৯:৫৫ পিএম
ফাতেমা বেগম
শেয়ার বিজনেস24.কম
রাজধানীর ঢাকার গুলশানে হামলার ঘটনার দিন সকাল ১১টায় জঙ্গিরা ইন্টারনেটে পরিষ্কার ঘোষণা দিয়েছিল যে তারা ঢাকার ডিপ্লোমেটিক এলাকায় আক্রমণ করবে। তাদের প্রস্তুতি কোনো গোপন ব্যাপার ছিল না। এ ব্যাপারে শাহরিয়ার কবীর ৭১ চ্যানেলের টক শোতে সেই ঘোষণার প্রিন্ট কপি দেখালেন।
সরকারের সাফল্য যে জঙ্গিদের সেই ঘোষণা দেখে নাই, বা দেখেও গুরুত্ব দেয় নাই।
বিশিষ্টজনদের মতে, দেশে জঙ্গিবাদের কারখানা আছে বহুদিন ধরে। জামায়াতের বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান আছে দেশে। অর্থায়নের অভাব হচ্ছে না জঙ্গিবাদের কারখানা চালাতে। ব্লগারসহ মুক্তমনা হত্যা, সাম্প্রদায়িক হত্যার ঘটনা দৈনন্দিন খবর, সরকারের সাফল্য।
বিরোধীদল বিএনপিকে জঙ্গিবন্ধুত্ব দায়ী করা হয়। সরকারের ক্ষমতার ছায়াতলে এ বন্ধুত্ব চলছে, সরকারের সাফল্য।
১৩ জন মানুষ বেঁচেছে। এটা শুধুই একটা সংখ্যা। ২২ জনের জায়গায় ৩৫ জন খুন হতে পারতো। ধন্যবাদ দিতে হবে সন্ত্রাসীদের। সুইসাইড স্কোয়াডের জঙ্গিদের হত্যা করে, ২২ জনের প্রাণহানির মাধ্যমে সফল অভিযান করে সরকার। ১৩ জন বেঁচে গেল সেটা ভেবে মানুষ আবার নিশ্চিন্ত মনে রেস্টুরেন্টে খেতে যাবে, রাস্তায় চলাফেরা করবে নাকি ডিপ্লোমেটিক এলাকার মতো জায়গায় ২২ জনের মৃত্যুসহ জঙ্গিদের এই নির্বিঘ্ন হামলা মানুষের জীবন আরো নিরাপত্তাহীনতায় ভরে দেবে? বিদেশিদের জন্য কি আতঙ্কের জায়গা কি হবে না? সরকারে সাফল্য।
শুনেছি, শুধু আভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা নয়, সিআইএসহ আন্তর্জাতিক গোয়েন্দা বিভাগের প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় নয়ন থাকে সর্বত্র। ওয়েবসাইটের জঙ্গিদের আক্রমণের পরিষ্কার ঘোষণার পরও তাদের সবার নয়ন বন্ধ থেকে গেল? সরকারের সাফল্য।
রাষ্ট্রের একটা সংজ্ঞা হলো, রাষ্ট্র হচ্ছে `বৈধ সন্ত্রাসবাদ`। নিয়মিত সন্ত্রাসীদের হত্যাকাণ্ড হতে দেখে, তাদের কাজে কোনো বাধা না হতে দেখে সেই বৈধ সন্ত্রাসবাদের একটা উদাহরণ পাচ্ছি।
সবই সরকারের সাফল্য। অভিনন্দন, সরকারকে।
লেখক ও গবেষক : সাবেক শিক্ষক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।