facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ০১ এপ্রিল মঙ্গলবার, ২০২৫

Walton

ভুয়া ঋণসহ একাধিক অনিয়ম ফাঁস

সেন্ট্রাল ফার্মার হিসাবে ভয়াবহ গরমিল!


২৮ মার্চ ২০২৫ শুক্রবার, ০৫:৪২  পিএম

ডেস্ক রিপোর্ট

শেয়ার বিজনেস24.কম


সেন্ট্রাল ফার্মার হিসাবে ভয়াবহ গরমিল!

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ওষুধ ও রাসায়নিক খাতের প্রতিষ্ঠান সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস-এর আর্থিক হিসাবে ব্যাপক গরমিল ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের নিরীক্ষা প্রতিবেদনে দেখা গেছে, কোম্পানিটির আয়, ব্যয়, মজুত পণ্য, সম্পদ, কর প্রদান, ব্যাংক হিসাবসহ প্রায় ১৩৬ কোটি টাকার হিসাবের অসংগতি পাওয়া গেছে।

আয়কর ও সম্পদের গরমিল

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ২০০৭ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে কোম্পানির কাছে ৯৮ কোটি ৮২ লাখ টাকা আয়কর দাবি করেছিল। তবে প্রতিষ্ঠানটি মাত্র ২৮ কোটি ৪ লাখ টাকা প্রভিশনিং করেছে, বাকি ৭০ কোটি ৮০ লাখ টাকার কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারেনি। এতে আর্থিক প্রতিবেদনে সম্পদ বেশি দেখানোর অভিযোগ উঠেছে।

ভুয়া ঋণের অভিযোগ

সেন্ট্রাল ফার্মার হিসাব অনুযায়ী জনতা ব্যাংকের কাছে ২৬ কোটি ৮৫ লাখ টাকার ঋণ রয়েছে, যা ২০২২ সালের জুনের আগ থেকেই একই পরিমাণে দেখানো হচ্ছে। তবে নিরীক্ষকদের অনুরোধের পরও ব্যাংক থেকে কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি, এবং কোম্পানি কর্তৃপক্ষও এই ঋণের সঠিক তথ্য দিতে পারেনি। এ ঋণের বিপরীতে কোনো কিস্তি পরিশোধ করা হয়নি বা সুদের জন্য নিরাপত্তা সঞ্চিতিও রাখা হয়নি।

গ্রাহকের পাওনা ও সম্পদে অস্পষ্টতা

কোম্পানিটি তার গ্রাহকদের কাছে ৭ কোটি ৩৩ লাখ টাকা পাওনা দাবি করলেও, এর কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেনি। একইভাবে, ১ কোটি ২৮ লাখ টাকার স্পেয়ার পার্টস ও সাপ্লাইস সম্পদ হিসেবে দেখালেও, নিরীক্ষকরা এর সত্যতা পাননি।

ক্যাশ লেনদেন ও ব্যয়ের অনিয়ম

নিরীক্ষা প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, কোম্পানির অধিকাংশ লেনদেন নগদে হয়, যা ব্যয়ের সত্যতা যাচাই করা কঠিন করে তুলেছে। নগদ লেনদেনের মাধ্যমে আয়-ব্যয় পরিবর্তন করা সম্ভব, যা সন্দেহজনক।

পুঁজিবাজারের নিয়ম লঙ্ঘন

সেন্ট্রাল ফার্মার উদ্যোক্তা ও পরিচালকরা মোট শেয়ারের ৩০ শতাংশ ধারণের নিয়ম মানেনি। জানুয়ারি শেষে উদ্যোক্তা পরিচালকরা মাত্র ৭.৬৭ শতাংশ শেয়ার ধরে রেখেছেন, যা বিনিয়োগকারীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।

কোম্পানির আর্থিক অবস্থা

২০১৩ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া সেন্ট্রাল ফার্মা বর্তমানে জেড ক্যাটাগরিতে রয়েছে। ২০১৯ সালের পর থেকে বিনিয়োগকারীদের কোনো লভ্যাংশ দেওয়া হয়নি। ২০২৪ সালের প্রথম ছয় মাসে প্রতিষ্ঠানটি শেয়ার প্রতি ১৬ পয়সা লোকসান করেছে।

কোম্পানি সচিবের প্রতিক্রিয়া

সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালসের কোম্পানি সচিব মো. তাজুল ইসলাম বলেন, "আমি এ বিষয়ে কিছু বলতে পারব না। এটি নিরীক্ষকদের রিপোর্ট, আমাদের দিক থেকে এমন কোনো তথ্য নেই।"

সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, কোম্পানির আর্থিক অনিয়ম ও হিসাবের অস্পষ্টতা বিনিয়োগকারীদের জন্য বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন:

শেয়ারবাজার -এর সর্বশেষ